'ভারতীয় প্রতিষ্ঠান গণআপত্তির মুখে বাংলাদেশে কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে'
(last modified Sat, 05 Oct 2019 14:24:00 GMT )
অক্টোবর ০৫, ২০১৯ ২০:২৪ Asia/Dhaka
  • সংবাদ সম্মেলনে সুলতানা কামাল
    সংবাদ সম্মেলনে সুলতানা কামাল

বাংলাদেশের সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এবং সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল বলেছেন, বর্তমানে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে ভারত  যৌথভাবে যেসব ক্ষতিকর প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে তার সমস্ত সুযোগ-সুবিধাও যাবে ভারতের পক্ষে। এ বিষয়টি নিয়ে দেশবাসীর চিন্তা-ভাবনার সময় এসেছে।  

সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির উদ্যোগে আজ (শনিবার) সকালে রাজধানীতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আশংকার কথা বলেন।  

এসময় তিনি স্পষ্ট করে বলেন, আমি ভারতবিরোধী কোনো কথা বলছি না। স্বাধীনতার যুদ্ধের সময় ভারত যদি আমাদের পাশে না দাঁড়াতো তাহলে আমরা মুক্তিযুদ্ধটা যেভাবে শেষ করতে পেরেছি সেভাবে হয়তো শেষ করতে পারতাম না। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সেটা স্মরণ করি, সেজন্য অবশ্যই ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞও। কিন্তু আজকে বাংলাদেশকে একটা বাজারে কিংবা তাদের শিল্প কারখানার আস্তানা বানিয়ে নিজেরা সব সুযোগ সুবিধা নিয়ে নেবে, এ বিষয়ে আমাদের এখন চিন্তাভাবনা করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, মানবাধিকার কর্মী হিসেবে কষ্ট হলেও বলছি, সবচেয়ে সস্তা শ্রমের দেশ বাংলাদেশ। এখানে বিনিয়োগে সবচেয়ে ভালো পরিবেশ রয়েছে। অর্থাৎ আমরা সব দিয়ে দিতে পারি। সে সুযোগে যেনতেন ভাবে মানুষকে তাদের জায়গা-জমি থেকে উৎখাত করে রামপালের মতো পরিবেশ বিধ্বংসী আরো প্রকল্প বিভিন্ন জায়গায় করা হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে উদ্বেগ প্রকাশ করে সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম রেডিও তেহরানকে বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে সরকার জনগণের সাথে যেমন প্রতারণাপূর্ণ আচরণ করছে তেমনি ভারতও বন্ধুত্বের নামে জেনেশুনেই আমাদের দেশ ও জনগণের জন্য  ক্ষতিকর কাজ করে যাচ্ছে।

আজকের সংবাদ সম্মেলনে সুলতানা কামাল খোলাসা করেই বলেছেন, রামপালের প্রকল্প নির্মাতা ভারতীয় কোম্পানি এনটিপিসি তাদের নিজ দেশ ভারতে সকল কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থগিত করেছে। তারা তাদের দেশে কার্বন তৈরির দায় কমাতে চায়। কয়লা বিদ্যুতের বদলে তারা গুজরাটে বিশ্বের বৃহত্তম সৌর শক্তি পার্ক স্থাপনের জন্য ২৫ হাজার কোটি রুপি বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা তারতের কয়েকটি রাজ্যের কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র অর্ধদিবস বন্ধ রাখার কথাও জানিয়েছে। অথচ ওই একই প্রতিষ্ঠান প্রবল গণআপত্তির মুখেও বাংলাদেশে কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এটি নিঃসন্দেহে প্রতিবেশীর প্রতি একটি দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ।

সুলতানা কামাল বলেন, আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর ৪৩তম সভায় সুন্দরবনের ঐতিহ্য রক্ষায় গৃহীত ১৪টি সিদ্ধান্তের বলতে গেলে কোনোটিই তোয়াক্কা করা হচ্ছে না।সংগঠনের পক্ষে তিনি দাবি জানিয়ে বলেন, ‘অবিলম্বে সুন্দরবনে রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল করতে হবে। বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূলজুড়ে সব কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিল করে বিকল্প জ্বালানি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে। সুন্দরবনের বাফার জোন করে বনের কাছাকাছি সব কলকারখানা ও এলপিজি কারখানা বন্ধ করতে হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্যসচিব ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. আব্দুল মতিন, কমিটির সদস্য রুহীন হোসেন প্রিন্স ও শরীফ জামিল প্রমুখ।#

পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/৫

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।