শহীদ ও তার কর্মকে স্মরণ রাখা কেন গুরুত্বপূর্ণ?
পার্সটুডে- সমাজের প্রয়োজনে আল্লাহর রাস্তায় নিহত হওয়াকে ইসলামের পরিভাষায় শাহাদাত বলাহয়। বিভিন্ন হাদিসে এই মৃত্যুকে শ্রেষ্ঠ মৃত্যু এবং সর্বোত্তম সৎকাজ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
পবিত্র কুরআন ও হাদিসে শাহাদাতের মর্যাদা সম্পর্কে যেসব কথা বলা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে শহীদদের অমরত্ব লাভ, কিয়ামতের ভয়াল দিবসে শাফায়াতপ্রাপ্তির প্রতিশ্রুতি এবং সকল গুনাহর ক্ষমাপ্রাপ্তির সুযোগ। ইরানে ইসলামি বিপ্লবের পর শাহাদাতের এই মর্যাদাকে সমুন্নত রাখতে নানা ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
পার্সটুডে ফার্সির রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ জাফর আলিয়ান-নেজাদ দৈনিক ওয়াতান ইমরোজে প্রকাশিত এক নিবন্ধে লিখেছেন: শহীদদের স্মরণ করলে আমরা দুঃখ, ভয় ও হতাশাকে জয় করতে পারি। আমাদের মধ্যে প্রতিরোধ করার প্রেরণা শক্তিশালী হয় এবং আধিপত্যকামী শক্তির বিরুদ্ধে স্বাধীনতা রক্ষা করার জন্য আমরা আরো বেশি উদ্যোমি হয়ে উঠি।
কোহগিলুয়েহ ও বোয়ের আহমাদ প্রদেশের শহীদ কংগ্রেসের সদস্যদের সমাবেশে ইমাম খামেনেয়ীর বক্তব্য ছিল শত্রুদের মনস্তাত্ত্বিক তৎপরতা সম্পর্কে একটি জ্ঞানদায়ক বিষয়, যা ইরানের বর্তমান রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবেশ বিবেচনা করে বিশ্লেষণ করা যেতে পারে।
এটা বলা যেতে পারে যে, আধিপত্যের সম্পর্ক তৈরির জন্য সবচেয়ে সহজ এবং কম ব্যয়বহুল কৌশলগুলির মধ্যে একটি হল শত্রু পক্ষের হিসাবনিকাশে নিষ্ক্রিয়ভাব তৈরি করা; যে নিষ্ক্রিয়ভাবের কারণে নিজের ও শত্রুপক্ষের সক্ষমতা সম্পর্কে ভুল ধারনা তৈরি হয় অর্থাৎ নিজের সক্ষমতাকে খাটো করে দেখা হয় এবং শত্রুর সামর্থ্যকে অনেক বেশি বলে ধরে নেওয়া হয়।
সমাজের শরীরে যখন মানসিক নিষ্ক্রিয়তা ঘটে তখন এটি ভয়, দুঃখ এবং হতাশাজনক পরিস্থিতি তৈরি করে। যদি এই ৩টি নেতিবাচক বিষয়ের প্রভাব যখন যেকোনোভাবে সমাজের উপর পড়ে তখন এর ফলাফল হবে নিষ্ক্রিয়তা, পরনির্ভরতা এবং প্রতিরোধের সক্ষমতা ক্রমাগত হ্রাস পাওয়া।
এই দৃষ্টিকোণ থেকে, যেকোনো সমাজের স্বাধীনতা অনেকটাই নির্ভর করে সাহস, প্রাণশক্তি এবং আশার জীবন্ত লক্ষণগুলির অস্তিত্বের উপর। প্রত্যেক সমাজেই বীরদের এমন একটা কর্মযজ্ঞ আছে। এক অর্থে, তারাই সেই ক্ষেত্রগুলির বিজয়ী হিসাবে বিবেচিত হতে পারে যারা ঘটনার গুরুত্ব এবং প্রতিপক্ষের কৃত্রিম দম্ভকে ভয় পায়নি এবং যারা অন্তরের সমস্ত শক্তি দিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল।
শহীদগণ এভাবে ভয়ের সমীকরণ পরিবর্তন করে শত্রুর পক্ষ থেকে সৃষ্ট কৃত্রিম ভয়ের আভাকে অকার্যকর করে দেন। আর এরকম একটি ভূখণ্ডেই শাহাদাত বীরত্বের সংস্কৃতিতে পরিণত হয় এবং স্বাভাবিকভাবেই যে জাতি শহীদ উৎসর্গ করতে পারে সে জাতিকে আটকে রাখা সম্ভব নয়।#
পার্সটুডে/এমএমআই/১৮
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।