ডেঙ্গু পরিস্থিতি এখন নাজুক: জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ
ডেঙ্গুতে একদিনে সর্বোচ্চ ১২ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৭৪০
-
ডেঙ্গুতে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু
বাংলাদেশে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ১২ জন মারা গেছেন। চলতি বছর একদিনে এটাই সর্বোচ্চ মৃত্যু। এর মধ্যে পাঁচজনই মারা গেছে বরিশাল বিভাগে।
আজ রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭৪০ জন। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে মোট ১৭৯ জন মারা গেছেন এবং হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪১ হাজার ৮৩১ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে মৃতদের মধ্যে ৫ জন বরিশাল বিভাগের, ৩ জন ঢাকা উত্তরের, ২ জন ঢাকা দক্ষিণের এবং চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহ বিভাগের একজন করে মারা গেছেন। এর আগে, গত ১১ সেপ্টেম্বর ডেঙ্গুতে ৬ জন মারা গিয়েছিলেন।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মুশতাক হোসেন আজ বলেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতি এখন নাজুক হয়ে গেছে। এখন যে অবস্থা তাতে সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে, সে ইঙ্গিত স্পষ্ট। দুর্ভাগ্যজনক হলো, এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু মোকাবিলায় কোনো নতুন ধরনের উদ্যোগ দেখা গেল না। সেই গতানুগতিক ধারাতেই চলছে সবকিছু।
চলতি বছরের জুলাই ও আগস্ট মাসে ডেঙ্গুর প্রকোপ সর্বোচ্চ ছিল, তবে একদিনে এত বেশি মৃত্যুর নজির এ বছর প্রথম। এ মাসের ১১ তারিখ ডেঙ্গুতে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। আজকের আগে এটিই ছিল একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, আক্রান্তদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বয়সভিত্তিক রোগী ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে।
দেশে ২০০০ সালে যখন নতুন করে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব হয় তখন তা ছিল মূলত রাজধানীকেন্দ্রিক রোগ। কিন্তু দিন দিন এটা ছড়িয়ে গেছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। গত বছর থেকেই ডেঙ্গু ঢাকার বাইরে ছড়িয়েছে ব্যাপকহারে। চলতি বছর এখন পর্যন্ত ঢাকার বাইরে আক্রান্ত হয়েছেন ৩০ হাজার ৮৫৪ জন। আর ঢাকায় আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজার ৯৭৭ জন।
ডেঙ্গু মোকাবিলায় ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের নানা সীমাবদ্ধতা থাকলেও এখানে বিশেষ করে মশা নিয়ন্ত্রণে কিছু উদ্যোগ আছে। কিন্তু দেশের অন্যত্র এটা প্রায় অনুপস্থিত। ঢাকার বাইরে, বিশেষ করে পৌরসভাগুলোতে মশা নিয়ন্ত্রণে প্রায় কোনো উদ্যোগই নেই। আবার ঢাকার বাইরে বেশির ভাগ জায়গায় ডেঙ্গুর চিকিৎসারও কোনো কাঠামো গড়ে ওঠেনি। চলতি বছর দেশে প্রায় ৫০ শতাংশ ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে। এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যুর কারণ বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পেয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর অর্থ হলো, বেশির ভাগ রোগী একেবারের মুমুর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে পৌঁছেছে।#
পার্সটুডে/জিএআর/২১