করোনায় বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির উত্তোলন কাজ বন্ধ
বাংলাদেশে করোনার সংক্রমণের হার প্রায় ২০ গুণ বেড়ে গেছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
বাংলাদেশে ২০২০ সালের ৮ মার্চ করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার পর ২০২২ সালের ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত কেটে গেছে ৯৯ সপ্তাহ। চলছে শততম সপ্তাহ। এরমধ্যে ৯৯তম সপ্তাহে দেশে তিন লাখ ৮ হাজার ২৯২টি নমুনা পরীক্ষা করে ৯৮ হাজার ৯১৯ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। সাপ্তাহিক হিসেবে এটি বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ সংক্রমণ সংখ্যা।
এ অবস্থায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক আশঙ্কা ব্যক্ত করে বলেছেন, দেশে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ যে হারে বেড়ে চলেছে, তাতে মৃত্যুর হার আরও বাড়বে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় হাসপাতালগুলোতে বাড়তি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
দেশে করোনা সংক্রমণের সার্বিক পরিস্থিতির বিষয়ে জানাতে আজ (রোববার) সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “করোনার সংক্রমণের হার প্রায় ২০ গুণ বেড়ে গেছে। এটা আশঙ্কাজনক। সংক্রমণ বেড়ে যাবার কারণে মৃত্যুর হারও বাড়বে। ‘আগ্রাসী সংক্রমণ’ নিয়ন্ত্রণে সবার স্বাস্থ্যবিধি মানার বিকল্প নেই। এটা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।"
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রথমে ৬০ বছরের বেশি বয়সীদের করোনা টিকার বুস্টার ডোজ দিচ্ছিল সরকার। পরবর্তী সময়ে তা কমিয়ে ৫০ বছর করা হয়। এবার বুস্টার ডোজ দেওয়ার ন্যূনতম বয়স ৪০ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন, অনেকেই পরীক্ষা করাচ্ছেন না, সেক্ষেত্রে আক্রান্তের হার আরও বেশি হবে। ভ্যাকসিন দেওয়ার কারণেই এখন মৃত্যুহার কম।
তিনি জানান, ইতোমধ্যে দুই ডোজ টিকা নিয়েছেন এমন ব্যক্তিরাই বুস্টার ডোজ হিসেবে তৃতীয় ডোজ পাচ্ছেন। এ জন্য নতুন করে নিবন্ধনের দরকার হচ্ছে না।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো জানান, এ মাসে সর্বোচ্চ ৩ কোটি ৪০ লাখ টিকা দেওয়া হয়েছে। ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রথম ডোজ দেওয়া নাগরিকদের সংখ্যা ১০ কোটি ছাড়িয়ে যাবে। মোট লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে সাড়ে ১২ কোটি। তবে মানুষ টিকা নিতে এখন কম আসছেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন দেশে পর্যাপ্ত টিকা মজুদ আছে। ৯ কোটি হাতে আছে। আরও ৫ কোটি আসার প্রক্রিয়ায় আছে। আবার নিজেদের দেশে টিকা তৈরির কাজ চলছে। ১২ বছরের ওপর সবাইকে টিকা দেওয়া হবে। জনসন থেকে পাওয়া সিঙ্গেল ডোজের টিকা ভাসমান মানুষকে দেয়া হবে।

করোনায় দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির উত্তোলন কাজ বন্ধ
দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ৬৮ জন কর্মকর্তার করোনাভাইরাস শনাক্ত হবার প্রেক্ষিতে গত ২৭ জানুয়ারি থেকে খনির কয়লা উত্তোলন সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সেইসঙ্গে সেখানে কর্মরত প্রায় ৫০০ বাংলাদেশি শ্রমিককে অনির্দিষ্টকালের ছুটি দেওয়া হয়েছে।
খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী কামরুজ্জামান জানিয়ছেন, তিনিসহ খনিতে কর্মরত ৩২ জন বাংলাদেশি এবং চীনা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ৩৬ জন চীনা কর্মকর্তা-কর্মচারীর শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। এ অবস্থায় খনিতে কর্মরত দেশি-বিদেশি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। তা ছাড়া সংক্রমণ প্রতিরোধে খনিতে কয়লা উৎপাদনের কাজ সাময়িক বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
কয়লা উত্তোলন বন্ধ থাকলেও বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদনে কোনো সমস্যা হবে না দাবি করে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ৩ থেকে ৪ মাস চাহিদা পূরণের মত পর্যাপ্ত কয়লা মজুদ রয়েছে।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/৩০
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।