নি:সন্দেহে ২০২২ সাল ছিল ফিলিস্তিনি প্রতিরোধের বছর: আল-মুদাল্লেল
(last modified Mon, 26 Dec 2022 07:05:40 GMT )
ডিসেম্বর ২৬, ২০২২ ১৩:০৫ Asia/Dhaka

ফিলিস্তনের ইসলামি জিহাদ আন্দোলনের নেতা বলেছেন ২০২২ সালকে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধের বছর হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা উচিত। আহমাদ আল-মুদাল্লেল কেন এমন মন্তব্য করলেন তার কিছু কারণ উল্লেখ করা যেতে পারে।

প্রথম কারণ হলো ২০২২ সালে বেশ কিছু নতুন প্রতিরোধ গোষ্ঠি গড়ে উঠেছে। এরা ইহুদিবাদি ইসরাইলের বিরুদ্ধে সোচ্চার। অন্তত সাতটি নতুন প্রতিরোধ সংগঠনের মধ্যে 'বিশে শিরন' গোষ্ঠি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। নতুন নতুন এইসব সংগঠন গড়ে ওঠার মানে হলো ফিলিস্তিনিদের মাঝে ইসরাইল বিরোধী প্রতিরোধ শক্তি এখন আর কেবলমাত্র হামাস কিংবা জেহাদের মতো ঐতিহ্যবাহী সংগঠনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। নতুন প্রজন্মের ফিলিস্তিনি যুবকদের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা এই গোষ্ঠিগুলো ইহুদিবাদী ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়া তোলার ক্ষেত্রে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ।

দ্বিতীয় কারণটি হলো, প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর ভৌগোলিক এলাকা গাজা উপত্যকা পেরিয়ে গেছে। পশ্চিম তীরও এখন সশস্ত্র হয়ে উঠেছে। ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের মধ্যে সংঘাতের ক্ষেত্রে পশ্চিম তীরের সশস্ত্র হয়ে ওঠা একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি। এর ফলে ইহুদিবাদী ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের হুমকি বেড়েছে এবং এই হুমকি আর গাজা উপত্যকার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই।

তৃতীয় কারণ হল, প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর কর্মকাণ্ডের ভৌগোলিক এলাকা দখলদার ইসরাইল নিয়ন্ত্রণাধীন ভূমিতে বিশেষ করে তাদের রাজধানী তেল আবিব পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। এই ঘটনা ইহুদিবাদীদের ভেতর আতঙ্ক ও ভয় সৃষ্টি করেছে। এই ভীতি ইসরাইলি কর্মকর্তাসহ তাদের মিডিয়াগুলোর মাঝেও সঞ্চারিত হয়েছে। এই ঘটনা প্রমাণ করে দখলদার ইহুদিবাদী সরকার নিরাপত্তা এবং গোয়েন্দা দুর্বলতায় ভুগছে।

চতুর্থ কারণ হলো ২০২২ সালে ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলোর মাঝে আগের তুলনায় অনেক বেশি ঐক্য লক্ষ্য করা গেছে। জেহাদে ইসলামির বিরুদ্ধে ইসরাইলি যুদ্ধের সময় এই ঐক্য দেখা গেছে। হামাসও জেহাদে ইসলামির সহযোগিতায় এগিয়ে আসে। ইসরাইল চেয়েছিল এই যুদ্ধের মাধ্যমে ফিলিস্তিনীদের ঐতিহ্যবাহী এই দুই গ্রুপের মাঝে অনৈক্য সৃষ্টি করবে। কিন্তু তা ব্যর্থ হয়েছে।  

এ প্রসঙ্গে ইরানে হামাসের প্রতিনিধি খালেদ আল-কাইউমি বলেছেন: গাজা যুদ্ধের প্রাথমিক অর্জন হলো প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে যৌথভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রবণতা শক্তিশালী হয়ে ওঠা। এরফলে ইহুদিবাদী ইসরাইলের যে কোনো পদক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর প্রতিক্রিয়া হবে আগের তুলনায় অনেক বেশি কঠোর।

এসব কারণে বলা যেতে পারে যে, ২০২২ সালে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ বিগত বছরগুলোর তুলনায় শক্তিশালী হয়েছে। তারা এখন নিজেদের শক্তি সামর্থ্যের ওপর নির্ভর করে ইহুদিবাদী ইসরাইলের ওপর কঠোর আঘাত হানতে পারবে। এই অর্জনের জন্য বিসর্জনও দিতে হয়েছে অনেক। ইসরাইল ফিলিস্তিনি গোষ্ঠিগুলোকে প্রতিহত করতে না পেরে নিরপরাধ নারী-শিশু-বৃদ্ধদের ওপর নির্বিচার হামলা চালিয়েছে। ওই হামলায় বিপুল ফিলিস্তিনী শহীদ হয়েছে।#

পার্সটুডে/এনএম/২৬

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।