করোনাভাইরাস: বাংলাদেশের ইতিহাসে একদিনে আজ মৃত্যুর নতুন রেকর্ড ১০২
বাংলাদেশে টানা তৃতীয় দিনের মতো করোনা সংক্রমণে শতাধিক মানুষের মৃত্যুর খবর দিয়েছে সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আজ রোববার সকাল আটটা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ১০২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এটি দেশে এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক মৃত্যুর রেকর্ড। এর আগের দুদিন ১০১ জন করে মৃত্যু বরণ করেছিল।
শনিবার সকাল ৮টা থেকে আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ৩ হাজার ৬৯৮জন। এ নিয়ে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৭ লাখ ১৮ হাজার ৯৫০। এর মধ্যে ১০ হাজার ৩৮৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। সুস্থ হয়েছে ৬ লাখ ১৪ হাজার ৯৩৬ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৯ হাজার ৪০৪ জনের। নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় রোগী শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ০৬ শতাংশ।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা শনাক্তের কথা জানায় সরকার। গত বছরের মে মাসের মাঝামাঝি থেকে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত শনাক্তের হার ২০ শতাংশের ওপরে ছিল। এরপর থেকে শনাক্তের হার কমতে শুরু করে।
এ বছর মার্চে শুরু হয়েছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। প্রথম ঢেউয়ের চেয়ে এবার সংক্রমণ বেশি তীব্র। মধ্যে কয়েক মাস ধরে শনাক্তের চেয়ে সুস্থ বেশি হওয়ায় দেশে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা কমে আসছিল। কিন্তু মার্চ থেকে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যাও আবার বাড়তে শুরু করেছে। এখন হাসপাতালে ঠাই নেই অবস্থা ।
করোনা মোকাবিলায় সকলকে নিয়ে কাজ করার আহ্বান
করোনা সংক্রমণের উর্ধ্বগতির মাঝে, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল টিম গঠনে প্রয়োজনীয় বরাদ্দের অনুরোধ জানিয়েছেন। একই সাথে, সরকারকে করোনা মোকাবিলায় হিংসা বিদ্বেষ ত্যাগ করে সকলকে সাথে নিয়ে কাজ কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। আজ ১৮ই এপ্রিল, রোববার, বেলা ১১ টা ৩০ মিনিটে "করোনা পরিস্থিতি ও জনজীবনের সংকট” বিষয়ে এক নাগরিক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই আহ্বান জানান। অনলাইনে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল এই সংবাদ সম্মেলনে ডা জাফরুল্লাহ চৌধুরী করোনার ভ্যাক্সিন তৈরির প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে সরকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করেন। এসময় তিনি বলেন, “শুধু আইসিইউ এর সংখ্যা বৃদ্ধি করলে চলবে না। ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মীদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে যেন তারা প্রয়োজন অনুযায়ী সেবা দিতে পারে। পাশাপাশি পর্যাপ্ত অক্সিজেনের ব্যবস্থা করতে হবে এবং রোগীদের সুবিধার্থে অক্সিজেনের উপর ভ্যাটের পরিমাণ কমিয়ে আনতে হবে” ভ্রাম্যমান মেডিকেল টিমের মাধ্যমে করোনার প্রাথমিক চিকিৎসা ঘরে ঘরে পৌঁছে দেবার আশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, শুধু টাকা পয়সা নয়, ভ্রাম্যমান চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে বিপুল সংখ্যক স্বেচ্ছা সেবকেরও প্রয়োজন”। এ সময় লকডাউনে প্রান্তিক ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর খাদ্যের নিশ্চয়তা দেবার পাশাপাশি, করোনার টেস্টের সংখ্যা বৃদ্ধি ও চিকিৎসায় সরকারকে ভর্তুকি দেবার আহ্বান জানানো হয়।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/ বাবুল আখতার/১৮
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।