ভবনটি ২০১৯ সাল থেকেই ঝুঁকিপূর্ণ: ফায়ার সার্ভিসের ডিজি
বঙ্গবাজারের আগুন নিয়ন্ত্রণে, পুড়েছে ৫০০০ দোকান, ৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দাবি
বাংলাদেশের রাজধানীর গুলিস্তানের বঙ্গবাজার মার্কেটের আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। আজ (মঙ্গলবার) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ফায়ার সার্ভিসের কন্ট্রোল রুমের ডিউটি অফিসার লিমা খানম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আজ (মঙ্গলবার) সকাল ছয়টা দশ মিনিটে আগুনের ঘটনা জানার পর ঢাকা এবং আশেপাশের জেলার সবগুলো ফায়ার সার্ভিসের ৪৮টি ইউনিট সেখানে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ড শুরুর পরপরই সেনাবাহিনীর সম্মিলিত সাহায্যকারী দল সেখানে কাজ করছে। এর পাশাপাশি সেখানে বিমানবাহিনীর একটি সাহায্যকারী দল ও একটি হেলিকপ্টার কাজ করে।

ফায়ার সার্ভিসের গণমাধ্যম বিভাগের কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম দোলন জানান, সকাল ৬টা ১০ মিনিটে ওই মার্কেটে আগুন লাগার খবর পান তারা। ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের পাশেই হওয়ায় দুই মিনিটের মধ্যে সেখানে প্রথম ইউনিট পৌঁছায়। এরপর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে ইউনিটের সংখ্যা। কিন্তু আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব না হওয়ায় ঢাকায় ফায়ার সার্ভিসের অধিকাংশ ইউনিটকে সেখানে ডাকা হয়। বহু দূর থেকেও বঙ্গবাজারের আকাশে ধোঁয়ার কুণ্ডলী উঠতে দেখা যায়। বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার থেকেও আগুনের ওপর পানি ছিটানো হয়।

বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন জানিয়েছেন, বঙ্গবাজার মার্কেটে আড়াই হাজারসহ আশপাশের মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রায় ৫ হাজার দোকান ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে। আগুনে আনুমানিক দুই হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে তিনি বলেন, সব পুড়ে শেষ না করা পর্যন্ত এই আগুন নেভার কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। আমাদের জানা মতে, শুধু বঙ্গবাজার কাঠের মার্কেটেই আড়াই হাজারের মতো দোকান রয়েছে। এখানে ছোট ছোট ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা দোকান করেন। সামনে ঈদ। সবাই ঈদকেন্দ্রিক বেচাকেনার পণ্য তুলেছেন দোকানে। এমন সময় এই অগ্নিকাণ্ড বড় ধরনের ক্ষতি ডেকে এনেছে। এই ব্যবসায়ীদের পুঁজি বলতে দোকানের মালামালই। মালামাল পুড়ে গেলে তাদের আসলে পুঁজি বলতে সব শেষ। এখন তাদের জন্য আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি, রমজানের ঈদকেন্দ্রিক ব্যবসায় ক্ষতি পুষিয়ে দিতে প্রাথমিকভাবে সাতশ কোটি টাকা থোক বরাদ্দের দাবি জানাচ্ছি।"

এদিকে, ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন জানিয়েছেন, 'বঙ্গবাজারে আগুনে পুড়ে যাওয়া মার্কেট ভবনটি ২০১৯ সালের ১০ এপ্রিল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বলে ঘোষণা করেছিলাম। এমনকি ১০ বার নোটিশ দিয়েছি। করণীয় যা ছিল করেছি। কিন্তু তারা কোনো কথা শোনেননি।’
আজ (মঙ্গলবার) দুপুর ১টার দিকে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের গেটে এক ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক।#
পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/৪