সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৪ ১৮:২৬ Asia/Dhaka
  • নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
    নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দ্রুত নির্বাচনের দিকে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ (বৃহস্পতিবার) রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সমন্বয় সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। 

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বুধবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে রাষ্ট্র সংস্কারের একটি ভিশনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেছেন। আমরাও বলেছি, যেন এই সংস্কার কাজগুলো হয়। সেক্ষেত্রে আমরা তাদের কাজের সময় এবং সুযোগও দিতে চাই। আমরা আশা করি-তারা (অন্তর্বর্তীকালীন সরকার) জনগণের চাওয়া পাওয়ার বিষয়টি উপলব্ধি করে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার কাজগুলো শেষ করে নির্বাচনের দিকে যাবেন।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা আশা করব অন্তর্বর্তীকালীন  সরকার তাদের সঠিক দায়িত্ব পালন করবে। যার মাধ্যমে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটবে। কারণ একটি বিষয় খুব গুরুত্বপূর্ণ যে, গণতন্ত্রের বিকল্প নাই।’ 

এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রাথমিক পর্যায়ে এ ধরনের সমস্যা থাকতে পারে। ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে একটি ফ্যাসিবাদী সরকার বিদায় নিয়েছে। আর আওয়ামী লীগ দলীয়করণের মাধ্যমে প্রমোশন দিয়েছে। তাই কিছুটা সময় লাগবে। সব জায়গায় তো নতুন করে রিক্রুট করা সম্ভব না। যারা আছেন তাদেরকেই কাজে লাগাতে হবে। সেজন্য আমাদের একটু ধৈর্য ধরতে হবে।’

ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা পালিয়ে প্রতিবেশী দেশ ভারতে বসে দেশ ও দেশের মানুষের বিরুদ্ধে অপ্রচার চালাচ্ছেন, যা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এসব কথায় কান দেয়া যাবে না। একই সঙ্গে শিল্প প্রতিষ্ঠানে (পোশাকখাত) অস্থিরতা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমি শিল্পপ্রতিষ্ঠানসহ আমাদের দলের নেতা-কর্মীদের অনুরোধ করব, প্রতিষ্ঠান চালু রাখুন এবং সকল প্রকার অস্থিতিশীলতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন।’

এদিকে, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, দেশ সংস্কারে যত দেরি হবে, আস্থাহীনতা তত বাড়বে। তাই দেশের অস্থিরতা দূর করতে প্রয়োজনে অন্তর্বর্তী সরকারকে পুনর্গঠনের দাবি জানিয়েছেন তিনি।

আজ (বৃহস্পতিবার) বিকেলে এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তিনি। মঞ্জু বলেন, ‘মোটাদাগে এই সরকারের মূল প্রায়োরিটি গুম খুন হত্যার বিচার, স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনা ও মৌলিক বিষয়ে সংস্কার ও সুন্দর নির্বাচন আয়োজন করা। তবে গত এক মাসেও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। পুলিশের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হয়নি। মানুষ বের হতে ভয় পাচ্ছে এখনও।’

তিনি আরও বলেন, ‘জনপ্রশাসনে সংকট তৈরি হয়েছে। সচিবালয়ে গণ্ডগোল হচ্ছে, যার মূল কারণ পদায়নে অস্বচ্ছতা। আগের সরকারের বিতর্কিতদের পদায়ন করা হচ্ছে বিভিন্ন স্থানে। আলী ইমামের মতো বিতর্কিত লোককে এমন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসিয়ে মানুষের হতাশা বাড়ানো হয়েছে। আপনারা এমন সংস্কারে যত দেরি করবেন, এতে আস্থাহীনতা বাড়বে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও যানজটের কারণে মানুষ আস্থা হারাচ্ছে। এসব জায়গায় সরকারকে গুরুত্ব দিতে হবে।’

অস্থিরতা দূর করতে অন্তবর্তী সরকারকে প্রয়োজনে পুনর্গঠনের দাবি জানিয়ে মঞ্জু বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমাদের একতাবদ্ধ হতে হবে। সেনাবাহিনীর সমস্যাগুলো দূর করতে হবে এবং আইনশৃঙ্খলার ক্ষেত্রে আরও ভূমিকা নিতে উদ্যোগ নিতে হবে। পুলিশকে একটিভ করতে হবে। প্রতিটা ক্ষেত্রে বিপ্লবের ছোঁয়া থাকতে হবে।’

তিনি মনে করেন, ‘এই সরকারের প্রতি মানুষের যেই প্রত্যাশা ও আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি হয়েছে, সে ক্ষেত্রে প্রশাসনিক অস্থিরতা দ্রুত দূর করতে হবে। এর পেছনে কারও ইন্ধন থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হোক। কোন কাজে দীর্ঘসূত্রিতা যেন না হয়, এতে অনাস্থা সৃষ্টি হবে।’#

পার্সটুডে/এমএআর/১২

ট্যাগ