বাড়ছে বুনো এডিসের লার্ভা; সিত্রাং-এর জলাবদ্ধতায় বাংলাদেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধির শঙ্কা
(last modified Tue, 25 Oct 2022 10:41:50 GMT )
অক্টোবর ২৫, ২০২২ ১৬:৪১ Asia/Dhaka

চলতি বছর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সর্বশেষ পরিসংখ্যানে দেখা যায়- সিঙ্গাপুরে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ২৬ হাজার ৯৭০ জন, ভারতে ৩০ হাজার ৬২৭ জন, মালয়েশিয়ায় ৩৩ হাজার, ফিলিপাইনে ৮২ হাজার ৫৯৭ জন, ভিয়েতনামে এক লাখ ৪৫ হাজার ৫৩৬ জন আর ইন্দোনেশিয়াতে ৬৮ হাজার ৯০৩ জন।

তবে বাংলাদেশে চলতি বছরের এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ১০ হাজারের কিছু বেশি। কিন্তু বর্তমানে ঢাকায় করোনার চেয়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেশি। এমন পরিস্থিতিতে মধ্য অক্টোবর থেকে সিত্রাং এর ঝড়ো হাওয়ার কারণে থেমে থেমে বৃষ্টিতে এডিস মশার প্রকোপ বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। 

এ বিষয়ে বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী রেডিও তেহরানকে বলেন, মৌসুমি বৃষ্টিপাত সাধারণত সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত চলে। কিন্তু এ বছর তা অক্টোবরের শেষ পর্যন্ত গড়িয়েছে। আর এখন ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-এর কারণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় এডিস মশার লার্ভা আরো বেশি করে বংশ বিস্তারের একটি সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। শুধু শহর নয়, গ্রামে গঞ্জেও এডিস মশার প্রকোপ বাড়ছে। কারণ শহরে সিটি কর্পোরেশন গুলো মশক নিধনের জন্য লার্ভা ধ্বংসের অভিযান পরিচালনা করে। তারা ওষুধ ছিটিয়ে থাকে বিভিন্ন গলি মহল্লায়। কিন্তু বাইরের ঝোপঝাড় কিংবা গ্রাম-গঞ্জের জঙ্গলগুলোর বুনো মশার বংশবিস্তার রোধ করা যাচ্ছে না। ফলে নতুন করে বারবারই ছড়িয়ে পড়ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। তাই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে আরো উদ্যোগী হওয়ার পরামর্শ দিলেন এ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ।

ডা. লেলিন চৌধুরী

রাজধানী ঢাকার মুগদা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ডা. নিয়াতুজ্জামান বলেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতি গত ক’দিনের তুলনায় কিছুটা স্থিতিশীল। রোগী ভর্তির সংখ্যা আজকে কিছুটা কম। তবে কোন ধরনের উপসর্গ দেখা দিলে রোগীদের সচেতন থাকার পরামর্শ দিলেন মুগদা জেনারেল হাসাপাতালের পরিচালক। বললেন, দ্রুত রোগীকে ডেঙ্গু পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে। দেশের সকল সরকারি প্রতিষ্ঠানে বিনামূল্যে ডেঙ্গুর পরীক্ষা করানো হয় বলেও জানান তিনি।

ডা. ফজলে শামসুল কবির

মাঠ পর্যায়ে ডেঙ্গু পরিস্থিতি জানতে আমরা কথা বলেছি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবিরের সঙ্গে। তিনি রেডিও তেহরানকে জানান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। সারা দেশে যে রোগীর সংখ্যা তার মাত্র ৭-৮ শতাংশ ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকায়। ডেঙ্গুতে জনসচেতনতাই সবচেয়ে প্রধান। কারণ এডিস মশার লার্ভা ঘরের মধ্যে পরিষ্কার পানিতে জন্মায়। সুতারং সিটি কর্পোরেশন কিংবা কোন সংস্থার পক্ষে প্রত্যেক নাগরিকের বাড়ির অভ্যন্তরের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সম্ভব হবে না। তাই জনগণ একটু সচেতন হলে ডেঙ্গু প্রকোপ কমে আসবে। #

পার্সটুডে/নিলয় রহমান/আশরাফুর রহমান/২৫