জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গণভোট করার সুযোগ নেই: বিএনপি
https://parstoday.ir/bn/news/event-i153488-জাতীয়_সংসদ_নির্বাচনের_আগে_গণভোট_করার_সুযোগ_নেই_বিএনপি
বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনেই গণভোট হবে, তার আগে গণভোট নিয়ে আলোচনার কোনো সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। আজ মঙ্গলবার বিকেলে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেছেন তিনি।
(last modified 2025-10-28T13:53:35+00:00 )
অক্টোবর ২৮, ২০২৫ ১৯:৪০ Asia/Dhaka
  • বিএনপি নেতা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ
    বিএনপি নেতা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ

বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনেই গণভোট হবে, তার আগে গণভোট নিয়ে আলোচনার কোনো সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। আজ মঙ্গলবার বিকেলে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেছেন তিনি।

জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ বাস্তবায়নের উপায়-সম্পর্কিত সুপারিশ আজ মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে হস্তান্তর করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। তাতে এই সনদ বাস্তবায়নের জন্য গণভোট অনুষ্ঠানের বিষয়ে বলা হয়েছে, জুলাই সনদ বাস্তাবায়ন আদেশ জারির অব্যবহিত পর অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে যথোপযুক্ত সময়ে অথবা উক্ত নির্বাচনের দিন এই আদেশ অনুসারে গণভোট অনুষ্ঠান করা হইবে।

এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছি পুরো আলোচনায়। বিএনপির অবস্থান ছিল যে, গণভোট আর নির্বাচন একই দিনে হবে দুটো ব্যালটের মাধ্যমে। এটা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার।...এই ব্যাপারে আলোচনার কোনো সুযোগ নাই। নির্বাচনের দিন দুইটা ব্যালটের মাধ্যমে গণভোট হবে।’

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ নিয়ে এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমাদের অনেকগুলো রেকমেন্ডেশন (সুপারিশ) ছিল, যেগুলো ঐক্যমতে আসে নাই।... কিছু ঐক্যমতের পরিপ্রেক্ষিতে সমাধান হতে হবে, ঐক্যমতের বাইরে গিয়ে কে, কী বলছে; কে কী রেকমেন্ড করছে, এটা তাদের ব্যাপার। আমাদের সেখানে কোনো অসুবিধা নাই। কিন্তু ঐক্যমতের বাইরে গিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়ার কোনো সুযোগ নাই। যেহেতু বিএনপি এখানে ঐকমত্য পোষণ করে না, সেদিকে যাওয়ার আর কোনো সুযোগ নাই।’

‘সরকারের কিছু কিছু লোক প্রশ্নবিদ্ধ

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের ব্রিফ করার আগে গুলশানের ওই কার্যালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাজ্যে রাষ্ট্রদূত সারাহ কুকের সঙ্গে বৈঠক করেন দলটির নেতারা। বৈঠকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ছাড়াও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ও বিএনপির চেয়ারপারসনের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল উপস্থিত ছিলেন।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বাংলাদেশের নির্বাচন গ্রহণযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। বৈঠকে এ বিষয়টি উঠে এসেছে বলে জানান তিনি। অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদল’ দেওয়ার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘ইন্টেরিয়াম সরকারের ভেতরে যে কিছু কিছু লোক আছে, যারা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে; শুধু বিএনপি কর্তৃক প্রশ্নবিদ্ধ হয়নি, অন্যান্য রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। সরকারের মধ্যে যারা আছে যারা যারা একটু বিতর্কিত হয়ে গেছে ইতিমধ্যে এবং যে কাজগুলো হয়েছে সে কাজগুলো আবার রিভিউ (পর্যালোচনা) করার প্রশ্ন আসছে। সুতরাং সেই ক্ষেত্রে এই আলোচনাটা উঠে আসছে। আমরা বলেছি এটা যে, এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

এছাড়াও বৈঠকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরত আসা, বাংলাদেশের নির্বাচনে যুক্তরাজ্যের সহযোগিতা এবং নির্বাচন কমিশনের কার্যপরিধির বিষয়গুলো আলোচনায় ছিল বলে জানিয়েছেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

ঐকমত্য কমিশন অনৈক্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা গ্রহণ করেছে: সালাহউদ্দিন

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ

এদিকে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার বদলে জাতীয় অনৈক্য প্রতিষ্ঠার একটা চেষ্টা গ্রহণ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। কমিশন জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায়–সম্পর্কিত যেসব সুপারিশ প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দিয়েছে, তার প্রতিক্রিয়ায় এ কথা বলেছেন তিনি। একই সঙ্গে কার্যক্রম শেষ করায় ঐকমত্য কমিশনকে ধন্যবাদ দিয়েছেন এই বিএনপি নেতা।

আজ (মঙ্গলবার) বিকেলে সচিবালয়ে আইন উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করার পর বেরিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, যে জুলাই জাতীয় সনদে রাজনৈতিক দলগুলো স্বাক্ষর করেছে, সেই স্বাক্ষরিত সনদবহির্ভূত অনেক পরামর্শ বা সুপারিশ সনদ বাস্তবায়নের আদেশের খসড়ায় যুক্ত করা হয়েছে।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘জুলাই জাতীয় সনদ ৮৪টি দফা সম্ভবত, সেখানে বিভিন্ন দফায় আমাদের এবং বিভিন্ন দলের কিছু ভিন্নমত আছে, নোট অব ডিসেন্ট আছে। পরিষ্কারভাবে সেখানে উল্লেখ করা আছে যে এসব নোট অব ডিসেন্টের বিষয়গুলো রাজনৈতিক দলগুলো যারা দিয়েছে, তারা যদি নিজেদের নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখপূর্বক ম্যান্ডেটপ্রাপ্ত হয়, তাহলে তারা সেভাবে সেটা বাস্তবায়ন করতে পারবে। সেটা এই প্রিন্টেড জাতীয় জুলাই সনদের যে বই এখানে আপনারা পাবেন, সব দফায় দফায় যেখানে যেখানে ডিসেন্ট আছে, সেখানে আছে। অথচ বিস্ময়করভাবে আজকে যে সংযুক্তিগুলো দেওয়া হলো সুপারিশমালার সঙ্গে, সেখানে এই নোট অব ডিসেন্টের কোনো উল্লেখ নেই।’#

পার্সটুডে/জিএআর/২৮