রায়িসির সফর: ইরান ও আফ্রিকার মধ্যে সম্পর্ক বৃদ্ধিতে নতুন দিগন্তের উন্মোচন ঘটবে
https://parstoday.ir/bn/news/iran-i125366-রায়িসির_সফর_ইরান_ও_আফ্রিকার_মধ্যে_সম্পর্ক_বৃদ্ধিতে_নতুন_দিগন্তের_উন্মোচন_ঘটবে
ইরানের প্রেসিডেন্ট সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রায়িসি আগামীকাল মঙ্গলবার সকালে কেনিয়া, উগান্ডা এবং জিম্বাবুয়ে সরকারের আমন্ত্রণে ৩ দিনের সফরে আফ্রিকা যাচ্ছেন।
(last modified 2025-07-29T12:16:04+00:00 )
জুলাই ১০, ২০২৩ ১৯:০০ Asia/Dhaka

ইরানের প্রেসিডেন্ট সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রায়িসি আগামীকাল মঙ্গলবার সকালে কেনিয়া, উগান্ডা এবং জিম্বাবুয়ে সরকারের আমন্ত্রণে ৩ দিনের সফরে আফ্রিকা যাচ্ছেন।

আফ্রিকার তিন দেশের সঙ্গে ইরানের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক শক্তিশালী করাই হবে প্রেসিডেন্ট রায়িসির আসন্ন সফরের মূল উদ্দেশ্য। ইরানের প্রেসিডেন্ট তার তিনদিনের এ সফরে কেনিয়া, উগান্ডা ও জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্টদের সঙ্গে সাক্ষাতের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করবেন এবং যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবেন। এছাড়া এসব দেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক শক্তিশালী করার লক্ষ্যে আফ্রিকার দেশগুলোর শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন প্রেসিডেন্ট রায়িসি।

ইরানের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রায়িসি এ পর্যন্ত ১৫টি দেশ সফর করেছেন। ইরানের সরকারি বার্তা সংস্থা ইরনা জানিয়েছে, ইরানের কোনো প্রেসিডেন্ট ১১ বছর পর এই প্রথম আফ্রিকার দেশগুলো সফরে যাচ্ছেন। ২০২৩ সালের মার্চ মাসে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্ট ইরান এবং পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতামূলক প্রথম শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে বৈঠকে আফ্রিকার দেশগুলোর সঙ্গে ব্যাপকভাবে সহযোগিতা বাড়ানোর লক্ষ্যে তেহরানের প্রস্তুতির কথ জানিয়েছিলেন। 

ইসলামি বিপ্লবের বিজয়ের পর থেকেই ইরান সবসময় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিকভাবে অভিন্নতার কারণে আফ্রিকার দেশগুলো  সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের ওপর জোর দিয়ে আসছে। সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রায়িসির নেতৃত্বাধীন সরকার বন্ধুপ্রতীম দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক শক্তিশালী করার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ভারসাম্যপূর্ণ বৈদেশিক নীতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে আফ্রিকার দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক সম্প্রসারণের দিকে বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছে। গত বছরের আগস্টে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইর আমির আব্দুল্লাহিয়ান মালি প্রজাতন্ত্র এবং সেখান থেকে তানজানিয়া এবং জাঞ্জিবার ভ্রমণ করেন এবং এসব আফ্রিকান দেশগুলোর কর্মকর্তাদের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়ানোর উপায় নিয়ে কথা বলেছিলেন।

রায়িসির সরকার তেল বহির্ভুত পণ্য রপ্তানির উন্নয়ন কর্মসূচীর ওপর জোর দেয়ার পাশাপাশি আফ্রিকার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক  সম্প্রসারণের ওপর  বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। গত দেড় বছরে আফ্রিকা থেকে ৫০ টিরও বেশি সরকারি প্রতিনিধি দল ইরানে ভ্রমণ করেছে এবং বিভিন্ন চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে।

ইরান ও আফ্রিকার দেশগুলোর মধ্যে বার্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ বাড়লেও তা ১০ বিলিয়ন ডলারের লক্ষ্যমাত্রা থেকে এখনো অনেক দূরে অবস্থান করছে। বর্তমানে আফ্রিকার আমদানি প্রায় 600 বিলিয়ন ডলার ঘোষণা করা হয়েছে, কিন্তু ইরান এখনো ২ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য আফ্রিকায় রপ্তানি করতে সক্ষম হচ্ছে না। বর্তমান বাধাগুলো দূর করে ইরান ও আফ্রিকার মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধি বিশেষ করে জ্বালানি, প্রযুক্তি-প্রকৌশল,পরিবহন, কৃষি এবং খনির ক্ষেত্রে তারা উল্লেখযোগ্য সম্পর্কে বাড়াতে পারে। 

আফ্রিকা মহাদেশের সাথে ইরানের সম্পর্কের অর্থনৈতিক গুরুত্ব ছাড়াও  রাজনৈতিক ও সংস্কৃতির দিক থেকে  এই মহাদেশের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের বিকাশ ঘটানো ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এসব দেশ পশ্চিমা অবৈধ নিষেধাজ্ঞা এবং রাজনৈতিক চাপের শিকার হয়েছে। এই মহাদেশের ৫৪টি দেশের মধ্যে ৫০টি দেশ জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের সদস্য যার মধ্যে কয়েকটি দেশ এখনো বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞার কবলে রয়েছে। এছাড়া এই মহাদেশে ৩০টি ইসলামিক দেশ রয়েছে এবং এর জনসংখ্যার প্রায় ৫০% মুসলমান।

এটা স্পষ্ট যে আফ্রিকায় ইরানের বিনিয়োগ এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে পারস্পরিক অংশগ্রহণ উভয় পক্ষের জন্য কেবল অর্থনৈতিক সুবিধাই বয়ে আনবে না বরং এটি মহাদেশটিতে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের বিশ্বাসযোগ্যতা এবং রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে তেহরানের প্রভাবকেও বাড়িয়ে তুলবে। এ কারণে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্টের আসন্ন আফ্রিকার তিন দেশ কেনিয়া, উগান্ডা ও জিম্বাবুয়ে সফর ইরান ও আফ্রিকার মধ্যে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে নতুন গতির সঞ্চার করবে এতে কোনো সন্দেহ নেই।#  .

 

পার্সটুডে/এমবিএ/ ১০

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।