ডোনাল্ড ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতির তীব্র সমালোচনায় এস জয়শংকর
https://parstoday.ir/bn/news/event-i151364-ডোনাল্ড_ট্রাম্পের_পররাষ্ট্রনীতির_তীব্র_সমালোচনায়_এস_জয়শংকর
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের তীব্র সমালোচনা করে বললেন,  শুধু ভারত নয়, গোটা বিশ্ব 'অভূতপূর্ব' মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিতে নাজেহাল। গতকাল রুশ তেল কেনা নিয়ে আমেরিকার সমালোচনাকে উড়িয়ে দিলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী  এস জয়শংকর।
(last modified 2025-08-23T13:19:30+00:00 )
আগস্ট ২৩, ২০২৫ ১৮:০৮ Asia/Dhaka
  • ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকার ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (ফাইল ফটো)
    ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকার ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (ফাইল ফটো)

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের তীব্র সমালোচনা করে বললেন,  শুধু ভারত নয়, গোটা বিশ্ব 'অভূতপূর্ব' মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিতে নাজেহাল। গতকাল রুশ তেল কেনা নিয়ে আমেরিকার সমালোচনাকে উড়িয়ে দিলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী  এস জয়শংকর।

আজ (শনিবার) সরাসরি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে প্রশ্ন তুললেন তিনি। জয়শংকরের ভাষায় বর্তমান মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি ‘অভূতপূর্ব’। তিনি বলেন, 'বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্টের মতো এমন পররাষ্ট্রনীতি অতীতের কোনও মার্কিন প্রেসিডেন্ট নেননি।'

আজ ইকোনমিক টাইমস ওয়ার্ল্ড লিডার্স ফোরাম ২০২৫ অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে ট্রাম্পের ‘শুল্কযুদ্ধ’ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'বিষয়টি কেবল ভারতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; গোটা বিশ্বের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আচরণের ধরণ, এমনকী তার নিজের দেশের প্রতিও এতদিনের কূটনৈতিক ঐতিহ্যের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।'

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সুরে জয়শংকর আরও বলেন, ট্রাম্পের শুল্কযুদ্ধের জবাবে ভারতের নীতি খুব স্পষ্ট। কোনওভাবে ভারতের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হয়, কৃষক-মজুরের স্বার্থে আঘাত লাগে এমন কাজ করা হবে না।

একইসঙ্গে পাক-ভারত যুদ্ধবিরতিতে ট্রাম্পের মধ্যস্থতার দাবির সমালোচনা করেন জয়শংকর। তিনি বলেন,  মধ্যস্থতার (ভারত-পাক সংঘাত) বিষয়ে ১৯৭০ সাল থেকে ভারতের একটি নির্দিষ্ট নীতি রয়েছে। তা হল পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমরা কারও মধ্যস্থতা গ্রহণ করি না। যদিও ট্রাম্প বারবার মধ্যস্থতার দাবি করে চলেছেন।

গতকাল সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জয়শংকর বলেন, 'রুশ তেলের বৃহত্তম ক্রেতা চীন। রাশিয়ার গ্যাসের বৃহত্তম ক্রেতা ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ২০২২ সালের পর থেকে রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য লাফিয়ে বেড়েছে এমনটাও নয়। ঘটনাচক্রে আমরা আমেরিকা থেকেও তেল কিনি, সেই পরিমাণটাও বেড়েছে। তাই মার্কিন মিডিয়া যে যুক্তি দিচ্ছে সেটা খুবই যথার্থ নয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে রুশ তেল কেনার ‘অপরাধে’ ভারতের উপর অতিরিক্ত শুল্ক চাপিয়েছেন, সেই পদক্ষেপকেই যুক্তিহীন বলে অভিহিত করলেন জয়শংকর।

সম্প্রতি ট্রাম্প ভারতের উপরে ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছিলেন। তারপর রুশ তেল আমদানির ‘অপরাধে’ আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপে ভারতের ওপর। এমন পরিস্থিতিতে বুধবার জানা যায়, সেপ্টেম্বর এবং অক্টোবর মাসের জন্য রাশিয়াকে বিপুল পরিমাণ তেলের বরাত দেওয়া হয়েছে। তার কারণ সম্প্রতি ব্যারেলপ্রতি তিন ডলার ছাড় দেওয়া হয়েছে তেলে। হিসাব অনুযায়ী, এই ছাড়ের অঙ্কটা ৫ শতাংশ। তবে এই নিয়ে সরকারিভাবে কোনও পক্ষই কিছু জানায়নি।

তবে এটা পরিষ্কার, রাশিয়ার থেকে তেল কেনা বাড়িয়ে আমেরিকাকেই পালটা বার্তা দিয়েছে দিল্লি।

এমন পরিস্থিতিতে মস্কো সফরে গিয়েছেন জয়শংকর। শুল্কযুদ্ধের আবহে দীর্ঘদিনের ‘বাণিজ্যবন্ধু’ রাশিয়াকে আরও কাছে টানছে ভারত। মস্কোর প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকরের বার্তা, আরও মজবুত বাণিজ্য সম্পর্ক গড়তে হবে আমাদের। রুশ সংস্থাগুলিকে ভারতীয় অংশীদারদের সঙ্গে আরও নিবিড়ভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি। সেই সঙ্গেই তাকে বলতে শোনা যায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্বের সবচেয়ে স্থিতিশীল সম্পর্ক ভারত ও রাশিয়ার। অর্থাৎ ট্রাম্পকে হুমকিকে ‘ডোন্ট কেয়ার’ করেই আপাতত এগোচ্ছে ভারতের পররাষ্ট্রনীতি।#

পার্সটুডে/জিএআর/২৩