শিগগিরই খুলছে বাংলাদেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, প্রস্তুতির নির্দেশ
স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে চলতি বছর অন্তত ৪০ দিন ক্লাস নেয়ার পরিকল্পনা করে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলার নির্দেশনা জারি করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে, প্রস্তুতি নেয়ার পরও ক্লাস নেয়া সম্ভব না হলে প্রাথমিকের সব শ্রেণিতে অটোপাস বা শিক্ষার্থীদের সরাসরি উত্তীর্ণ করার লক্ষ্য রয়েছে বলে জানিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, কভিড-১৯ পরিস্থিতিতে জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিদ্যালয় পুনরায় চালুর নির্দেশিকা প্রণয়ন করা হয়েছে। বিদ্যালয় পুনরায় চালুর আগে অনুমোদিত নির্দেশিকার আলোকে প্রস্তুতি গ্রহণ করা প্রয়োজন। এ অবস্থায় কভিড-১৯ পরিস্থিতিতে জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিদ্যালয় পুনরায় চালুর নির্দেশিকা স্কুল পর্যায়ে প্রেরণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়েছে।
প্রতিবছর নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয়ে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি ফলাফল ঘোষণা করা হয়। কিন্তু করোনার থাবায় এবছর শিক্ষাক্ষেত্রে সব পরিকল্পনা বদলে গেছে। গত মার্চ থেকে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করার পর এখনো খোলার সিদ্ধান্ত নেয়া যায়নি। এরইমধ্যে পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষা আনুষ্ঠানিকভাবে বাতিল করা হয়েছে।
এ অবস্থায় পরিস্থিতি ভালো হলে অক্টোবর কিংবা নভেম্বরে প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহে ক্লাস নেয়া ও ডিসেম্বরে পরীক্ষা নেয়ার পরিকল্পনা করে গত বৃহস্পতিবার নীতিমালা চূড়ান্ত করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে ক্লাস ও পরীক্ষা নেয়ার প্রস্তুতিও নিতে স্কুলগুলোকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ আকরাম-আল-হোসেন বলেন, প্রত্যেকটা স্কুল একটা রি-ওপেনিং প্লান তৈরি করবে। মাস্ক অবশ্যই বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যদি কোনো স্কুলে শিক্ষার্থীর সংখ্যার বেশি হয়; তাহলে অলটারনেটিভ করে আনার ব্যবস্থা করতে হবে। তবে, চলতি বছর ক্লাস পরীক্ষা নেয়া সম্ভব না হলে সব শ্রেণিতে অটো পাসের সিদ্ধান্ত বিবেচনা করা হবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হয়; স্কুলগুলো খোলা সম্ভব হবে না। সেক্ষেত্রে পরীক্ষা মূল্যায়ন করা সম্ভব হবে না। অটোপাস দিতে হবে, কোনো শিক্ষার্থীকে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে না। এদিকে, জেএসসি পরীক্ষার পরিবর্তে স্ব স্ব স্কুলে মূল্যায়নের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের নবম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করার নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে স্কুলগুলোতে। আর অন্যান্য শ্রেণির ক্লাস ও পরীক্ষার বিষয়ে শিগগিরই আন্তঃবোর্ড সিদ্ধান্ত নেবে।মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুহাম্মদ জিয়াউল হক বলেন, ক্লাস পরীক্ষার ব্যাপারে চার-পাঁচদিন পরে আন্তঃশিক্ষা বোর্ডে সিদ্ধান্ত নেয়ার পর জানানো হয়। আর অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের স্কুলে মূল্যায়ন করে পরবর্তী শ্রেণিতে উন্নীত করা হবে। তাছাড়া, এইচএইচসি পরীক্ষার ব্যাপারেও শিগগিরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানোর আভাসও দিয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়।
একই সঙ্গে প্রস্তুতি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে মন্ত্রণালয়ের সব পদক্ষেপ পোস্টার, লিফলেট তৈরি করে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করতে বলা হয়েছে। এর একটি খসড়াসহ উপস্থাপন করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা নিশ্চিতে বিদ্যালয় খোলার আগে স্বাস্থ্য নিরাপত্তামূলক এমন ৫০টির বেশি নির্দেশনা জারি করবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এসব নির্দেশনা মেনে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালিত হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।#
পার্সটুডে/আব্দুর রহমান খান/বাবুল আখতার/৭
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।