ইরাকি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফল প্রকাশ
ইরাকি সংসদে কোন্ জোট কত আসন পাচ্ছে? শীর্ষে গ্র্যান্ড শিয়া জোট
-
ইরাকের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শিয়া আস সুদানির নেতৃত্বাধীন জোট সবচেয়ে বেশি আসন পেয়েছে সংসদ নির্বাচনে
পার্স-টুডে: ইরাকি নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, গ্র্যান্ড শিয়া জোট ১৯৭টি আসন নিয়ে দেশটির সংসদে নেতৃত্ব দিচ্ছে। ইরাকি সংসদ নির্বাচনের প্রাথমিক ফলাফল প্রকাশের সময় এই তথ্য দিল নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে ইরাকের সুন্নি মুসলমানদের নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক দলগুলো পেয়েছে ৬৭টি আসন এবং কুর্দি নেতৃত্বাধীন দলগুলো পেয়েছে ৫৬টি আসন এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভাগে পড়েছে ৯টি আসন।
ইরাকি পার্লামেন্টে শিয়া দলগুলোর আসন তালিকার যে ফলাফল এখন পর্যন্ত ঘোষিত হয়েছে তাতে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মুহাম্মদ শিয়া আল-সুদানির নেতৃত্বাধীন পুনর্গঠন ও উন্নয়ন জোট সংসদের মোট ৩২৯টি আসনের মধ্যে ৪৬টি আসন পাওয়ায় এই নির্বাচনে এটি একটি বিস্ময়কর ঘটনা হয়ে উঠেছে এবং এই জোটই এখন আসন সংখ্যার দিক থেকে ইরাকি সংসদে শীর্ষ স্থানে রয়েছে।
নুরি আল-মালিকির 'দৌলতে কানুনি' তথা "আইনি রাষ্ট্র" জোট ৩০টি আসন পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে এসেছে। এই জয় দেখিয়েছে যে এই জোট ইরাকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক আন্দোলনগুলোর অন্যতম।
শেখ কাইস আল-খাজালির নেতৃত্বে আস-সাদিকুন আন্দোলন এই সময়ের মধ্যে ইরাকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক-জিহাদি গোষ্ঠীগুলোর অন্যতম এবং এটি ২৭টি আসন জিতে একটি বিস্ময় সৃষ্টি করেছে এবং অগ্রগতির ক্রমবর্ধমান ধারা অব্যাহত রাখতে সক্ষম হয়েছে।
ইরাকি কুর্দিস্তান আঞ্চলিক সরকারের প্রধানমন্ত্রী মাসরুর বারজানির (মাসুদ বারজানির পুত্র) নেতৃত্বে কুর্দিস্তান ডেমোক্রেটিক পার্টি অফ ইরাক এবং প্রাক্তন পার্লামেন্ট স্পিকার মুহাম্মদ আল-হালবুসির নেতৃত্বে সুন্নি অ্যাডভান্সমেন্ট পার্টিও ২৭টি করে আসন জিতেছে।
ইরাকের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক-জিহাদি গোষ্ঠী হাদি আল-আমিরির নেতৃত্বে বদর সংগঠনও ১৮টি আসন জিতেছে।
মুথান্না আল-সামরাইয়ের নেতৃত্বাধীন সুন্নি আজম জোট ১৬টি আসন নিয়ে তার প্রতিদ্বন্দ্বী খামিস আল-খানজারের নেতৃত্বাধীন আল-সিয়াদাহ জোটের আসন সংখ্যাকে ছাড়িয়ে গেছে। খামিস আল-খানজারের জোটের ভোট এই নির্বাচনে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় হ্রাস পেয়েছে, এই জোট ৯টি আসন জিতেছে যা তাদের জন্য প্রত্যাশার বিপরীত।
"ইশরাকা কানুন" জোট, যা ইরাকে মহানবীর (সা) বংশধারার পবিত্র ইমামদের মাজারগুলোর কাছাকাছি বা ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত, ২০২১ সালের সংসদ নির্বাচনের পর দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচনী উপস্থিতিতে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত রেখেছে এবং এই সময়ের মধ্যে ৮টি আসন জিততে সক্ষম হয়েছে, যেখানে আগের সময়ে এটি ৬টি সংসদীয় আসন জিতেছিল।
প্রাদেশিক জোট "তাসমীম" (বসরার গভর্নর আসাদ আল-আইদানি) বসরা প্রদেশে শীর্ষে উঠে আসে এবং সাতটি আসন জিতে নেয় এবং সংসদের ডেপুটি স্পিকার মোহসেন আল-মান্দলাভির (যিনি একজন ফিলি কুর্দি তথা শিয়া কুর্দি) নেতৃত্বে "আসাস" জোট এই সময়ের নির্বাচনের তৃতীয় চমক হতে সক্ষম হয়েছে এবং সংসদে সাতটি আসন জিতেছে।
ইসলামী প্রতিরোধ গোষ্ঠী কাতাইব হিজবুল্লাহর ঘনিষ্ঠ 'অধিকার আন্দোলন'ও এই সময়ের চতুর্থ চমক ছিল, আগের সময়ের ২টি আসন থেকে এই সময়ের মধ্যে দলটি তাদের আসন সংখ্যা বাড়িয়ে ৬টিতে উন্নীত করেছে। এইভাবে কম আসন জয়ী ছোট ছোট দলগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করে পার্লামেন্টে গ্র্যান্ড শিয়া জোটের আসন সংখ্যা ১৯৭-এ পৌঁছেছে এবং তারা শীর্ষ স্থান পেয়ে এগিয়ে রয়েছে।
বলা হচ্ছে যে প্রাপ্ত ফলাফলের কারণে ইরাকের জনপ্রিয় স্বেচ্ছাসেবী সশস্ত্র প্রতিরোধ আন্দোলন পপুলার মোবিলাইজেশন ফোর্সেস (পিএমএফ) ভেঙে ফেলা এবং দুর্বল করার আহ্বান থেকে নিরাপদ। অন্যদিকে, ইরাক এখন ইব্রাহিমি চুক্তি বা ট্রাম্পের ঘোষিত আব্রাহাম আপোস-ফর্মূলা মেনে নেয়া এবং ইহুদিবাদী ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চাপের ক্ষেত্রে আগের তুলনায় অনেক বেশি দুর্দম বা অপ্রতিরোধ্য হয়েছে। #
পার্স টুডে/এমএএইচ/১৩
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন