তথ্য ফাঁসের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কাজ শুরু: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
নাগরিকের তথ্য ফাঁস নিয়ে অভিযোগের তীর এনআইডি সার্ভারের দিকে
বাংলাদেশের সরকারি ওয়েবসাইট থেকে লাখ লাখ নাগরিকদের তথ্য ফাঁসের ঘটনায় আলোচনা এখন সর্বত্র। আমেরিকান ওয়েবসাইট টেকক্রাঞ্চ জানিয়েছে সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা বিটক্রেক সাইবার সিকিউরিটির গবেষক ভিক্টর মার্কোপোলোস প্রথমে এ দাবী করেছেন।
তিনি বলেছেন, ফাঁস হওয়া তথ্যের মধ্যে রয়েছে নাগরিকদের পূর্ণ নাম, ফোন নম্বর, ইমেইল ঠিকানা এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর রয়েছে।
গত দু’দিনে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ সংবাদে উদ্বিগ্ন অনেকেই। সবার মনে ঘুরপাক খাচ্ছে, তথ্য ফাঁস হলে কী কী ঝুঁকিতে পড়তে পারেন তারা।
এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন,নাগরিকের ফাঁস হওয়া যে কোনো ধরনের তথ্যই অপব্যবহার হতে পারে। এসব তথ্য দিয়ে যে কোনো অপরাধী অন্য কারও নামে ভার্চুয়াল অ্যাকাউন্ট খুলে সিম রেজিস্ট্রেশন করে জড়াতে পারেন অপরাধ কার্যক্রমে। তথ্য ফাঁসের কারণে ওই সব ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার করে ওয়েব অ্যাপ্লিকেশনে ঢোকা, সেখানে পরিবর্তন অথবা অ্যাপ্লিকেশনগুলিকে মুছে ফেলার মতো কাজ করা যেতে পারে। তাই উদ্বিগ্ন নাগরিকরা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের ই-গভ সার্ট-এর প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী সাইফুল আলম খান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তারা বিষয়টি অবগত হয়েছেন এবং কাজ করছেন। তথ্য ফাঁসের ঘটনা নিয়ে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী ও বিভিন্ন দপ্তর প্রধানরা ঘটনা অনুসন্ধানে কাজ করছেন।
এমন পরিস্থিতিতে সার্ভার থেকে বিপুল সংখ্যক জন্ম ও মৃত্যুর নিবন্ধন তথ্য গায়েব হওয়ার বিষয়ে অনুসন্ধান প্রতিবেদন হাইকোর্টে দাখিল করেছে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ। আজ রোববার বিচারপতি জে বি এম হাসানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে এ প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান এ প্রতিবেদন দাখিল করেন।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, হ্যাক নয়, সিস্টেমের দুর্বলতায় তথ্য ফাঁস হয়েছে। আজ সকালে বঙ্গবন্ধু ইন্টারন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটি অ্যাওয়ারনেস অ্যাওয়ার্ডের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা জানান তিনি। পরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আইসিটি ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী বলেন, তথ্য ফাঁস হয়েছে জন্মনিবন্ধন ওয়েবসাইট থেকে। কিন্তু বিকেলে নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে জরুরী সংবাদ সম্মেলনে জাতিয় পরিচয়পত্র এনআইডির মহাপরিচালক এ কে এম হুমায়ুন কবীর বলেছেন, আমাদের সার্ভার সুরক্ষিত আছে। আমাদের সার্ভারে কোনো প্রকার তথ্য আসেনি ও যায়নি । আমাদের সার্ভার সুরক্ষিত আছে । তিনি বলেন,১৭১টি প্রতিষ্ঠান এনআইডি সার্ভার থেকে সেবা নেয়, তাদের কোথাও থেকেও হতে পারে। সে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সচিবালয়ে অপর এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, নাগরিক তথ্য ফাঁসের সঙ্গে যদি কেউ জড়িত থাকে বা সহায়তা করে, তবে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। এদিকে, সরকারি ওয়েবসাইট থেকে লাখ লাখ নাগরিকের গোপন ও ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসের ঘটনায় তদন্তে নেমেছে র্যাাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যা ব)।#
পার্সটুডে/বাদশাহ রহমান/৯
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।