কুয়েতে বাংলাদেশি এমপি পাপুলের ১৪০ কোটি টাকা জব্দ করার আবেদন
-
শহীদুল ইসলাম পাপুল
কুয়েতে গ্রেফতার বাংলাদেশের লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শহীদুল ইসলাম পাপুল এবং তার কোম্পানির প্রায় ৫০ লাখ কুয়েতি দিনার (প্রায় ১৪০ কোটি টাকা) জব্দ করতে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংককে অনুরোধ করেছেন পাবলিক প্রসিকিউটর।
কুয়েতের প্রভাবশালী পত্রিকা আরব টাইমের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইতোমধ্যে পাবলিক প্রসিকিউটর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন যাতে ওই অর্থ অন্য কোথাও পাচার না হতে পারে। এছাড়া সরকারের কৌঁসুলিরা মনে করছেন পরবর্তীতে এটা মামলার প্রমাণ হিসেবে তাদের জন্য জরুরি।
এদিকে, কুয়েত সরকারের তিন কর্মকর্তা পাপুল মামলায় সরকারি কৌঁসুলির কাছে জবানবন্দি দিয়েছেন। এদের মধ্যে দু’জন ম্যানপাওয়ার কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা এবং একজন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা। এখন পর্যন্ত তদন্তে পাওয়া গেছে, পাপুল প্রতি বছর ঘুষ, উপহার ও অন্যান্য খরচ বাদ দিয়ে প্রায় ৬০ কোটি টাকা লাভ করতেন।
এ মাসের প্রথম সপ্তাহে মানবপাচার, ভিসা বাণিজ্য ও অর্থ পাচার সংক্রান্ত অপরাধে পাপুলকে গ্রেফতার করা হয়। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পরে উঠে আসে কীভাবে তিনি মানুষকে প্রতারিত করে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন এবং এই কাজে তাকে কুয়েতের প্রভাবশালী সরকারি কর্মকর্তারা সহায়তা করেছে ঘুষ, উপহার ও অন্যান্য সুযোগের জন্য।
সংসদ সদস্য পাপুলকে গত ৬ জুন রাতে কুয়েতের মুশরিফ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। মারাফি কুয়েতিয়া কোম্পানির অন্যতম মালিক পাপুলের কুয়েতে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি রয়েছে।
পাচারের শিকার পাঁচ বাংলাদেশির অভিযোগের ভিত্তিতে পাপুলের বিরুদ্ধে মানবপাচার, অর্থপাচার ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের শোষণের অভিযোগ এনেছে কুয়েতি প্রসিকিউশন। আটকের পরদিন থেকে তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের এই এমপি রিমান্ডে যা বলেছেন, তা প্রসিকিউটরদের বরাতে প্রকাশ করছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। কুয়েতি কর্মকর্তাদের তিনি কীভাবে কত টাকা ঘুষ দিয়েছেন, সেসব কথাও সেখানে আসছে।
কুয়েতি সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, পাপুলের মদদদাতা হিসাবে ইতোমধ্যে সাতজনকে চিহ্নিত করেছেন তদন্তকারীরা; তাদের মধ্যে কুয়েতের দুইজন বর্তমান এবং একজন সাবেক পার্লামেন্ট সদস্যও রয়েছেন। তাদের সবার নাম দ্রুত প্রকাশ করে বিচারের আওতায় আনার দাবি উঠেছে দেশটিতে।
সাধারণ শ্রমিক হিসাবে কুয়েত গিয়ে বিশাল সাম্রাজ্য গড়া পাপুল ২০১৮ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। শুধু তাই নয়, নিজের স্ত্রী সেলিনা ইসলামকেও সংরক্ষিত আসনে সংসদ সদস্য করে আনেন তিনি।
প্রবাসী উদ্যোক্তাদের প্রতিষ্ঠিত এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান পাপুল, যেখানে তার বড় অঙ্কের শেয়ার রয়েছে।
মারাফি কুয়েতিয়া কোম্পানির প্রায় ৯ হাজার কর্মী রয়েছে বলে তদন্ত কর্মকর্তাদের এর আগে জানিয়েছিলেন পাপুল। যাদের মধ্যে অধিকাংশই বাংলাদেশি। লোক নিয়োগে ৩৪টি সরকারি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি রয়েছে বলেও তথ্য দিয়েছিলেন তিনি।#
পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/২১
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।