সিরিয়া সীমান্তে অচলাবস্থা, জর্ডানের ক্ষোভ ও এপস্টেইন বিতর্ক: ইসরায়েলের অস্বস্তিকর সপ্তাহ
https://parstoday.ir/bn/news/west_asia-i154300-সিরিয়া_সীমান্তে_অচলাবস্থা_জর্ডানের_ক্ষোভ_ও_এপস্টেইন_বিতর্ক_ইসরায়েলের_অস্বস্তিকর_সপ্তাহ
পার্সটুডে- সিরিয়ার দখলকৃত অঞ্চল নিয়ে জোলানি সরকারের সঙ্গে দখলদার ইসরায়েলের  আলাপ-আলোচনা যখন সম্পূর্ণভাবে অচলাবস্থায় পৌঁছেছে, ঠিক সে সময়ই ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে এক ইসরায়েলি মন্ত্রীর উত্তেজনাকর মন্তব্য এবং ইসরায়েলি গুপ্তচর সংস্থা মোসাদের সঙ্গে এবং জেফ্রি এপস্টেইনের সম্পর্ক নিয়ে একটি পুরোনো প্রবন্ধের পুনর্প্রকাশের ঘটনা এই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে ইহুদিবাদী ইসরায়েল একই সময়ে নিরাপত্তা, কূটনীতি ও গণমাধ্যম—এই তিনটি ক্ষেত্রেই নতুন সংকটের মুখোমুখি হয়েছে।
(last modified 2025-11-28T10:09:50+00:00 )
নভেম্বর ২২, ২০২৫ ১৭:২০ Asia/Dhaka
  • সিরিয়া সীমান্তে অচলাবস্থা, জর্ডানের ক্ষোভ ও এপস্টেইন বিতর্ক: ইসরায়েলের অস্বস্তিকর সপ্তাহ
    সিরিয়া সীমান্তে অচলাবস্থা, জর্ডানের ক্ষোভ ও এপস্টেইন বিতর্ক: ইসরায়েলের অস্বস্তিকর সপ্তাহ

পার্সটুডে- সিরিয়ার দখলকৃত অঞ্চল নিয়ে জোলানি সরকারের সঙ্গে দখলদার ইসরায়েলের  আলাপ-আলোচনা যখন সম্পূর্ণভাবে অচলাবস্থায় পৌঁছেছে, ঠিক সে সময়ই ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে এক ইসরায়েলি মন্ত্রীর উত্তেজনাকর মন্তব্য এবং ইসরায়েলি গুপ্তচর সংস্থা মোসাদের সঙ্গে এবং জেফ্রি এপস্টেইনের সম্পর্ক নিয়ে একটি পুরোনো প্রবন্ধের পুনর্প্রকাশের ঘটনা এই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে ইহুদিবাদী ইসরায়েল একই সময়ে নিরাপত্তা, কূটনীতি ও গণমাধ্যম—এই তিনটি ক্ষেত্রেই নতুন সংকটের মুখোমুখি হয়েছে।

সিরিয়া সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধি, অভ্যন্তরীণ চাপ সত্ত্বেও নেতানিয়াহুর পক্ষ থেকে আমেরিকা সফরসূচি বহাল রাখা, ইসরায়েলি এক মন্ত্রীর বক্তব্যে জর্ডানের কঠোর প্রতিক্রিয়া এবং এপস্টেইনের যৌন কেলেঙ্কারি নেটওয়ার্ক নিয়ে নতুন বিতর্ক—এসব মিলিয়ে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইসরায়েলের নড়বড়ে অবস্থা ও জটিল পরিস্থিতি স্পষ্ট হয়ে উঠছে। সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, শুধু দামেস্কের সঙ্গে আলোচনা ভেঙে পড়াই নয় বরং অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এবং দীর্ঘদিনের বিতর্কিত বিষয়গুলোও এই অবৈধ শাসনব্যবস্থার পররাষ্ট্রনীতি ও নিরাপত্তা কাঠামোর ওপর ছায়া ফেলেছে। আজকের প্রতিবেদনে কয়েক দিনের ইসরায়েল-সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলী সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো।

তেল আবিবদামেস্ক আলোচনায় পূর্ণ অচলাবস্থা

ইসরায়েলি চ্যানেল ১২ জানিয়েছে, ইসরায়েলি কর্মকর্তারা সিরিয়ার থেকে দখলে নেওয়া অঞ্চল—বিশেষ করে বাফার জোন এবং কৌশলগত “জাবাল আল-শেইখ” পাহাড়—থেকে পিছু হটার বিষয়টিকে “অযৌক্তিক” বলে মনে করছেন। চ্যানেলটি আরও জানায়, দামেস্কের সঙ্গে কোনো নিরাপত্তা চুক্তির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কোনো চাপ নেই।

গণমাধ্যমগুলো আরও বলছে, গোলান মালভূমি থেকে ইসরায়েলি সেনা দ্রুত প্রত্যাহারের ব্যাপারে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ব্যাপক আপত্তির কারণেই আলোচনা থেমে গেছে।

এদিকে, নেতানিয়াহু জাবাল আল-শেইখে ইসরায়েলি সেনাঘাঁটিতে অবৈধভাব সফরে গিয়ে সংবাদ সম্মেলনে দক্ষিণ সিরিয়ায় “কৌশলগত অবস্থান ধরে রাখার” ওপর জোর দিয়েছে।

তেল আবিবের উসকানিমূলক মন্তব্যে জর্ডানের কঠোর প্রতিক্রিয়া

ইসরায়েলি জ্বালানিমন্ত্রী ইলি কোহেন চ্যানেল ফোরটিন-কে দেওয়া সাক্ষাতকারে দাবি করেছেন, “ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের প্রয়োজন নেই, কারণ অধিকাংশ ফিলিস্তিনি জর্ডানে আছেন।”

এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় জর্ডান। জর্ডানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই মন্তব্যকে “উসকানিমূলক এবং ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের পরিপন্থী” বলে অভিহিত করেছে এবং ইসরায়েলি সরকারকে “আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিচ্ছিন্ন একটি শাসনব্যবস্থা” বলে ঘোষণা করেছে। মন্ত্রণালয় জানায়, তেল আবিবের ক্রমবর্ধমান উগ্রনীতি নতুন সংকট সৃষ্টি করছে এবং আন্তর্জাতিক আইন বারবার লঙ্ঘন করছে।

নেতানিয়াহু আমেরিকা সফর বাতিল করছেন না

নিউ ইয়র্কের মেয়রের সাম্প্রতিক বক্তব্যের পরও দখলদার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, তার যুক্তরাষ্ট্র সফর পূর্বনির্ধারিত পরিকল্পনা অনুযায়ীই অনুষ্ঠিত হবে। গণমাধ্যম জানিয়েছে, এই সফরের উদ্দেশ্য হলো ওয়াশিংটনের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক জোরদার করা, শীর্ষ মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করা এবং আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়ে ইসরায়েলের অবস্থান তুলে ধরা।

এপস্টেইন কেলেঙ্কারি আবারও সামনে এলো; মোসাদের ছায়া

নেতানিয়াহু আমেরিকান সাময়িকী জ্যাকোবিন-এর একটি প্রবন্ধ এক্স প্ল্যাটফর্মে শেয়ার করেছেন, যেখানে বলা হয়েছে কুখ্যাত মার্কিন ধনকুবের জেফ্রি এপস্টেইন ইহুদ বারাকের সরকারের সময় মোসাদের সঙ্গে কাজ করতেন।

এই পদক্ষেপটি ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেয়, কারণ ওই প্রবন্ধে এপস্টেইন–মোসাদ সংযোগের নতুন প্রমাণ তো আছেই, পাশাপাশি নেতানিয়াহুর সরকারকে “উগ্র এবং দুর্নীতিতে নিমজ্জিত” হিসেবেও বর্ণনা করা হয়েছে।

টাইমস অব ইসরায়েল লিখেছে, নেতানিয়াহু প্রবন্ধটি শেয়ার করার সময় আদৌ জানতেন কি না যে, এর ভেতরে তার নিজের শাসনব্যবস্থাকে “চরম উগ্র ও দুর্নীতিতে ডুবে থাকা” বলে উল্লেখ করা হয়েছে—বিষয়টি এখনও পরিষ্কার নয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, নেতানিয়াহুর উদ্দেশ্য ছিল রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী ইহুদ বারাককে চাপে ফেলা, কারণ এপস্টেইনের ফাঁস হওয়া বার্তায় বারাকের নাম উঠে এসেছে।#

পার্সটুডে/এসএ/২২

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন