বিজেপি নেতা সিটি রবি: 'হালাল' খাবার 'অর্থনৈতিক জিহাদ'
-
বিজেপির জাতীয় সাধারণ সম্পাদক সিটি রবি
ভারতে হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপি’র জাতীয় সাধারণ সম্পাদক সিটি রবি 'হালাল' খাবারকে 'অর্থনৈতিক জিহাদ' বলে অভিহিত করেছেন।আজ (বুধবার) এনডিটিভি হিন্দি ওয়েবসাইট সুত্রে প্রকাশ, কর্ণাটকে গত কয়েকদিন ধরে, কিছু ডানপন্থী হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠী হিন্দুদের কাছে 'হালাল' গোশত ব্যবহার না করার জন্য আবেদন করছে, বিশেষ করে উগাডি উৎসবের পর হিন্দু নববর্ষে।
উগাডির একদিন পরে, 'নন-ভেজিটেরিয়ান' হিন্দুদের একটি অংশ দেবতাকে গোশত নিবেদন করে এবং নববর্ষ উদযাপন করে। কিন্তু কিছু ডানপন্থী কর্মী মানুষকে এটা না করতে বলছে। এর কিছুদিন আগে কর্ণাটকের কিছু অংশে হিন্দু ধর্মীয় মেলার সময় মন্দিরের আশেপাশে মুসলিমদের দোকান স্থাপনে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল।
গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাতকারে বিজেপি নেতা সিটি রবি বলেন, ‘হালাল একটি অর্থনৈতিক জিহাদ। এর অর্থ হল এটি জিহাদ হিসেবে ব্যবহৃত হয় যাতে মুসলিমরা অন্যদের সাথে ব্যবসা না করে। তা বাস্তবায়িত হয়েছে। যখন তারা মনে করে হালাল মাংস ব্যবহার করা উচিত, তখন এটা ব্যবহার করা উচিত নয় বললে ভুল কী?
তিনি বলেন, হালাল মাংস 'তাদের দেবতাকে নিবেদন করা হয় যা তাদের (মুসলিমদের) প্রিয়। তিনি আরও বলেন, হালালকে পরিকল্পিতভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে পণ্যটি শুধুমাত্র মুসলিমদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা যায়, হিন্দুদের কাছ থেকে নয়।
রবির প্রশ্ন- ‘মুসলিমরা যখন হিন্দুদের কাছ থেকে গোশত কিনতে অস্বীকার করে, তখন আপনি কেন হিন্দুদের তাদের (মুসলিমদের) কাছ থেকে গোশত কিনতে বলছেন? এটা বলার কী অধিকার আছে মানুষের?’
হালাল গোশত বয়কটের প্রশ্নে ওই বিজেপি নেতা আরও বলেন, এই ধরনের ব্যবসা একতরফা হয় না, বরং, উভয় পক্ষ থেকেই হয়। তিনি বলেন, মুসলিমরা যদি হালাল নয় এমন গোশত খেতে প্রস্তুত হয়, তাহলে এই লোকেরাও (হিন্দু) হালাল গোশত ব্যবহার করবে।
এ প্রসঙ্গে কর্ণাটকের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এবং জেডি(এস) নেতা এইচডি কুমারস্বামী এই জাতীয় আলোচনার নিন্দা করেছেন এবং হিন্দু যুবকদেরকে রাজ্যকে ‘দূষিত’ না করতে বলেছেন। কুমারস্বামী বলেন, ‘আমি সরকারকে জিজ্ঞেস করতে চাই আপনারা এই রাজ্যকে কোথায় নিয়ে যেতে চান? আমি হিন্দু যুবকদের হাত জোড় করে অনুরোধ করছি রাজ্যকে কলুষিত করবেন না।’
তিনি বলেন, ওদের কর্ণাটকের শান্তি ও সম্প্রীতি নষ্ট করা উচিত নয়। কুমারস্বামীর অভিযোগ, ‘কংগ্রেস রাজ্যে এমন সরকার এনেছে। এখন কংগ্রেস বিজেপি সরকারকে অনৈতিক বলছে। এর জন্য দায়ী কে? বর্তমান পরিস্থিতির জন্য জেডিএস বা এইচডি কুমারস্বামী কেউই দায়ী নয়। কংগ্রেসের প্রতারণার কারণে রাজ্যের মানুষ ভুগছে।’
ইতোমধ্যে, কে মারালুসিদ্দাপ্পা, অধ্যাপক এসজি সিদ্দারামাইয়া, বলভার মহমাদ কুনহি এবং ড. বিজয়সহ রাজ্যের ৬১ জন প্রগতিশীল চিন্তাবিদ ধর্মীয় বিদ্বেষ বন্ধ করার আবেদন জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বাসভরাজ বোম্মাইকে চিঠি লিখেছেন। এখানে ইচ্ছাকৃতভাবে ধর্মীয় বিদ্বেষ সৃষ্টি করা একটি লজ্জাজনক কাজ বলেও উল্লেখ করা হয়েছে ওই চিঠিতে।#
পার্সটুডে/এমএএইচ/আবুসাঈদ/৩০
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।