রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়ন নতুন যে নিষেধাজ্ঞা প্রস্তাব তুলেছে তাতে ভেটো দিতে পারে জোটের সদস্য দেশ হাঙ্গেরি। মার্কিন ম্যাগাজিন পলিটিকো এ খবর দিয়েছে।
ইউক্রেনের মাটিতে ফ্রান্স সেনা মোতায়েন করতে পারে বলে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন যে বক্তব্য দিয়েছেন তার নিন্দা করে হাঙ্গেরির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পিটার সিজার্তো বলেছেন, এ ধরনের পদক্ষেপ চূড়ান্তভাবে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু করতে পারে এবং তা সর্বাত্মক পরমাণু যুদ্ধে রূপ নেবে।
হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো সামরিক জোট এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইউক্রেনে সেনা মোতায়েন করার জন্য প্রস্তুত হয়েছে। রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যকার সংঘাতকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিজেদের যুদ্ধ বলে মনে করছে এবং এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে তার পরিণতি কত ভয়াবহ হবে তা বিবেচনা করতে ব্যর্থ হচ্ছে।
হাঙ্গেরির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পিটার সিজার্তো বলেছেন, ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান এবং ইহুদিবাদী ইসরাইলের মধ্যে বর্তমানে যে সামরিক উত্তেজনা বিরাজ করছে তা এড়ানো সম্ভব। গতকাল (রোববার) সামাজিক মাধ্যম এক্স পেইজে দেয়া এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।
হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান বলেছেন, আমেরিকার আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সম্ভাব্যপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন যে, তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিজয়ী হতে পারলে ইউক্রেন যুদ্ধে আমেরিকার পক্ষ থেকে অর্থ সরবরাহ বন্ধ করবেন।
ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যকার চলমান যুদ্ধের বিষয়ে মস্কোর বিরুদ্ধে নিন্দা জানিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন গতকাল যে যৌথ বিবৃতি প্রকাশের চেষ্টা করেছে তাতে বাধা দিয়েছে হাঙ্গেরি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুইজন কূটনীতিক মার্কিন গণমাধ্যম পলিটিকো এবং ব্লুমবার্গকে এই তথ্য দিয়েছেন।
হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান বলেছেন, ইউক্রেন সংঘাত যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্য নিকট ভবিষ্যত অন্ধকার। হাঙ্গেরির ফিডেজ-কেডিএনপি সংসদীয় উপদলের রুদ্ধদ্বার সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
হাঙ্গেরিতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ডেভিস প্রেসম্যান হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, রাশিয়া এবং ন্যাটো জোটের ব্যাপারে হাঙ্গেরি যদি সুষ্ঠুভাবে নীতি অনুসরণ করতে না পারে তাহলে দেশটির ওপর আমেরিকা চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দেয়ার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন যে বিপুল অংকের অর্থ বরাদ্দ দিতে চাইছে সে ব্যাপারে হাঙ্গেরি তার কঠোর অবস্থান বজায় রেখেছে। দেশটি বলেছে, অর্থ সহায়তা দেয়ার বিষয়ে ইউরোপীয় কমিশন ও হাঙ্গারির মধ্যে এখনো যোজন যোজন দূরত্ব বিরাজ করছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নে হাঙ্গেরির ভোটাধিকার কেড়ে নেয়ার বিষয়ে জোটের পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে। ইউক্রেনকে অস্ত্র ও অর্থ সহায়তা করার বিষয়ে হাঙ্গেরি যাতে বিরোধিতা করতে না পারে সেজন্য দেশটির ভোটাধিকার কেড়ে নেয়ার কথা বলা হয়েছে এ প্রস্তাবে।