ইয়েমেনি ড্রোন কি আমেরিকার সামুদ্রিক কৌশলকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পেরেছে?
-
ইয়েমেনি ড্রোন
পার্সটুডে: লেবাননের একটি সংবাদপত্র স্বীকার করেছে যে, লোহিত সাগরে ইয়েমেনের নৌযুদ্ধের অভিজ্ঞতা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বিবর্তনের একটি মাইলফলকে পরিণত হয়েছে।
লোহিত সাগরে ইয়েমেনের অসম যুদ্ধকৌশলের মোকাবিলায় ব্যর্থ হওয়ার পর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ব্যাপকভাবে ড্রোন এবং নৌ রোবট ব্যবহারের দিকে তাদের সামরিক পদ্ধতি পরিবর্তন করেছে।
পার্স টুডে জানিয়েছে, লেবাননের দৈনিক আল-আখবার একটি বিশ্লেষণে লিখেছে, ইয়েমেনের নৌযুদ্ধ যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বিবর্তনের একটি টার্নিং পয়েন্টে পরিণত হয়েছে। আরবি এই মাধ্যমটি জোর দিয়ে জানায়, ইয়েমেনের যুদ্ধ প্রমাণ করেছে যে, প্রচলিত ও ব্যয়সাপেক্ষ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা আর যথেষ্ট নয়। সেই কারণে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর “Replicator” নামের একটি কর্মসূচি চালু করে; যার লক্ষ্য কম খরচে বিপুল সংখ্যক ড্রোন ও রোবট উৎপাদন করা এবং দ্রুত সেগুলোকে যুদ্ধক্ষেত্রে মোতায়েন করা।
প্রথম পর্যায়ে ২০২৩ সালের শেষ দিকে ড্রোন বিমান, নৌ-যান, সতর্কীকরণ ব্যবস্থা এবং ড্রোন প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কেনার জন্য মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ৫০ কোটি ডলার বরাদ্দ করেছে। এই অর্থ বরাদ্দ ২০২৫ অর্থবছরে আরও ৫০ কোটি ডলার বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া মার্কিন নৌবাহিনী নতুন কৌশল হিসেবে জাহাজে বহনযোগ্য বিমান ও আকাশ থেকে নিক্ষেপযোগ্য মাইন তৈরি করতে যাচ্ছে—যা তুলনামূলকভাবে সস্তা এবং শত্রুপক্ষের ড্রোন হামলার মোকাবিলা করতে সক্ষম হবে। তবে যে বিষয়টি পরিষ্কার, তা হলো ইয়েমেনি বাহিনীর হাতে থাকা সাশ্রয়ী ড্রোন ও নিখুঁত ক্ষেপণাস্ত্র পশ্চিমা উন্নত নৌবহরগুলোকে গুরুতর সংকটে ফেলে দিয়েছে। এ পরিবর্তনের সূচনা হয় ২০২৩ সালের শেষ দিক থেকে, যখন মার্কিন–ইউরোপীয়–ইসরায়েলি জোট অপ্রত্যাশিত প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়।
উচ্চপদস্থ মার্কিন কর্মকর্তারাও স্বীকার করেছেন যে, সহজ ও সস্তা সরঞ্জামগুলো জটিল ও ব্যয়সাপেক্ষ সামরিক কাঠামোকে বিভ্রান্ত করতে সক্ষম হয়েছে। এই বাস্তবতা শুধু ওয়াশিংটনকেই নয়, বরং বেইজিংকেও তাদের সামুদ্রিক কৌশল পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য করেছে। চীনও ইয়েমেনের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে মার্কিন ঐতিহ্যগত সামরিক শ্রেষ্ঠত্বের মোকাবিলায় ড্রোন ও নৌ-রোবটে বিনিয়োগের পথ বেছে নিয়েছে।#
পার্সটুডে/এমএআর/২