বাংলাদেশে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে: আবারো ভার্চুয়াল কোর্ট পরিচালনার সিদ্ধান্ত
বাংলাদেশে করোনার ডেল্টা এবং ওমিক্রন ভাইরাস সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতিতে আবারো ভার্চুয়াল কোর্ট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামীকাল (বুধবার) থেকে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগ ভার্চুয়ালি উপস্থিতির মাধ্যমে বিচার কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
আজ (মঙ্গলবার) সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবর স্বাক্ষরিত পৃথক স্মারক দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
স্মারকে বলা হয়, করোনা সংক্রমণজনিত উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আগামী ১৯ জানুয়ারি বুধবার থেকে আদালত কর্তৃক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার আইন, ২০২০ এবং এতদসংক্রান্তে জারিকৃত প্রাকটিস ডাইরেকশন অনুসরণ করত তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে শুধু ভার্চুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, আপিল বিভাগের বিচারিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
দেশের প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীসহ আপিল বিভাগের অপর পাঁচ বিচারপতি আজ সকালে এজলাসে আসন গ্রহণের পর একটি মামলার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন আইনজীবী নজরুল ইসলাম চৌধুরী।
এ সময় প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, ‘চারদিকে যে অবস্থা (করোনা সংক্রমণ) দেখছি, এরই মধ্যে আমাদের ১৩ জন বিচারপতি ও নিম্ন আদালতের ৩৬ জন বিচারক আক্রান্ত হয়েছেন। অনেক স্টাফও আক্রান্ত হয়েছেন। আমরা হয়তো আবার ভার্চুয়াল কোর্টে ফিরে যাব। ভার্চুয়াল কোর্টে যে মামলা নিষ্পত্তি কম হয়, তা নয়। আমরা বিষয়টি সিরিয়াসলি ভাবছি।’
এ সময় ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ জানান, ‘অ্যাটর্নি জেনারেল, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ও কয়েকজন আইন কর্মকর্তা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।’
আইনজীবী নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘মানুষের জীবন আগে। এ বিষয়ে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
এদিকে, বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা চলতি মাসের শেষের দিকে গুণিতক হারে বাড়ার আশঙ্কা করেছে জনস্বাস্থ্য গবেষকরা।
মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) জেনোম সিকোয়েন্সিং রিসার্চ প্রজেক্টের প্রধান তত্ত্বাবধায়ক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ জানান, যেভাবে সংক্রমণ বাড়ছে, তাতে এ মাসের শেষের দিকে হয়তো ওমিক্রন আরো বাড়তে পারে।
তিনি জানান, গত ৮ ডিসেম্বর ২০২১ থেকে ৮ জানুয়ারি ২০২২ পর্যন্ত দেশে কোভিড আক্রান্তদের জিনোম সিকোয়েন্স করে ২০ শতাংশ ওমিক্রন ও ৮০ শতাংশ ডেল্টায় আক্রান্ত রোগী পাওয়া যায়। সেই সাথে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তদের সবাই হাসপাতালে ভর্তি। এসব ভর্তি রোগীদের কারো মধ্যে ওমিক্রন ধরা পড়েনি।
বিএসএমএমইউ’র গবেষণায় ৯ মাস থেকে শুরু করে ৯০ বছরের বয়স পর্যন্ত রোগী অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। এর মধ্যে ২১ থেকে ৫৮ বছর বয়সের রোগীদের সংখ্যা বেশি। যেহেতু কোনো বয়সসীমাকেই সুরক্ষা করছে না, সেকারণে শিশুদের মধ্যেও কোভিড সংক্রমণ রয়েছে।
গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী, কোভিড আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে যাদের কো-মরবিডিটি রয়েছে যেমন- ক্যানসার, শ্বাসতন্ত্রের রোগে, হৃদরোগে, ডায়াবেটিসে ভুগছেন, তাদের মধ্যে মৃত্যুর সংখ্যা বেশি পাওয়া গেছে। পাশাপাশি ষাটোর্ধ্ব বয়সের রোগীদের দ্বিতীয়বার সংক্রমণ হলে সে ক্ষেত্রে মৃত্যু ঝুঁকি বেশি পরিলক্ষিত হয়েছে।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/১৮
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।