ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘নজরুল-সাহিত্যে ফারসির প্রভাব' শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত
(last modified Thu, 29 May 2025 09:10:36 GMT )
মে ২৯, ২০২৫ ১৫:১০ Asia/Dhaka
  • সেমিনারের অতিথিবৃন্দ
    সেমিনারের অতিথিবৃন্দ

কবি নজরুল ইনস্টিটিউট, আঞ্জুমানে ফারসি বাংলাদেশ ও ঢাকাস্থ ইরানি দূতাবাসের যৌথ উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বাংলা সাহিত্যে ফারসির প্রভাব' শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সেমিনারে অতিথিদের বক্তব্যে ভারতীয় উপমহাদেশের সাথে পারস্যের ঐতিহাসিক সম্পর্ক, কাজী নজরুলের ইসলামের মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যে তার স্পষ্ট প্রভাব, বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে ফারসির অবদান প্রভৃতি উঠে আসে। 

গতকাল (বুধবার) বিকাল ৪ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবনের মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে এই আয়োজন করা হয়।

কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের পরিচালক লতিফুল ইসলাম শিবলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইরানি রাষ্ট্রদূত এইচ ই মানসুর চাভোশি। বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাবি কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সিদ্দিকুর রহমান খান, ঢাকাস্থ ইরানি দূতাবাসের সাংস্কৃতিক কাউন্সেলর সাইয়েদ রেজা মীর মোহাম্মদী। 

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাবি বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. হোসনে আরা বেগম। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের চেয়ারম্যান ও আঞ্জুমানে সাধারণ সম্পাদক ড. মুমিত আল রশিদ।

সেমিনারে বক্তারা বলেন, ইরান ও বাংলাদেশের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। ইতিহাস-সংস্কৃতি, ভাষা-সাহিত্যের সাথে জড়িয়ে আছে ফারসি। বাংলা সাহিত্যের সাথে ফারসি সাহিত্যের সম্পর্ক নিবিড়। ফারসি সাহিত্যের ঐশ্বর্য ধারণ করে সমৃদ্ধ হয় বাংলা সাহিত্য। ফারসি সাহিত্যের ভাবনা ও শৈল্পিকতা কাব্যাকারে প্রকাশ করেন আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরল ইসলাম। নজরুলের সাহিত্যে ফারসি কবিদের ভাবনার প্রতিফলন ঘটে অনুবাদ সাহিত্যে। ফারসি কবিতা কাব্যাকারে অনুবাদে নজরুল বিস্ময়কর প্রতিভা। ওমর খৈয়ামের রুবাই মূল ফারসি থেকে অনূদিত হয়ে বাংলা সাহিত্যভুবনে নতুন মাত্রা যোগ করে। ইরানি কবিদের মানবিক মূল্যবোধ বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করে। নজরুল ও হাফিজের কবিতায় মানবতার জয়গান উচ্চকিত হয়।

লতিফুল ইসলাম শিবলী

বক্তারা আরো বলেন, ইরানের বিখ্যাত কবি হাফিজ, ওমর খৈয়াম, শেখ সাদী ও মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমিকে ধারণ করেই নজরুল বিদ্রোহী কবি, প্রেমের কবি, মানবতার কবি। আর সাম্য ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সমাজ গঠনে সাহিত্যের ভূমিকা অপরিসীম। নজরুল ও হাফিজের কবিতায়  ঐশীপ্রেমের আলো ঝরে পড়ে।

সভাপতির বক্তব্যে কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের পরিচালক লতিফুল ইসলাম শিবলী বলেন, আমাদের আদি রাষ্ট্র ভাষা ছিল ফারসি। ফারসি ওই সময় এমনভাবে প্রাসঙ্গিক ছিল যে তারা ক্ষমতা দখল করার সাথে সাথেই ফারসি নিষিদ্ধ করতে পারেনি। পরে আইন করে নিষিদ্ধ করে। ব্রিটিশদের আগমনের জন্য সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরবি ও ফারসি ভাষা।

তিনি বলেন, আমরা পারস্যের সাথে খুব সম্ভবত একটা চুক্তিতে যাব। এতদিন আমরা পারস্যকে দেখেছি নজরুলের মাধ্যমে‌; এখন আমরা পারস্যবাসীকে নজরুলকে চেনাতে চায়।

পরিচালক বলেন, আজ থেকে এটি একটি ঐতিহাসিক দিন। এটা পারস্যের কবিদের সাথে বাংলার কবিদের যাত্রা।

রাষ্ট্রদূত এইচ ই মানসুর চাভোশি বাংলাদেশের সাথে ইরানের ঐতিহাসিক সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন।#

পার্সটুডে/এমএআর/২৯