আমিই আমাকে ডুবিয়েছি: শ্রীলঙ্কায় হোয়াইটওয়াশের পর তামিম
(last modified Wed, 31 Jul 2019 17:40:30 GMT )
জুলাই ৩১, ২০১৯ ২৩:৪০ Asia/Dhaka
  • হতাশ তামিম ইকবাল
    হতাশ তামিম ইকবাল

শ্রীলঙ্কার কাছে ৩-০ ব্যবধানে হেরে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর দলীয় ব্যর্থতার জন্য সব দোষ নিজের কাঁধে নিয়েছেন বাংলাদেশ দলের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক তামিম ইকবাল। সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকলেও যথেষ্ট ভালো কাজ করতে পারেননি বলে মনে করেন তিনি।

ম্যাচ শেষে তামিম বলেন, 'আমি ১২ বছর ধরে খেলছি এবং এখানে অনেকেই আছে যারা অনেক সময় ধরে খেলছে দেশের জন্য। আমরা যেভাবে পারফর্ম করেছি এটা খুবই হতাশার। বিশ্বকাপ থেকেই আমি নিজেকে নিজে ডুবিয়েছি। আমি চেষ্টা করেছি কিন্তু যথেষ্ট নয়। সম্ভবত আমার কিছু সময় নেয়া উচিত খেলার বাইরে এবং আত্মবিশ্বাস নিয়ে ফিরে আসা উচিত।'

তিন ম্যাচ সিরিজের একটিতেও দলকে ভালো শুরু এনে দিতে পারেননি বাংলাদেশের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা। শুরুতে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছেন তামিমও। সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে রানের খাতা খোলার আগেই মালিঙ্গার বলে বোল্ড হয়ে ফিরেছিলেন তিনি। দ্বিতীয় ওয়ানডে তামিম ১৯ রান করে বোল্ড হয়েছেন ইসুরু উদানার বলে। সিরিজের শেষ ম্যাচে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ২ রান। এমন পারফর্মেন্সের পর ঘুরে দাঁড়ানোর বিকল্প কিছু দেখছেন না বাঁহাতি এই ওপেনার।

তামিমের ভাষ্যমতে, 'এখানে অনেক নেতিবাচক বিষয় ছিল যার শুরুটা হয়েছিল আমাকে দিয়ে। আমাদের এখান থেকে শক্তভাবে ফিরে আসতে হবে। প্রথম দিন থেকেই আমি বলে আসছি যে দায়িত্বশীল থাকাই হলো সাফল্যের চাবিকাঠি।'

ম্যাচ ও সিরিজসেরা নির্বাচিত হন সাবেক লঙ্কান অধিনায়ক ম্যাথিউস

আজ (বুধবার) কলম্বোতে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে ১২২ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নামা লঙ্কানদের ছুঁড়ে দেয়া ২৯৫ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে টাইগাররা অলআউট হয়েছে মাত্র ১৭২ রানে। তখনও বাকি ছিল ইনিংসের ১৪ ওভার!

বাংলাদেশের হয়ে ৮৬ বলে সর্বোচ্চ ৬৯ রানের ইনিংস খেলেন সৌম্য সরকার। তিনি সাম্প্রতিক সময়ের রানখরা কাটিয়ে হাফসেঞ্চুরি করলেও বাকি ব্যাটসম্যানরা ছিলেন নিষ্প্রভ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান আসে তাইজুল ইসলামের ব্যাট থেকে। তিনি নয় নম্বরে নেমে ২৮ বলে ৩৯ রান করে অপরাজিত থাকেন। এছাড়া, দুই অঙ্কে পৌঁছাতে পারেন কেবল এনামুল হক বিজয় (১৪) ও মুশফিকুর রহিম (১০)।

শ্রীলঙ্কার হয়ে দাসুন শানাকা ২৭ রানে ৩ উইকেট নেন। ২টি করে উইকেট পান কাসুন রাজিথা ও লাহিরু কুমারা।

এর আগে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৯৪ রান তোলে শ্রীলঙ্কা। দলীয় ১৩ রানের মাথায় আভিস্কা ফার্নান্দোকে এলবিডাব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন শফিউল ইসলাম। তার সংগ্রহ ৬ রান। এরপর করুনারত্নে ও পেরেরার ৮৩ রানের জুটি। তাতে তিনশো ছোঁয়া স্কোর গড়ার ভিত পেয়ে যায় লঙ্কানরা। জুটি ভাঙার পর এই দুজনকে অবশ্য অল্প রানের ব্যবধানে ফেরাতে পারেন টাইগার বোলাররা।

করুনারত্নে ৪৬ রান করে হন তাইজুল ইসলামের শিকার। পেরেরার ব্যাট থেকে আসে ৪২ রান। তার উইকেটটি নেন রুবেল হোসেন। দুই ব্যাটসম্যানই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন মুশফিকুর রহিমের হাতে।

শ্রীলঙ্কার দলীয় একশো রানের মধ্যে ৩ উইকেট তুলে নিতে পারলেও চাপটা ধরে রাখতে ব্যর্থ হয় বাংলাদেশ। চতুর্থ উইকেটে ১০১ রানের জুটি গড়েন মেন্ডিস ও ম্যাথিউস। ফিফটি তুলে নেওয়ার পরপরই অবশ্য মেন্ডিসকে ফেরান সৌম্য সরকার। সীমানার কাছে দুর্দান্ত ক্যাচ ধরেন সাব্বির রহমান।

৪০ ওভার পর্যন্ত ওভারপ্রতি পাঁচের নিচে থাকা লঙ্কানদের রান রেট বাড়ানোর কাজটা করেন এ ম্যাচের একাদশে সুযোগ পাওয়া শানাকা। উইকেটে গিয়ে তেড়েফুঁড়ে মেরে ১৪ বলে ৩০ রান করেন তিনি। লঙ্কান একাদশে সুযোগ পাওয়া আরেক ক্রিকেটার শিহান জয়সুরিয়া খেলেন ৭ বলে ১৩ রানের ক্যামিও ইনিংস। এ দুজনকে আউট করেন ম্যাচে শফিউল।

ইনিংসের শেষ ওভারে ম্যাথিউসকে বিদায় করেন সৌম্য। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৮৭ রানের ইনিংস খেলেন এই অভিজ্ঞ তারকা। তাকে আউট করার পরের বলে আকিলা দনঞ্জয়ার উইকেট তুলে নিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও জাগিয়েছিলেন সৌম্য। তবে সেটা হয়নি। বরং খরুচে হয়ে যান তিনি। ওয়ানিদু হাসারাঙ্গা অপরাজিত থাকেন ৫ বলে ১২ রানে।

৪০ ওভার পর্যন্ত নিয়ন্ত্রিত বোলিং করে টাইগাররা। তবে ডেথ ওভারে বোলিং ভালো হয়নি। উইকেট হাতে থাকায় আর থিতু হয়ে যাওয়া অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস ও দাসুন শানাকা ঝড় তোলায় শেষ ১০ ওভারে ১০৬ রান আদায় করে নেয় শ্রীলঙ্কা।

বল হাতে ৯ ওভারে ৫৬ রান তুলে নিয়ে সবচেয়ে সফল বোলার সৌম্য। ৩ উইকেট পেয়েছেন শফিউলও। তবে তিনি ১০ ওভারে খরচ করেছেন ৬৮ রান। ১ উইকেট করে গেছে রুবেল ও তাইজুলের ঝুলিতে। 

 

পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/৩১

 

 

ট্যাগ