বাংলাদেশে করোনায় মৃত্যু ৩৯: ২৫ গণমাধ্যমের সংবাদ বিশ্লেষণ করে নতুন প্রতিবেদন বিপিও'র
https://parstoday.ir/bn/news/bangladesh-i81488-বাংলাদেশে_করোনায়_মৃত্যু_৩৯_২৫_গণমাধ্যমের_সংবাদ_বিশ্লেষণ_করে_নতুন_প্রতিবেদন_বিপিও'র
বাংলাদেশে একদিনের ব্যবধানে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে আরো ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময় নতুন করে ২ হাজার ৭৩৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
(last modified 2025-10-12T12:48:31+00:00 )
জুলাই ১৬, ২০২০ ১৬:৫৬ Asia/Dhaka
  • বাংলাদেশে করোনায় মৃত্যু ৩৯: ২৫ গণমাধ্যমের সংবাদ বিশ্লেষণ করে নতুন প্রতিবেদন বিপিও'র

বাংলাদেশে একদিনের ব্যবধানে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে আরো ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময় নতুন করে ২ হাজার ৭৩৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।

দেশে এখন পর্যন্ত করোনায় মারা গেছেন ২ হাজার ৪৯৬ জন ; আর  মোট শনাক্ত হয়েছে ১ লাখ ৯৬ হাজার ৩২৩ জনের। আজ বৃহস্পতিবার  করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা এই তথ্য জানান। তিনি জানান  আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত  গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৯৪০ জন। এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১ লাখ ৬ হাজার ৯৬৩ জন। গতকাল বুধবার দেশে করোনায় সংক্রমিত ৩ হাজার ৫৩৩ জন শনাক্ত হওয়ার কথা জানানো হয়েছিল। মারা গিয়েছিলেন ৩৩ জন।

ব্রিফিংয়ের তথ্যমতে, দেশে ৮০টি ল্যাবে (পরীক্ষাগার) গত ২৪ ঘণ্টায়  ১২ হাজার ৮৮৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর আগের দিন ১৪ হাজার ২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৯ লাখ ৯৩ হাজার ২৯১টি নমুনা।

করোনার ঝুঁকি এড়াতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও স্বাস্থ্যবিধি মানতে সবাইকে আবারো অনুরোধ করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা। অনলাইন ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ‘সচেতন হোন, সতর্ক হোন, জনসমাগম এড়িয়ে চলুন। যাঁদের অসংক্রামক ব্যাধি আছে, তাঁরা বেশি সতর্ক থাকুন। সচল থাকুন, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ান।’

করোনার উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু ১ হাজার ৭৭৬ 

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে করোনায় মৃত্যুর হিসাব দেওয়া হয় প্রতিদিন। তবে করোনার উপসর্গ বা সন্দেহজনক মৃত্যুর কোনো সরকারি তথ্য দেওয়া হয় না।এ প্রসংগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজ (সিজিএস) পরিচালিত বাংলাদেশ পিস অবজারভেটরি (বিপিও) প্রকল্পের গবেষণায় দেখা গেছে দেশে করোনার লক্ষণ বা উপসর্গ নিয়ে ১ হাজার ৭৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে, টানা ৫ সপ্তাহ বাড়ার পর গত দুই সপ্তাহ ধরে এমন মৃত্যুর সংখ্যা কমছে। সর্বশেষ সপ্তাহে মৃত্যু হয়েছে ৮০ জনের। এর আগের সপ্তাহে এটি ছিল ১৭২ জন। এর আগের সপ্তাহে ছিল ২২২ জন।

৫ থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত করোনা পরিস্থিতি তুলে ধরতে গিয়ে এমনটাই জানিয়েছে বাংলাদেশ পিস অবজারভেটরি (বিপিও)। গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, করোনার উপসর্গ নিয়ে শুধু চট্টগ্রাম বিভাগে মারা গেছেন ৫৫২ জন। এরপর ঢাকা বিভাগে ৩৭১ জনের এমন মৃত্যু হয়েছে। এরপর খুলনা বিভাগে ২২৭ জন, রাজশাহী বিভাগে ১৮৩, বরিশাল ২১০, সিলেট ৯৫, রংপুর ৮১ ও ময়মনসিংহ বিভাগে ৫৭ জন মারা গেছেন করোনার উপসর্গ নিয়ে।

করোনা পরিস্থিতি নিয়ে দেশের ২৫টি গণমাধ্যমের সংবাদ বিশ্লেষণ করে আজ বৃহস্পতিবার নতুন প্রতিবেদনে বিপিও জানিয়েছে, গত ৮ মার্চ থেকে করোনা বিষয়ে গণমাধ্যমের প্রকাশিত তথ্য সংগ্রহ করে প্রতি সপ্তাহে একটি প্রতিবেদন তৈরি করা হচ্ছে। এতে দেখা যায়, ২২ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত এক সপ্তাহে করোনার উপসর্গ নিয়ে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর পরের সপ্তাহে এটি বেড়ে দাঁড়ায় ৬৩ জনে। এরপর এটি বাড়তে থাকে। ২১ থেকে ২৭ জুন পর্যন্ত এক সপ্তাহে সর্বোচ্চ ২২২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, করোনা রোগীর মতো উপসর্গ নিয়ে মারা গেলেও তাঁরা করোনায় সংক্রমিত নাও হতে পারেন। একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, এসব ক্ষেত্রে পরীক্ষা করে ৮৫ শতাংশের করোনা পাওয়া যায়নি বলেও উল্লেখ করা হয়েছে গবেষণা প্রতিবেদনে।

করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আরও কয়েকটি বিষয়ে তথ্য তুলে ধরেছে বিপিও। তাদের প্রতিবেদন বলছে, করোনা নিয়ে সৃষ্ট বিরোধের জের ধরে সারা দেশে ১৩৫টি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ১৮ জন মারা গেছেন। ৫৫৩ জন আহত।

এছাড়া, করোনা নিয়ে গুজব ও মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে ১১ জুলাই পর্যন্ত ৮৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। করোনাকালে  ত্রাণ আত্মসাৎ, খাদ্যে ভেজাল মেশানো ও করোনার বিষয়ে সরকারি নির্দেশনা লঙ্ঘনের মতো অনিয়ম ও অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে ৫৮৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জরিমানা করা হয়েছে ১১ হাজার ৪৭৫ জনকে।

প্রকাশিত বিপিও প্রতিবেদন বলছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে করোনাভাইরাসকে কেন্দ্র করে ২২৩টি নির্যাতন ও সামাজিক কলঙ্ক দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া,  বিভিন্ন জেলায় ২১২টি বিক্ষোভ হয়েছে। এর মধ্যে ২৪ শতাংশ ত্রাণসামগ্রী ও কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সহায়তার দাবিতে, বেতন ও বোনাস পরিশোধের দাবিতে ৩৩ শতাংশ এবং ত্রাণ বিতরণে অনিয়মের বিরুদ্ধে ৫ শতাংশ। এ ছাড়া স্বাস্থ্য খাতে অব্যবস্থাপনা ও যথাযথ চিকিৎসা সামগ্রীর দাবিতে হয়েছে ১০ শতাংশ বিক্ষোভ।#

পার্সটুডে/আব্দুর রহমান খান/রেজওয়ান হোসেন/১৬