ইরান-পাকিস্তান উত্তেজনার অবসান; ভ্রাতৃত্বের বন্ধন আরও শক্তিশালী হবে
https://parstoday.ir/bn/news/iran-i133546-ইরান_পাকিস্তান_উত্তেজনার_অবসান_ভ্রাতৃত্বের_বন্ধন_আরও_শক্তিশালী_হবে
ইরান ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনার অবসান হয়েছে। এই দুই মুসলিম প্রতিবেশী দেশ আবারও নিজেদের ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক অটুট রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে। দুই দেশই সন্ত্রাসবাদের শিকার হয়েছে বহুবার। এ কারণে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান অভিন্ন। এই অভিন্ন অবস্থান বাস্তবায়নে নিজেদের মধ্যে সমন্বয় আরও বাড়াতে দুই দেশের নেতারা তাগিদ দিয়েছেন।
(last modified 2025-07-29T12:16:04+00:00 )
জানুয়ারি ২০, ২০২৪ ১২:১৬ Asia/Dhaka

ইরান ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনার অবসান হয়েছে। এই দুই মুসলিম প্রতিবেশী দেশ আবারও নিজেদের ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক অটুট রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে। দুই দেশই সন্ত্রাসবাদের শিকার হয়েছে বহুবার। এ কারণে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান অভিন্ন। এই অভিন্ন অবস্থান বাস্তবায়নে নিজেদের মধ্যে সমন্বয় আরও বাড়াতে দুই দেশের নেতারা তাগিদ দিয়েছেন।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির আব্দুল্লাহিয়ান ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জলিল আব্বাস জিলানির গতকালের টেলিসংলাপ ছিল চমৎকার। সেখানে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান ভ্রাতৃপ্রতিম ইরানের নিরাপত্তাকে নিজের নিরাপত্তা বলে মনে করে। ইসলামাবাদ চায় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপগুলো আরও বেশি সমন্বয়ের ভিত্তিতে নিজ নিজ দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর মাধ্যমেই সম্পন্ন হোক। এ সময় ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সন্ত্রাসবাদের ক্রমবর্ধমান হুমকির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রীও দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার অবসান ঘোষণা করেছেন। সম্প্রতি ইরানের কেরমানে শোকার্ত মানুষের সন্ত্রাসীদের হামলায় বহু মানুষ নিহত হয়েছে।

এর আগে ইরানের সিস্তান-বেলুচিস্তানে একটি থানায় সন্ত্রাসীদের হামলায় ১১ ইরানি পুলিশ নিহত হয়। তখনি ইরান বলেছিল সন্ত্রাসীদেরকে কঠিন শাস্তি দেওয়া হবে। পাকিস্তানে ঘাঁটি বানিয়ে সেখান থেকে ইরানের অভ্যন্তরে হামলার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে এ পর্যন্ত বহুবার ইসলামাবাদকে তথ্য দিয়েছে তেহরান। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে প্রত্যাশিত পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। অবশ্য পাকিস্তান দাবি করে আসছে তারা সব সময়ই ইরানের কথাকে গুরুত্ব দিয়ে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে।

বাস্তবতা হচ্ছে পাকিস্তান ও ইরানের মধ্যে ৯০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। দুই দেশেরই রয়েছে বড় বড় শত্রু। একইসঙ্গে মুসলিম দেশ হওয়ার কারণেও দুই দেশ আন্তর্জাতিক আধিপত্যবাদীদের পক্ষ থেকে নানা ষড়যন্ত্রের সম্মুখীন। দুই দেশই এই বাস্তবতা ভালো করে জানে এবং এই বাস্তবতার আলোকে নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক জোরদারের প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে। এরই ধারাবাহিকতায় এবারের উত্তেজনাও দ্রুত মিটিয়ে ফেলা সম্ভব হয়েছে। মুসলিম বিশ্বের শত্রুরা এই উত্তেজনাকে বড় করে তুলে ধরে আত্মতৃপ্তি উপলব্ধির চেষ্টা করে যাচ্ছে, নানা মহল থেকে উসকানিও দেওয়া হচ্ছে।

কিন্তু দুই দেশই জানে ভ্রাতৃঘাতী উত্তেজনা চলতে থাকলে উভয়েরই ক্ষতি হবে এবং শত্রুরা ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করবে। বিশ্লেষকরা বলছেন, যারা সন্ত্রাসী তৎপরতা চালাচ্ছে এবং সন্ত্রাসীদের পেছনে যারা কলকাঠি নাড়ছে তারা সাম্রাজ্যবাদীদের দালাল। সাম্রাজ্যবাদীদের কর্তৃত্ব অটুট রাখতে তারা জেনে-বুঝে অথবা অজ্ঞতার কারণে সন্ত্রাসী তৎপরতা চালিয়ে মানুষ হত্যা করছে। সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামের অগ্রপথিক ইরান এই বাস্তবতা সম্পর্কে অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে ভালো জানে এবং অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতার পুনরাবৃত্তি রোধে তেহরান কখনোই পিছপা হবে না।

দুই দেশের সঠিক উপলব্ধির কারণে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন আরও শক্তিশালী হবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

পার্সটুডে/এসএ/২০

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।