শান্তি চুক্তি নাকি কঙ্গোর সম্পদ চুরি? আফ্রিকায় নতুন মার্কিন কৌশল
https://parstoday.ir/bn/news/world-i150828
পার্স টুডে - একজন ভারতীয় বিশ্লেষক প্রকাশ করেছেন যে ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গো এবং রুয়ান্ডার মধ্যে "শান্তি" চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য আমেরিকার মধ্যস্থতার লক্ষ্য হল ওয়াশিংটন কর্তৃক কঙ্গোর খনিজ সম্পদ চুরি করা।
(last modified 2025-08-02T11:14:37+00:00 )
জুলাই ৩১, ২০২৫ ১৮:০২ Asia/Dhaka
  • শান্তি চুক্তি নাকি কঙ্গোর সম্পদ চুরি? আফ্রিকায় নতুন মার্কিন কৌশল
    শান্তি চুক্তি নাকি কঙ্গোর সম্পদ চুরি? আফ্রিকায় নতুন মার্কিন কৌশল

পার্স টুডে - একজন ভারতীয় বিশ্লেষক প্রকাশ করেছেন যে ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গো এবং রুয়ান্ডার মধ্যে "শান্তি" চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য আমেরিকার মধ্যস্থতার লক্ষ্য হল ওয়াশিংটন কর্তৃক কঙ্গোর খনিজ সম্পদ চুরি করা।

আমেরিকার কৌশলগত বাজার অনুসন্ধানের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে আফ্রিকা। একসময় মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিতে অবহেলিত এই মহাদেশটি এখন গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদের অর্জনের ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতার অন্যতম মূল লক্ষ্য। 

পার্স টুডে-র এ সংক্রান্ত রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত ২৭শে জুন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রুয়ান্ডা ও গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের মধ্যে শান্তির মধ্যস্থতাকারী হয়ে ওঠে। এটি এমন এক পদক্ষেপ যার মাধ্যমে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার নাম ভাঙ্গিয়ে কঙ্গোর কোবাল্ট ও তামার খনিগুলোতে প্রবেশাধিকার পাবে মার্কিন সরকার।

এই প্রসঙ্গে, 'নিউ আরব'-এর জন্য আঞ্চলিক ও আফ্রিকা বিষয়ক বিশ্লেষক নন্দিতা লাল দাবি করেন যে রুয়ান্ডা এবং কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের মধ্যে আমেরিকার মধ্যস্থতায় যে 'শান্তি' চুক্তি হয়েছে তা মোটেও শান্তি সম্পর্কিত নয়, বরং তা কঙ্গোর খনিজ সম্পদ খাতে ওয়াশিংটনের কর্পোরেট চুরি।

তিনি বিশ্বাস করেন যে আমেরিকার প্রতিটি সবুজ প্রতিশ্রুতির পিছনে একটি পরিচিত ধরণ রয়েছে: আহরণ, শোষণ ও নিশ্চিহ্ন করা। তার ওই বিশ্লেষণে বলা হয়েছে: গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র বিশ্বের প্রায় ৭০% কোবাল্ট এবং বিশ্বের তামা ও কোল্টানের এক বড় অংশ উৎপাদন করে যা বৈদ্যুতিক গাড়ি থেকে শুরু করে উন্নত অস্ত্র ব্যবস্থা পর্যন্ত সবকিছুর জন্য জরুরি।

নন্দিতার মতে আফ্রিকায় উপনিবেশবাদী শোষণের ধারা এখনও চলছে। কেবল পুরনো খেলোয়াড়দের জায়গায় এসেছে নতুন খেলোয়াড় বা কোম্পানি। যেমন, গ্লেনকোর, টেসলা এবং পেন্টাগন। একটি কৌশলগত ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক মার্কিন গবেষণা সংস্থা সি এস আই এস-এর সুপারিশপ্রাপ্ত বহুজাতিক কোম্পানি গ্লেনকোর কাজ করছে কঙ্গোর খনিজ, জ্বালানী ও বাণিজ্য ক্ষেত্রে। এই কোম্পানি দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে বার বার অভিযুক্ত হয়েছে। 

লাল আরও বলেছেন, ফিলিস্তিনে মানবাধিকার পরিস্থিতি বিষয়ে জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক ফ্রান্সেসকা আলবানজের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে আমরা আরও দেখতে পাই যে ইহুদিবাদী ইসরায়েলের বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কয়লার অন্যতম প্রধান সরবরাহকারী হিসেবে গ্লেনকোরের নাম উল্লেখ করা হয়েছে যার অর্থ মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের মাধ্যমে শোষণ।

কঙ্গোর খনিজ সম্পদ মার্কিন সাঁজোয়া যানের মোটরের জ্বালানী 

আঞ্চলিক ও আফ্রিকা বিষয়ক বিশ্লেষক নন্দিতা লাল জোর দিয়ে বলেছেন: "যদিও পশ্চিমা যুদ্ধ-ব্যবসায়ীরা ফিলিস্তিনি, ইয়েমেনি, সোমালি, ইরাকি এবং সিরিয়দের ওপর বোমাবর্ষণ করছে কিন্তু পেন্টাগন তাদের রেকর্ড ভাঙা চুক্তি দিয়ে পুরস্কার দিচ্ছে।  বিশ্বের দক্ষিণাঞ্চল মারা যাচ্ছে যাতে ওয়াল স্ট্রিট বেঁচে থাকতে পারে।"

তাঁর মতে কঙ্গোর খনিগুলির উপর নিয়ন্ত্রণ আমেরিকার জন্য কোনও পছন্দ করা বা নির্বাচনের বিষয় নয়, বরং তার বেঁচে থাকার জন্যই জরুরি একটি শর্ত এবং প্রতিটি ড্রোন, প্রতিটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অস্ত্র, প্রতিটি প্রযুক্তিগত সরবরাহ শৃঙ্খল বিশ্বব্যাপী দক্ষিণ থেকে সম্পদ নিয়েই কাজ করে।

নন্দিতা লাল রুয়ান্ডা এবং কঙ্গোর মধ্যে সাম্প্রতিক শান্তি চুক্তির কথা উল্লেখ করে শেষ করেছেন এভাবে: এই "শান্তি চুক্তি" কেবল সাম্রাজ্যবাদী লুণ্ঠনকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে  নতুন মোড়ক বা প্যাকেজিংয়ের আড়ালে এবং "আনুষ্ঠানিক খনিজ মূল্য শৃঙ্খলের" আড়ালে পশ্চিমা কোম্পানিগুলির মাধ্যমে সম্পদ আহরণকে বৈধতা দেয়।#

পার্স টুডে/এমএএইচ/৩১

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।