এনআইডি ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে হস্তান্তরের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
(last modified Wed, 02 Jun 2021 13:03:14 GMT )
জুন ০২, ২০২১ ১৯:০৩ Asia/Dhaka
  • এনআইডি ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে হস্তান্তরের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

বাংলাদেশি নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইতোমধ্যে এ ব্যাপারে কাজ শুরু হয়ে গেছে।

আজ (বুধবার) আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।

তিনি বলেন, ‘কোনও নাগরিক জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য কিংবা সংশোধনের আবেদন করলে তাকে এক মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানাতে হবে। দেওয়া সম্ভব না হলে, কেন দেওয়া যাবে না, সেই বিষয়টিও লিখিতভাবে সংশ্লিষ্ট নাগরিককে জানাতে হবে। আমরা একটি জবাবদিহি সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই।’

মন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব ভোটার তালিকা তৈরি করা। জাতীয় পরিচয়পত্র করার মতো সক্ষমতাও তাদের নেই। পৃথিবীর কোনও দেশে এমন নিয়মও নেই।’

তবে  সরকারের এ সিধান্ত  প্রসঙ্গে  নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার আজ তার লিখিত বক্তব্যে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, “জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগ অন্যত্র স্থানান্তর সামগ্রিক নির্বাচনি ব্যবস্থাপনার অন্তিমযাত্রার আয়োজন। জনবলসহ জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) অনুবিভাগ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্থানান্তরের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনা হচ্ছে নির্বাচন কমিশনের কফিনে সর্বশেষ পেরেক।

আজ নির্বাচন ভবনের নিজ কার্যালয়ে ‘জাতীয় পরিচয়পত্র স্থানান্তর সম্পর্কে আমার বক্তব্য’ শীর্ষক লিখিত বক্তব্যে তিনি বিষয়টিকে সংবিধান পরিপন্থী উল্লেখ করে বলেন, ‘বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ এতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। আমি তাদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করছি।’

তিনি বলেন, ‘‘মন্ত্রিপরিষদের যুগ্ম সচিব স্বাক্ষরিত ২৪ মে ২০২১ তারিখের পত্রে এনআইডি হস্তান্তরের প্রক্রিয়ায় নির্বাচন কমিশন’-এর বদলে ‘সরকার’ শব্দটি প্রতিস্থাপনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অপরদিকে এনআইডির বিদ্যমান অবকাঠামো ও জনবল সুরক্ষা সেবা বিভাগে হস্তান্তর করার ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে এ ধরনের নির্দেশ প্রদান কতটা যৌক্তিক, তা বিবেচ্য।

তিনি উল্লেখ করেন, ভোটার তালিকা ও জাতীয় পরিচয়পত্র অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। এর ফলে নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও জাতীয় পরিচয়পত্রের ডাটাবেজনির্ভর ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণে জটিলতা সৃষ্টি হবে। এছাড়া এতে নির্বাচন ব্যবস্থা ও কাঙ্ক্ষিত গণতন্ত্র ভূলুষ্ঠিত হবে। এটি করা হলে সংবিধানের ১১৯ ধারা অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালন সম্ভব হবে না বলে মনে করি। নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে এনআইডি স্থানান্তরের নির্দেশ কমিশনের অঙ্গচ্ছেদের নামান্তর।

বিষয়টি কমিশনকে না জানানো নির্বাচন কমিশনের প্রতি অবজ্ঞা প্রকাশের শামিল বলে অভিযোগ করে এই কমিশনার বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনের ইতিহাসে এযাবৎকালে এমন ঘোরতর দুর্দিন আর আসেনি। সংবিধানের ১০৮(৪) ধারায় বলা হয়েছে, ‘নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে স্বাধীন থাকবেন এবং কেবল এই সংবিধান ও আইনের অধীন হবেন।’ এটি কমিশনের জন্য রক্ষাকবচ হলেও নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা এখন কোথায়? #

পার্সটুডে/আব্দুর রহমান খান/বাবুল আখতার/২

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।