মুরাদের আপত্তিকর অডিও-ভিডিও সরাতে বিটিআরসিকে হাইকোর্টের নির্দেশ
-
ডা. মুরাদ হাসান
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের অশ্লীল বক্তব্যসম্বলিত অডিও-ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরিয়ে নিতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) মৌখিক নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। একইসঙ্গে সব ভার্চুয়াল প্লাটফর্ম থেকে অডিও-ভিডিও সরাতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা আগামীকালের মধ্যে আদালতকে জানাতে বলা হয়েছে।
আজ (মঙ্গলবার) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার। আর মুরাদ হাসানের অশ্লীল অডিও-ভিডিও অপসারণ করতে আদালতের দ্বারস্থ হন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
ব্যারিস্টার সুমন আদালতে বলেন, “জরুরিভিত্তিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর অশ্লীল অডিও-ভিডিওগুলো অপসারণ করা প্রয়োজন। অপসারণ না করলে অল্প বয়সের ছেলেমেয়েরা এই ধরনের গালাগালি এবং অশ্লীল কথা বার্তা শুনে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়বে। তাই প্রতিমন্ত্রীর অশ্লীল অডিও-ভিডিও দ্রুত সরাতে বিটিআরসির প্রতি নির্দেশনা প্রার্থনা করছি।”
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার কন্যা জায়মা রহমানকে নিয়ে আপত্তিকর বক্তব্যসম্বলিত ডা. মুরাদ হাসানের একটি ভিডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এরপর চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে ফোনালাপের একটি অডিওতে মুরাদ হাসানকে অশ্লীল কথাবার্তা ও নায়িকাকে ধর্ষণের হুমকি দিতে শোনা যায়। এ ঘটনায় দেশব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এতে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সরকার। বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলতে না পারলেও সারা দেশে দলের নেতাকর্মীরা তার ওপর বিরক্ত এবং ক্ষুব্ধ। এ ঘটনায় বিএনপিসহ বিভিন্ন নারী সংগঠনও তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। তারা ডা. মুরাদের পদত্যাগ দাবি করেন।
এরপর সোমবারই মুরাদকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেল পর ফেসবুক লাইভে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, শুধু মন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করলেই হবে না, এমপি পদে থাকারও ন্যূনতম যোগ্যতা তার নেই।
ব্যারিস্টার সুমন বলেন, তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান টানা কয়েকদিন ধরে নারীদের নিয়ে অশ্লীল কথা বলে যাচ্ছিলেন। উনার ভাইরাল হওয়া ভিডিওর একটি সত্য হলেও কোনো পদেই থাকার অধিকার তার নেই। খবর পেলাম একটু আগে তথ্য প্রতিমন্ত্রীকে প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই, এ সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য। এর মাধ্যমে প্রমাণ হল পাপ বাপকেও ছাড়ে না।
পেশায় চিকিৎসক জামালপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য ডা. মুরাদ হাসান আওয়ামী লীগপন্থি চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) ও একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর গঠিত সরকারে প্রথমে মুরাদ হাসানকে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরে ২০১৯ সালের মে মাসে স্বাস্থ্য থেকে তাকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/৭
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।