ইসরায়েল কেন পাকিস্তানের বেলুচ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সশস্ত্র করছে?
-
বেলুচিস্তানকে অস্ত্র দিয়ে অস্থির করতে চায় ইসরায়েল
পাসটুডে: ইহুদিবাদী ইসরায়েল পাকিস্তানের বেলুচ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অস্ত্র সহায়তা দিচ্ছে বলে বিশ্লেষণধর্মী ওয়েবসাইট দ্য ক্র্যাডল (Cradle)-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ইরান ও পাকিস্তান ইতোমধ্যেই ৯০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্তের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তথ্য বিনিময় প্রোটোকল ও সন্ত্রাসবিরোধী যৌথ কাঠামো গড়ে তুলেছে। এটি একটি দুর্গম অঞ্চল যা বিদ্রোহী, চোরাচালানকারী এবং মাদকচক্রের আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু সম্প্রতি নাশকতা বেড়ে যাওয়া এবং সরাসরি ইসরায়েলের সহায়তা পাওয়ায় সীমান্ত অঞ্চল নতুন এক ভূ-রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার ময়দানে পরিণত হয়েছে।
সম্প্রতি ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান ইসলামাবাদ সফরে গিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে যৌথভাবে সীমান্ত বিদ্রোহ দমনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এটি দুই দেশের পররাষ্ট্রনীতিতে একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গির ইঙ্গিত বহন করে।
ইরনা'র বরাত দিয়ে পার্সটুডে জানিয়েছে, পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ-এর উপস্থিতি এবং স্থানীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে তার যোগাযোগ দুই দেশের নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগকে বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। এর ফলে তেহরান ও ইসলামাবাদ ক্রমশই পরস্পরের সঙ্গে গভীর গোয়েন্দা সহযোগিতায় বাধ্য হচ্ছে। এখন বেলুচিস্তান আর শুধুই একটি স্থানীয় বিদ্রোহ নয়, বরং প্রক্সি যুদ্ধের ময়দান, যা গোটা অঞ্চলের স্থিতিশীলতাকে প্রভাবিত করছে।
এই প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইরান ও পাকিস্তানের সীমান্তে তৎপরতা বৃদ্ধি এবং ইসরাইলের বেলুচ সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থনের সাথে সাথে, তেহরান ও ইসলামাবাদ বিদেশি-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদ মোকাবেলায় তাদের নিরাপত্তা সমন্বয় জোরদার করেছে।
এ প্রসঙ্গে, পাকিস্তানের ট্রাইবাল এরিয়া রিসার্চ সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক মনসুর খান মেহসুদ বলেন: "তেহরান ও ইসলামাবাদ অবশেষে একমত হয়েছে যে, বেলুচিস্তানের অস্থিরতা কেবল স্থানীয় বিদ্রোহ নয়, বরং এক জটিল ভূ-রাজনৈতিক খেলায় রূপ নিয়েছে। একাধিক আঞ্চলিক শক্তি বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে কৌশলগত উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে চাইছে।"
তার মতে, বেলুচ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অস্ত্র সহায়তায় ইসরায়েলের এই প্রচারণা অঞ্চলটির সংকটে নতুন এক বিপজ্জনক মাত্রা যোগ করেছে।
এরই মধ্যে ওয়াশিংটনভিত্তিক ইসরাইল-সমর্থক থিংক ট্যাংক 'মিডল ইস্ট মিডিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউট (MEMRI) চলতি বছরের ১২ জুন ‘বেলুচিস্তান স্টাডিজ প্রজেক্ট’ চালু করেছে। ইরান ও পাকিস্তান এটিকে ইসরায়েল এবং আরও কিছু দেশের সমন্বিত ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে দেখছে, যার উদ্দেশ্য পুরো অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করা।
এ প্রসঙ্গে ইসলামাবাদের পাকিস্তান কনফ্লিক্ট অ্যান্ড সিকিউরিটি ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ খান বলেছেন, "অঞ্চলের কিছু দেশ বেলুচ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছে এবং তাদের ইসরায়েলের সঙ্গে সংযোগ ঘটানোর সেতুবন্ধনে পরিণত হয়েছে।"
আবদুল্লাহ খানের মতে, বেলুচিস্তানে ইসরায়েলি গোয়েন্দা কার্যক্রমের উপস্থিতি প্রমাণ করে যে, অঞ্চলটি কতটা বৈরী প্রক্সি কর্মকাণ্ডের ময়দানে পরিণত হয়েছে।#
পার্সটুডে/এমএআর/২০