আবু সাঈদ হত্যা: পুলিশের সাবেক আইজিসহ ১৭ জনের নামে মামলা
https://parstoday.ir/bn/news/event-i140740-আবু_সাঈদ_হত্যা_পুলিশের_সাবেক_আইজিসহ_১৭_জনের_নামে_মামলা
রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, রংপুর রেঞ্জের সাবেক উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আবদুল বাতেন, রংপুর মহানগর পুলিশের সাবেক কমিশনার মো. মনিরুজ্জামানসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
(last modified 2025-09-11T14:06:22+00:00 )
আগস্ট ১৮, ২০২৪ ১৫:৪৮ Asia/Dhaka
  • বুলেটবিদ্ধ হওয়ার আগে পুলিশের সামনে এভাবেই দাঁড়িয়েছিলেন আবু সাঈদ
    বুলেটবিদ্ধ হওয়ার আগে পুলিশের সামনে এভাবেই দাঁড়িয়েছিলেন আবু সাঈদ

রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, রংপুর রেঞ্জের সাবেক উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আবদুল বাতেন, রংপুর মহানগর পুলিশের সাবেক কমিশনার মো. মনিরুজ্জামানসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

আজ (রোববার) রংপুরের অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার আবেদন করেন আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী। মামলাটি গ্রহণ করার জন্য তাজহাট থানাকে নির্দেশ দেন এই আদালতের বিচারক রাজু আহমেদ। মামলার বাদীর আইনজীবী রায়হান কবীর ও রোকনুজ্জামান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- রংপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার আল মারুফ হোসেন, সহকারী কমিশনার মো. আরিফুজ্জামান, আল ইমরান হোসেন, তাজহাট থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ বিভূতি ভূষণ রায়, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আমির আলী ও কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়।

আসামিদের মধ্যে আবদুল বাতেন ও মনিরুজ্জামানকে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হয়েছে। রবিউল ইসলাম, আমির আলী ও সুজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

মামলায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মশিউর রহমান ও লোকপ্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আসাদুজ্জামান মণ্ডল, প্রক্টর অফিসের কর্মকর্তা রাফিউল হাসান, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি পোমেল বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক শামীম মাহফুজ, সাংগঠনিক সম্পাদক ধনঞ্জয় কুমার রায়, দপ্তর সম্পাদক বাবুল হোসেনকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ জনকে।

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, কোটা সংস্কারের দাবিতে রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন আবু সাঈদ। গত ১৬ জুলাই আবু সাঈদ নিরস্ত্র ও একা ছিলেন। তিনি দৃশ্যত পুলিশের জন্য কোনো হুমকি ছিলেন না। তা সত্ত্বেও তাঁকে শটগান দিয়ে গুলি করা হয়। আবু সাঈদ পড়ে গিয়ে একাধিকার দাঁড়ানোর চেষ্টা করলে আসামিরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে তাঁকে একাধিকার গুলি করেন।

এজাহারে বলা হয়েছে, ঘটনার দিন বেলা দুইটার দিকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর থেকে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি পোমেল বড়ুয়ার নেতৃত্বে ছাত্রছাত্রীদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। আবু সাঈদ পিছু না হটে দুই হাত প্রসারিত করে বুক পেতে দিয়ে এগিয়ে যান। পুলিশের সামনে এ সময় প্রক্টর অফিসের কর্মকর্তা রাফিউল হাসান হেলমেট পরে এসে আবু সাঈদকে লক্ষ্য করে ‘গুলি করুন, গুলি করুন’ বলে নির্দেশ দেন। অপর দুই আসামি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষক মশিউর রহমান ও আসাদুজ্জামান মণ্ডল পুলিশকে গুলি করতে প্ররোচিত করেন।

আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। নিরস্ত্র আবু সাঈদকে পুলিশের গুলি করার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সোচ্চার হয় মানুষ। কোটা সংস্কার আন্দোলন একপর্যায়ে সরকার পতনের এক দফায় রূপ নেয়। ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা।#

পার্সটুডে/এমএআর/১৮