শরীয়তপুরে বিশ্বনন্দিত কবি ও সুফিসাধক মাওলানা রুমীর স্মরণসভা অনুষ্ঠিত
বাংলাদেশের শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলায় সুফি ঘরানার প্রতিষ্ঠান চিশতীনগরে উদযাপিত হল বিশ্বনন্দিত ফার্সি কবি ও মহাতাপস মাওলানা জালালুদ্দীন রুমি (রহ.) এর স্মরণসভা।
চিশতীনগর শরীফিয়া লাইব্রেরী পাঠকচক্রের উদ্যোগে গতকাল (শনিবার) আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে নির্ধারিত ছিলেন জেড এইচ সিকদার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. তালুকদার মোঃ লোকমান হাকিম। ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের আকস্মিক মৃত্যুর কারণে তিনি উপস্থিত হতে না পারায় তার প্রতিনিধিত্ব করেন উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অব ফ্যাকাল্টি ড. মোহাম্মদ মাহমুদ আলম।
বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ড. আসরারুল হক চিশতী, বিভাগীয় প্রধান (অব.), ইসলামের ইতিহাস, সরকারী এম এম কলেজ, টাঙ্গাইল, শরীয়তপুরের সিনিয়র সহকারী জজ জনাব মোঃ সালাহউদ্দীন, ইরানের আল- মোস্তফা আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র জনাব আবু সালেহ এবং শরীয়তপুর বাসী ও ঢাকায় কর্মরত অধ্যক্ষ ড. লায়লা আক্তার রাত্রি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চিশতীনগরের বর্তমান গদিনশীন শাহজাদা সৈয়দ গোলাম মুদাসসের মাওলা চিশতী এবং সঞ্চালন করেন সৈয়দ গোলাম মুঈনুদ্দীন চিশতী হেলাল। অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা ও সার্বিক পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন চিশতীনগরের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধায়ক, লেখক ও সম্পাদক পীরজাদা প্রকৌশলী সৈয়দ গোলাম মুরসালিন।
হযরত জালালুদ্দীন রুমী সম্পর্কে অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল রচনা প্রতিযোগিতা। দেশব্যাপী আয়োজিত এই রচনা প্রতিযোগিতায় দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মোট ২৯ জন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেন। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সিনিয়র ও জুনিয়র গ্রুপ থেকৈ প্রথম পাঁচ জনকে মেধা পুরস্কার এবং অন্যদেরকে সৌজন্য পুরস্কার দিয়ে সম্মানিত করা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রধান অতিথিকে ক্রেষ্ট ও ফুল এবং বিশেষ অতিথিদের বই ও ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানানো হয়। স্বাগত ভাষণ প্রদান করেন চিশতীনগরের তত্ত্বাবধায়ক পীরজাদা প্রকৌশলী সৈয়দ গোলাম মুরসালিন।
অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল রুমি রচিত কবিতার বাংলা ও ইংরেজি অনুবাদের উচ্চমানসম্পন্ন আবৃত্তি। ঢাকার ঋদ্ধস্বর আবৃত্তি একাডেমির সিনিয়র আবৃত্তি শিল্পী সারিকা আক্তার মৃদুলা এবং সরকারি কিশোর-কিশোরী ক্লাব স্থাপন প্রকল্পের আবৃত্তি শিক্ষক আবদুল্লাহ আল মাসুদ বাংলা অনুবাদকৃত কবিতার আবৃত্তি করেন। ইংরেজী অনুবাদের আকর্ষণীয় আবৃত্তি করে দর্শক শ্রোতাদের মুগ্ধ করেন শরীয়তপুর বাসী খান হাসান মাসুদ। উপস্থিত সুধীজনদের মধ্য থেকে বক্তাগণ বিশ্ববরেণ্য কবি ও সাধক হযরত জালালুদ্দীন রুমীর বিস্ময়কর প্রতিভাদীপ্ত জীবনের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা করেন।
সভাপতির সমাপ্তি ভাষণের পর সমাগত সুধীজনদের আপ্যায়িত করা হয় এবং তার পর অনুষ্ঠিত হয় রুমি রচিত ফার্সি গজল পেশ। চিশতীনগরের কাওয়াল দল অত্যন্ত পারঙ্গমতার সাথে তাদের পরিবেশিত গানে শ্রোতৃবৃন্দকে মুগ্ধ করেন। অনুষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে ফার্সি গজলের উচ্চারণ ও বাংলা অর্থ সম্বলিত লিফলেট অতিথিদের মধ্যে বিতরণ করা হয়।#
পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/১
