লেবাননের স্বাধীনতা দিবস: দেশে ফিরেছেন হারিরি; শত্রুরা থামবে কি?
লেবাননে আজ স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করা হচ্ছে। দিবসটি উপলক্ষে দেওয়া এক ভাষণে লেবাননের প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন বলেছেন, লেবাননের জন্য এখনও সবচেয়ে বড় হুমকি হচ্ছে ইহুদিবাদী ইসরাইল। তিনি আরও বলেছেন, ইহুদিবাদী ইসরাইলের হুমকি সত্ত্বেও সরকার দেশে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার চেষ্টা চালাচ্ছে এবং এরইমধ্যে দেশকে তাকফিরি সন্ত্রাসবাদ ও আগ্রাসন থেকে মুক্তি দিয়েছে।
দীর্ঘ সংগ্রামের পর লেবানন ১৯৪৩ সালে স্বাধীনতা লাভ করে। ১৯৪০'র দশকে ফরাসিরা লেবানন ছেড়ে চলে গেলেও এখনও দেশটিকে নিয়ে ষড়যন্ত্রের ইতি ঘটে নি। অতীতের মতো এবারও স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে নানা আয়োজন থাকলেও মানুষের মনে নানা আশঙ্কা কাজ করছে। কারণ দেশটিকে ঘিরে মারাত্মক ষড়যন্ত্রের জাল বোনা হচ্ছে। সৌদি আরব দেশটিতে প্রকাশ্যে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ করছে। সৌদি হস্তক্ষেপের কারণে লেবাননের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে অনেকেই আশঙ্কা করছেন।
অবশ্য লেবাননের কয়েকটি দল ও সংগঠন কয়েকটি দেশের হস্তক্ষেপমূলক তৎপরতায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে উসকানি দিচ্ছে যা ওই দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের সঙ্গে একধরনের বিশ্বাসঘাতকতা। লেবাননের প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরিকে পদত্যাগে বাধ্য করে সৌদি সরকার গোটা লেবাননের রাজনৈতিক অঙ্গনকে অস্থিতিশীল করে তুলেছে।

অবশ্য স্বাধীনতা দিবসে সাদ হারিরি দেশে ফিরে আসায় দেশে ঐক্য বজায় রাখার আশা আবারও জোরালো হয়েছে। তবে গত কিছু দিনের তৎপরতা থেকে এটা স্পষ্ট যে, সৌদি সরকারের হস্তক্ষেপকামী তৎপরতা অব্যাহত থাকবে এবং সাদ হারিরি এখনও সৌদি আরবের চাপের মুখে রয়েছে।
সাদ হারিরির দুই সন্তান এখনও সৌদি আরবে অবস্থান করছে। এ কারণে লেবাননে অবস্থান করার পরও তার ওপর সৌদি আরবের এক ধরনের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। সৌদি শাসক গোষ্ঠী সাদ হারিরির দুই সন্তানকে নিজেদের কাছে রেখে দিয়ে তাকে দূর থেকেও নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে বলে অনেকের আশঙ্কা।
যাইহোক লেবাননের শত্রুদের এখন একটি বড় লক্ষ্য হলো, সেদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে শূন্যতা দীর্ঘস্থায়ী করা। এর মাধ্যমে তারা লেবাননে নতুনকরে অশান্তি ও বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে দিতে চায়। তবে লেবাননের সাধারণ মানুষ শান্তির পক্ষে। তারা স্বাধীনতা দিবসে নতুনকরে ঐক্য ও সংহতির শপথ নিয়ে সব ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করতে সক্ষম হবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা আশা করছেন। কারণ সবচেয়ে বড় শত্রু ইসরাইলের মোকাবিলায় টিকে থাকতে হলে জাতীয় ঐক্য ও প্রতিরোধ শক্তি জোরদার করার কোনো বিকল্প নেই।#
পার্সটুডে/সোহেল আহম্মেদ/২২