সাড়ে ৩ বছর পর কারামুক্ত হলেন সাবেক এসপি বাবুল আক্তার
https://parstoday.ir/bn/news/event-i144520-সাড়ে_৩_বছর_পর_কারামুক্ত_হলেন_সাবেক_এসপি_বাবুল_আক্তার
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় আসামি সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তার। চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি জেলার মো. ইব্রাহীম জানান, বাবুল আক্তারের জামিনের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে বুধবার বিকেলে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। 
(last modified 2025-09-11T14:06:22+00:00 )
ডিসেম্বর ০৪, ২০২৪ ১৮:০০ Asia/Dhaka
  • কারাগারে বাবুল আক্তার
    কারাগারে বাবুল আক্তার

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় আসামি সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তার। চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি জেলার মো. ইব্রাহীম জানান, বাবুল আক্তারের জামিনের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে বুধবার বিকেলে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। 

বাবুলের মুক্তি হতে পারে এমন খবরে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের মূল ফটকের বাইরে জড়ো হন সংবাদকর্মীরা। সন্ধ্যার দিকে কারাগারের মূল ফটক দিয়ে ভেতরে যান তার বর্তমান স্ত্রী ইসরাত জাহান মুক্তা। সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে পুলিশ পাহারায় সিলভার রঙের একটা প্রাইভেটকারে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তিনি বের হন; এসময় কারও সঙ্গে তিনি কথা বলেননি।

২০২১ সালের ১২ মে স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় প্রধান আসামি হিসেবে গ্রেফতার হন বাবুল আক্তার। এরপর থেকে কারাগারে রয়েছেন তিনি। দীর্ঘ সময়ে তিনি মামলাটিতে বেশ কয়েকবার জামিন আবেদন করলে আদালত নামঞ্জুর করেন। সবশেষ গত ২৭ নভেম্বর বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমান ও বিচারপতি আলী রেজার হাইকোর্ট বেঞ্চ তাকে জামিন দেয়। এরপর রোববার (১ ডিসেম্বর) বাবুল আক্তারের জামিনের আদেশ বিচারিক আদালত অর্থাৎ তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে জমা দেওয়া হয়। ওইদিন বিকেলে জামিনের আদেশ কারাগারে পাঠানো হয়। কিন্তু কারা কর্তৃপক্ষ তারপরও কালক্ষেপণ করতে থাকে।

একপর্যায়ে খবর আসে বাবুল আক্তারের জামিন স্থগিত চেয়ে চেম্বার আদালতে আবেদন করেন তার শ্বশুর অর্থাৎ মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন। আজ (বুধবার) আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হকের আদালতে সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শুনানি হয়। এদিন আদালতে বাবুল আক্তারের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক। মিতুর বাবার পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান।

শুনানি শেষে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির জানান, হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বহাল রেখেছেন চেম্বার আদালত। ফলে বাবুল আক্তারের মুক্তিতে আর আইনগত বাধা নেই।

২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরের নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হন মাহমুদা খানম মিতু। ওই সময় এ ঘটনা দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচিত হয়। ঘটনার সময় মিতুর স্বামী পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার অবস্থান করছিলেন ঢাকায়। ঘটনার পর চট্টগ্রামে ফিরে তৎকালীন পুলিশ সুপার ও মিতুর স্বামী বাবুল আক্তার পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয়দের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। তবে মামলাটিতে স্ত্রী হত্যাকাণ্ডে স্বামী বাবুল আক্তারেরই সম্পৃক্ততা পায় পিবিআই। ২০২১ সালের ১২ মে আগের মামলাটিতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। একই দিন বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ থানায় দ্বিতীয় মামলাটি দায়ের করেন মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন। ওইদিনই মামলাটিতে বাবুল আক্তারকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। সেই থেকে কারাগারে ছিলেন বাবুল।

এদিকে, প্রথম মামলায় পিবিআইয়ের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ১৪ অক্টোবর নারাজির আবেদন করেন বাবুলের আইনজীবী। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একই বছরের ৩ নভেম্বর নারাজি ও পিবিআইয়ের প্রতিবেদন খারিজ করে মামলাটি অধিকতর তদন্তের আদেশ দেন। এরপর দুটি মামলাই তদন্ত করতে থাকে পিবিআই। তবে পরবর্তী সময়ে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ২০২২ সালের ২৫ জানুয়ারি মিতুর বাবার দায়ের করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়। এরপর একই বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর প্রথম মামলাটি অধিকতর তদন্ত শেষে বাবুলসহ ৭ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। গত বছরের ১৩ মার্চ আলোচিত মামলাটিতে বাবুল আক্তারসহ সাত আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।#

পার্সটুডে/এমএআর/৪