আমাদের মূলকাজ হচ্ছে সম্মিলিতভাবে রাস্তায় নামা: ডা. জাফরুল্লাহ
বর্তমান সরকারকে হটাতে হলে সম্মিলিতভাবে রাস্তায় নামার আহ্বান জানিয়েছেন বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রথম সেনাপতি এম এ জি ওসমানীর ৩৮তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ (বুধবার) দুপুরে ধানমন্ডি গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে এক স্মরণসভায় তিনি এ আহ্বান জানান।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, "গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে এই সরকারকে অবশ্যই যেতে হবে। আমাদের মূলকাজ হচ্ছে রাস্তায় নামা। সম্মিলিতভাবে নামতে হবে। এখানে বিএনপির একটা বড় দায়িত্ব আছে। বিএনপিকে আরেকটু চিন্তাভাবনা করে আগাতে হবে। বিএনপির কাছে আবেদন, আপনারা সবার সাথে বসেন। যেভাবেই হোক সবাইকে নিয়ে রাস্তায় নামেন।"
তিনি বলেন, তিন মাসের তত্ত্বাবধায়ক সরকার কিছু করতে পারবে না। সামগ্রিক পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজন জাতীয় সরকার বা সর্বদলীয় সরকার। বর্তমান সরকার থাকলে ন্যায্য কিছুই হবে না।
নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সার্চ কমিটি যে ১০ টি নাম প্রেসিডেন্টের কাছে জমা দিবেন তা আগেই প্রকাশ করতে হবে। যাতে জনগণ বক্তব্য দিতে পারে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধিতে সরকারের সমালোচনা করে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহামুদুর রহমান মান্না বলেন, এরা এমন একটা সরকার, যারা রাতকে দিন বলে। দিনের ভোট যারা রাতে করে তারাতো রাতকে দিন বলবেই। এই সরকারকে যেতেই হবে। আজ হোক, কাল হোক। চিরদিন থাকতে পারবেন না।
জেনারেল ওসমানীর জীবনের নানা দিক ও মুক্তিযুদ্ধে তার অবদান তুলে ধরে কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক বলেন, ওসমানী ছিলেন ক্ষণজন্মা পুরুষ। জেনারেল ওসমানী যেন ইতিহাস থেকে হারিয়ে না যায় তার জন্য আজকের মত উদ্যোগ গ্রহণ কতে হবে এবং ইতিহাসের সঠিক জায়গায়তে ওনাকে স্থান দিতে হবে।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, এতোদিন নির্বাচন কমিশন গঠন আইন ছিল না। আইনটা করার দরকার ছিল, করেছে। এই আইন নিয়ে কেউ কথা তুলছে না। এই আইন নিয়ে কথা তোলা দরকার। এই আইনে নির্বাচন কমিশন গঠনের ক্ষমতা শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর হাতে। সার্চ কমিটি প্রেসিডেন্টের কাছে নাম দিবেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে নিয়োগ দিবেন। এর মধ্যে নতুনত্বের কিছু নেই। বরং সরকার আগে যেটা করেছে সেটাকে আইনসিদ্ধ করলেন। আন্তর্জাতিকভাবে তারা চাপে রয়েছে বলে এই আইন করা হয়েছে। সামনে যে আরেকটা ভোট ডাকাতির নির্বাচন করবেন সেটাকে আরেকটি আইনের মোড়ক দিলেন। এটা যে তামাশা তা পরিস্কারভাবে প্রমাণিত।
নির্বাচন কমিশন গঠনের নামে ফাজলামি করা হয়েছে উল্লেখ করে গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর বলেন, যেখানে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক অংশীদারগণ তাদের মতামত দেন নাই। এই আইনে নির্বাচন কমিশন বিষয়ে কোনো সমাধান হবে না। বরং পরিস্থিতি আরো জটিল করা হবে। কারা নির্বাচন কমিশনার হবে? কে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হবে তা প্রধানমন্ত্রীর ভ্যানিটিব্যাগে লিস্ট করা আছে।
তিনি বলেন, আমরা চাই না আমাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে বাইরের কেউ এসে হস্তক্ষেপ করুক। কিন্তু দেশটা এখন যে সংকটের জায়গায় পড়েছে সেখানে আমাদের উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলোর মাধ্যমে এই সরকারের উপর একটা চাপ তৈরি করতে হবে। তারা যেন কর্তৃত্বপরায়ণ সরকারের সঙ্গে কাজ না করে।
জেনারেল ওসমানী ফাউন্ডেশনের সভাপতি মো. জাহিদ এ রেজার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন- বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান ও মহিববুল্লা বাহার প্রমুখ।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/১৬
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।