'ইসরাইল থেকে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি সরানোর ষড়যন্ত্র বানচাল করেছে ইরান' (ভিডিও)
https://parstoday.ir/bn/news/world-i54710-'ইসরাইল_থেকে_বিশ্ববাসীর_দৃষ্টি_সরানোর_ষড়যন্ত্র_বানচাল_করেছে_ইরান'_(ভিডিও)
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা সাইয়্যেদ আলী খামেনেয়ী বলেছেন, ইহুদিবাদী ইসরাইলের দিক থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নেয়ার মার্কিন ষড়যন্ত্র বানচাল করতে সক্ষম হয়েছে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান।
(last modified 2025-07-29T12:16:04+00:00 )
মার্চ ২২, ২০১৮ ০১:৩৫ Asia/Dhaka

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা সাইয়্যেদ আলী খামেনেয়ী বলেছেন, ইহুদিবাদী ইসরাইলের দিক থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নেয়ার মার্কিন ষড়যন্ত্র বানচাল করতে সক্ষম হয়েছে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান।

তিনি বলেছেন, দায়েশ বা আইএসআইএল (আইএস)-এর মত সন্ত্রাসী নানা গোষ্ঠী গড়ে তুলে সন্ত্রাসবাদ ছড়িয়ে দিয়ে ও মধ্যপ্রাচ্যে বিভেদ সৃষ্টির মাধ্যমে দখলদার ইসরাইলের দিক থেকে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি সরিয়ে নেয়ার ষড়যন্ত্র করেছিল মার্কিন সরকার। কিন্তু বিগত ফার্সি বছরে (১৩৯৬ সাল তথা ২০১৭ সালের মার্চের শেষ দিক থেকে ২০১৮ সালের ২০ মার্চ) তাকফিরি-ওয়াহাবি সন্ত্রাসীদের কোমর ভাঙ্গার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে ইসলামী ইরান ওই ষড়যন্ত্র বানচাল করে দিয়েছে। 

মধ্যপ্রাচ্যকে অনেকাংশে সন্ত্রাসমুক্ত করতে সক্ষম হওয়ায় বিশ্বে ইসলামী ইরানের পরাক্রম ও মর্যাদা বেড়েছে বলে তিনি স্মরণ করিয়ে দেন।

ফার্সি নববর্ষ ১৩৯৭’র প্রথম দিনে ইরানের মাশহাদ শহরে বিশ্বনবী (সা)’র পবিত্র আহলে বাইতের সদস্য হযরত ইমাম রেজা (আ)’র পবিত্র মাজারে এক বিশাল জনসমাবেশে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, মার্কিন সরকার মধ্যপ্রাচ্যে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায় না অথবা তা করতে সক্ষম নয়।

মার্কিন সরকারসহ পশ্চিমা সরকারগুলো প্রায় দেড় দশক ধরে আফগানিস্তানে সেনা মোতায়েন রেখেও দেশটিতে নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি, বরং তারা সেখানকার নিরাপত্তা অতীতের চেয়েও দুর্বল করেছে বলে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা মন্তব্য করেন।

তিনি আরও বলেন, মার্কিন সরকার দাবি করে যে দায়েশ দমনে তারা ভূমিকা রাখছে। কিন্তু এ দাবি পুরোপুরি মিথ্যা। কারণ, মার্কিন নীতি হল দায়েশ বা এ জাতীয় গোষ্ঠীগুলোকে টিকিয়ে রাখা এবং তাদেরকে সব সময় অনুগত দাসের মত ব্যবহার করা।

মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায় ইরানের সাম্প্রতিক ধারার নানা সাফল্য অব্যাহত থাকবে এবং এ অঞ্চলে ইরানের সব লক্ষ্যই পূরণ হবে, অন্যদিকে মার্কিন লক্ষ্যগুলোর একটিও বাস্তবায়িত হবে না বলে আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী ভবিষ্যদ্বাণী করেন।  

মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের নানা অঞ্চলে ইসলামী ইরানের  সক্রিয় উপস্থিতিতে মার্কিন নেতৃত্বাধীন সাম্রাজ্যবাদী পশ্চিমা শক্তিগুলোর গাত্রদাহের কথা তুলে ধরে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেছেন, ইরান নানা দেশের নিরাপত্তা আর মানবিক সহায়তায় ভূমিকা রাখছে সেখানকার জনগণ ও সরকারের সাহায্যের আবেদনে সাড়া দিয়ে এবং এসব দেশে ইরানের  এই ভূমিকা খুবই যৌক্তিক ও হস্তক্ষেপকামীতা, বলদর্পিতা আর আবেগ-প্রবণতা থেকে পুরোপুরি মুক্ত। আঞ্চলিক ও প্রতিবেশী দেশগুলোর বিষয়ে ইরানের সম্পর্ক ও ভূমিকার ব্যাপারে দূরবর্তী অঞ্চলের হস্তক্ষেপকামী পশ্চিমা শক্তিগুলোর নাক গলানোর প্রতিবাদ জানিয়ে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় ও রাজনৈতিক নেতা বলেন, এ বিষয়ের সঙ্গে তোমাদের কোনো সম্পর্কই নেই।

তিনি ইসলামী ইরানের নানা সাফল্য ও সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে বলেন, এমন কোনো সমস্যা নেই যা ইরানের বিপ্লবী যুব সমাজ বাইরের সহায়তা ছাড়াই সমাধান করতে সক্ষম নয়। তিনি এ প্রসঙ্গে প্রতিভাবান ইরানি যুব সমাজকে আরও ভালোভাবে ও সর্বোচ্চ মাত্রায় কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

ইসলামী বিপ্লবের সুবাদে ইরান বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে স্বাধীন দেশ বলে আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী মন্তব্য করেন। ইসলামী বিপ্লবের আগে বিদেশী শক্তিগুলোই ইরানে পছন্দের ব্যক্তিদেরকে ক্ষমতায় বসাত বলে তিনি স্মরণ করিয়ে দেন।

ইরানে ইসলামী নীতিমালার আলোকে প্রণীত সংবিধানের আলোকে ভিন্নমতের স্বাধীনতা ও বাক-স্বাধীনতাও রয়েছে বলে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা উল্লেখ করেন।

তিনি ইরানের বিচার বিভাগের নানা সাফল্য তুলে ধরে দেখান যে ইসলামী বিপ্লবের আগের তুলনায় ইরানে শ্রেণী-বৈষম্য ও দারিদ্র বিপুল মাত্রায় কমে গেছে। তবে দুর্নীতি দূর করা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য আরও অনেক কাজ করা উচিত বলে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য-সেবার ক্ষেত্রে ইসলামী ইরান অন্য অনেক দেশের চেয়ে অনেক বেশি ভালো অবস্থায় রয়েছে।

ইরানের শত্রুরা নানা প্রচারণার মাধ্যমে ইরানিদেরকে হতাশ করার চেষ্টা করছে, কিন্তু ইসলামী এই দেশটির জাতীয় উৎপাদনের রেকর্ড সন্তোষজনক বলে সর্বোচ্চ নেতা মন্তব্য করেন।

ইরানের বিপুল পরিমাণ তেল ও গ্যাস সম্পদ থাকা সত্ত্বেও দেশটির অর্থনীতিকে তেল-নির্ভরতা থেকে মুক্ত করার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, তেল যেন আমাদের নিয়ন্ত্রণ না করে, বরং আমরাই তেলকে নিয়ন্ত্রণ করব।

ইরানের দেশীয় পণ্য ব্যবহার ও জাতীয় উৎপাদন বৃদ্ধির বিষয়ে সর্বস্তরের জনগণের মধ্যে প্রবল অনুরাগ থাকা উচিত বলে আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী জোর দেন। ইরানি পণ্য রপ্তানি জোরদারে কূটনীতিবিদদের ভূমিকা রাখতে হবে বলে তিনি জোর দিয়ে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, জরুরি নয় এমন কোনো পণ্য যাতে আমদানি করা না হয়।    #  

পার্সটুডে/এমএএইচ/২২