গাজায় ইসরায়েলি মদদপুষ্ট সশস্ত্র গ্রুপগুলোর বিরুদ্ধে 'বৃহত্তম' অভিযান চালাবে হামাস
https://parstoday.ir/bn/news/event-i153290-গাজায়_ইসরায়েলি_মদদপুষ্ট_সশস্ত্র_গ্রুপগুলোর_বিরুদ্ধে_'বৃহত্তম'_অভিযান_চালাবে_হামাস
পার্স-টুডে: গাজার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, সেখানে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মদদপুষ্ট সশস্ত্র দল ও মিলিশিয়াদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা অভিযান তীব্রতর করছে হামাস। এর লক্ষ্য হল পুরো উপত্যকা জুড়ে হামাসের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা।
(last modified 2025-10-27T13:35:51+00:00 )
অক্টোবর ২২, ২০২৫ ১৭:৫৭ Asia/Dhaka
  • গাজার একটি সড়কে হামাস সদস্যদের সশস্ত্র প্রহরা (ফাইল ছবি)
    গাজার একটি সড়কে হামাস সদস্যদের সশস্ত্র প্রহরা (ফাইল ছবি)

পার্স-টুডে: গাজার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, সেখানে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মদদপুষ্ট সশস্ত্র দল ও মিলিশিয়াদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা অভিযান তীব্রতর করছে হামাস। এর লক্ষ্য হল পুরো উপত্যকা জুড়ে হামাসের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা।

গাজার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছেন যে, ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর সাথে কাজ করা অবশিষ্ট সশস্ত্র গ্রুপগুলোকে ধ্বংস করতে হামাস শিগগিরই তাদের সবচেয়ে বড় অভিযান শুরু করবে।

১০ অক্টোবরের যুদ্ধবিরতির পর থেকে, হামাস বাহিনী সক্রিয়ভাবে এই মিলিশিয়াদের লক্ষ্য করে কাজ করছে, গাজা শহরের কুখ্যাত দোঘমুশ গোষ্ঠী সহ বেশ কয়েকটি উপদলকে এরিমধ্যে সফলভাবে নিরস্ত্র করেছে হামাস। 

তবে একদল মিলিশিয়া এখনও ইসরায়েলি নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকাগুলোতে সক্রিয় রয়েছে, বিশেষ করে পূর্ব রাফায় ইয়াসের আবু শাবাবের নেতৃত্বে তথাকথিত "পপুলার ফোর্সেস" এবং উত্তর গাজায় আশরাফ আল-মানসির নেতৃত্বে "পপুলার আর্মি"। এই গোষ্ঠীগুলোকে ইসরায়েলের সহযোগী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, যারা ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী থেকে অস্ত্র, অর্থ এবং লজিস্টিক সহায়তা পাচ্ছে।

নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেন, আবু শাবাব মিলিশিয়াসহ গাজা জুড়ে দখলদারদের সাথে সহযোগিতাকারী গ্যাংগুলোর সদস্যের সংখ্যা এখন কয়েকশতে সীমাবদ্ধ।  আবু শাবাবের প্রায় ২,০০০ সদস্য রয়েছে । তিনি বলেছেন, "এই গোষ্ঠীগুলি অপহরণ, হত্যা, নাশকতা এবং ইসরায়েলি বাহিনীকে সশস্ত্র আশ্রয় প্রদানের সাথে জড়িত।"

কর্মকর্তা আরও বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে সংগৃহীত সাম্প্রতিক গোয়েন্দা তথ্য থেকে জানা যায় যে এই মিলিশিয়া বাহিনী ও ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মধ্যে ব্যাপক সমন্বয় ছিল যার মধ্যে রয়েছে নিরাপত্তা অভিযান এবং প্রতিরোধ যোদ্ধাদের উপর আক্রমণ। "মিলিশিয়া সদস্যরা প্রায়ই ইসরায়েলি অবস্থানের কাছে অভিযান চালানোর চেষ্টা করে, কিন্তু হামাসের নিরাপত্তা বাহিনী তাদের মোকাবেলা করে এবং তাদের নিষ্ক্রিয় করে। 

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী যেসব এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহার করেছে, সেসব স্থানে হামাস তাদের নিয়ন্ত্রণ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছে বলে ইসরায়েল স্বীকার করেছে, ওইসব এলাকায় স্থানীয় মিলিশিয়া বাহিনী ভেঙে ফেলা হয়েছে বা পরাজিত হয়েছে বলে জানা গেছে, তবে আবু শাবাব গোষ্ঠীটি এখনও টিকে আছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উল্লেখ করেছে যে উত্তর ইরেজ ক্রসিংয়ের কাছে সক্রিয় আল-মানসির "পপুলার আর্মি" গ্রুপ সবচেয়ে দুর্বল দল এবং তারা ইসরায়েলি সুরক্ষা নিয়ে সক্রিয় থাকে বলে হামাস সহজেই তাদের সঙ্গে সরাসরি মোকাবেলা করতে পারছে না।

হামাসের অভিযানে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে কালাশনিকভ রাইফেল, মেশিনগান, গোলাবারুদ এবং ইসরায়েল কর্তৃক এই মিলিশিয়াদের সরবরাহ করা যানবাহন। যদিও এই গোষ্ঠীগুলো কেবল ছোটখাটো অস্ত্র পায়, তাদের নেতৃত্ব ফিলিস্তিনি এবং প্রতিরোধ সদস্যদের লক্ষ্য করে অভিযান চালানোর জন্য ইসরায়েলি সৈন্যদের কাছ থেকে তহবিল, উন্নত সরবরাহ এবং সরাসরি আদেশ পায়।

এই মিলিশিয়াদের সাথে বেশ কয়েকটি হাই-প্রোফাইল অপহরণের যোগসূত্র রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হাসপাতালের প্রধান ডাঃ মারওয়ান আল-হামস এবং তার মেয়ের অপহরণ, যা গাজার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার প্রতি তাদের হুমকিকে আরও স্পষ্ট করে তোলে। এই মিলিশিয়াদের সাথে বেশ কয়েকটি হাই-প্রোফাইল অপহরণের যোগসূত্র রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হাসপাতালের প্রধান ডাঃ মারওয়ান আল-হামস এবং তার মেয়ের অপহরণ, যা গাজার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য তাদের হুমকিকে আরও স্পষ্ট করে তোলে।

হামাসের নিরাপত্তা অভিযানের বিরুদ্ধে পশ্চিমাদের সমালোচনা সত্ত্বেও, অনেক স্থানীয় উপজাতি নেতা এবং সম্প্রদায় হামাসের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেছেন, ইসরায়েলের সাথে সহযোগিতা বন্ধ করা এবং গাজার সার্বভৌমত্ব রক্ষা করাকে অপরিহার্য বলে মনে করছেন।

হামাসের নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে যে, হত্যা বা নির্যাতনের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের বাদ দিয়ে নিরস্ত্রীকরণ এবং আত্মসমর্পণে ইচ্ছুক মিলিশিয়া সদস্যদের জন্য একটি সাধারণ ক্ষমার সুযোগ দেয়া হয়েছে। গত রবিবার আনুষ্ঠানিকভাবে এই সুযোগের মেয়াদ শেষ হয়েছে, অবশ্য সন্ত্রাস-বিরোধী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। #

পার্স টুডে/এমএএইচ/২২

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।