বাংলাদেশে কোভিড সংক্রমণ: হাসপাতালে ঠাঁই নেই, পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কা
https://parstoday.ir/bn/news/bangladesh-i94912-বাংলাদেশে_কোভিড_সংক্রমণ_হাসপাতালে_ঠাঁই_নেই_পরিস্থিতির_আরও_অবনতির_আশঙ্কা
মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভাগীয় পর্যায়ের হাসপাতালগুলিতে এখন করোনা রোগীর স্থান সংকুলান হচ্ছে না। শয্যা মিলছে না আইসিইউতে। অক্সিজেন সংকট তীব্র। বিশেষজ্ঞগণ আশংকা করছেন, আগামী সপ্তাহ নাগাদ পরিস্থিতি আরো সংকটময় হয়ে উঠবে।
(last modified 2025-09-29T12:37:45+00:00 )
জুলাই ২২, ২০২১ ২০:৫২ Asia/Dhaka

মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভাগীয় পর্যায়ের হাসপাতালগুলিতে এখন করোনা রোগীর স্থান সংকুলান হচ্ছে না। শয্যা মিলছে না আইসিইউতে। অক্সিজেন সংকট তীব্র। বিশেষজ্ঞগণ আশংকা করছেন, আগামী সপ্তাহ নাগাদ পরিস্থিতি আরো সংকটময় হয়ে উঠবে।

ঢাকার কয়েকটি হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ গতকালই জানিয়েছে, বাস্তব পরিস্থিতি এতটাই নাজুক যে ধারণক্ষমতা না থাকায় অনেক রোগীকে ফেরত পাঠাতে হচ্ছে। ঢাকার বাইরে রাজশাহী, ময়মনসিংহ, খুলনা, যশোর বরিশাল হাসপাতালেও একটি সিট এবং সংকটাপন্ন রোগীর জন্য আইসিইউ পাবার জন্য অপেক্ষা করতে করতে অনেক প্রাণ নিভে যাচ্ছে। মিলছে না পর্যাপ্ত অক্সিজেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক জানিয়েছেন, বেড, আইসিইউ সব ফিলআপ। প্রচুর রোগী আসছে এখন, অধিকাংশ রোগীই বাইরের জেলার। অনেক ক্রিটিক্যাল রোগীও আসছে এখন বিভিন্ন জেলা থেকে । বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নজরুল ইসলাম খান বলেন, এখন আমাদের এখানে রোগীর সংখ্যাও অনেক বেশি। আর সিরিয়াস রোগীই বেশি। আইসিইউ একটাও খালি নেই। কিছু বেড খালি আছে।

মুগদা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক অসীম কুমার নাথ বলেন, আমাদের অর্ধেকের বেশি রোগীই ঢাকার বাইরের। ক্রিটিক্যাল রোগীরাই বেশি আসছে। প্রতিদিনই গড়ে তিনজন মারা যাচ্ছে। আইসিইউ গত তিন সপ্তাহ থেকে খালি নেই।

বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান চৌধুরী বলেন, আমাদের ৪৫টি বেডই পূর্ণ। প্রতিদিনই রোগীরা ফেরত যাচ্ছে। আইসিইউ ১৬টি, সবগুলোতেই রোগী আছে। এদিকে ঈদ উপলক্ষ্যে বিধিনিষেদ শিথিল করার কারণে সংক্রমণ বেড়ে আঘামি দু’এক সপ্তাহের মধ্যে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞগন  

সংক্রমণ ও মৃত্যুর সর্বশেষ খবর

নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ১৮৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৮ হাজার ৬৮৫ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া দেশে নতুন করে আরও তিন হাজার ৬৯৭ জন আক্রান্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট ১১ লাখ ৪০ হাজার ২০০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছে আট হাজার ৫৬৬ জন। এ নিয়ে দেশে মোট নয় লাখ ৬৯ হাজার ৬১০ জন করোনা থেকে সুস্থ হলো।  আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের ৬৩৯টি ল্যাবে ১০ হাজার ৮৯৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১১ হাজার ৪৮৬টি। করোনা শনাক্তের হার ৩২ দশমিক ১৯ শতাংশ। এই পর্যন্ত নমুনা শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ৪৬ শতাংশ। ২৪ ঘণ্টায় নতুন ১৮৭ জন মৃত্যুবরণকারীর মধ্যে পুরুষ ১১৭ জন ও নারী ৭০ জন।

এদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ৭৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২৩ জন, রাজশাহী বিভাগে ১০ জন, খুলনা বিভাগে ৪৪ জন, বরিশাল বিভাগে ১১ জন, সিলেট বিভাগে চারজন, রংপুর বিভাগে ১৫ জন ও ময়মনসিংহ বিভাগে পাঁচজন। এ ছাড়া সরকারি হাসপাতালে ১৫৭ জন, বেসরকারি হাসপাতালে ২৮ জন ও বাসায় দুজন মারা গেছেন।#

 দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ। ওই বছরের ১৮ জুন তিন হাজার ৮০৩ জন নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে লাখ ছাড়িয়েছিল করোনার রোগী। সেদিন পর্যন্ত মোট শনাক্ত ছিল এক লাখ দুই হাজার ২৯২ জন। এ ছাড়া দেশে করোনাভাইরাসে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে গত বছরের ১৮ মার্চ।

পার্সটুডে/ আব্দুর রহমান খান/ বাবুল আখতার/ ২২

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।