পশ্চিমবঙ্গের ৫ সংকটের কথা বললেন মোদি
নিজের দোষ দেখুন, পশ্চিমবঙ্গের পাওনা টাকা দিন: মোদিকে-মমতা
ভারতের প্রধাননমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গে পাঁচটি ভয়াবহ সংকট রয়েছে। আজ বৃহষ্পতিবার দুপুরে আলিপুরদুয়ারের জনসভায় তিনি একথা বলেন।
তিনি রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করে সংকটগুলো তুলে ধরেন। মোদি বলেন, সংকটগুলো হচ্ছে, সমাজের হিংসা ও অরাজকতা, মা-বোনের নিরাপত্তাহীনতা, বেকারত্ব, দুর্নীতি এবং গরিবের অধিকার কেড়ে নেওয়া শাসক স্বার্থান্বেষী রাজনীতি।' এরপরেই তিনি প্রশ্ন রাখেন 'এভাবে সরকার চলবে?' পাশাপাশি ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের নয়া স্লোগান দিলেন মোদি। বললেন, 'বাংলার মাটির চিৎকার, আর লাগবে না নির্মম সরকার।'
পাল্টা জবাব মমতার, মুক্ত চ্যালেঞ্জ
অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্যের পাল্টা জবাব দিতে দুপুর সাড়ে তিনটায় নবান্নে সংবাদ সম্মেলনে করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি মণিপুর ইস্যু থেকে শুরু করে নিট দুর্নীতি, হাথরাস-উন্নাওয়ের ধর্ষণকাণ্ড এবং বাংলার বকেয়া পাওনা না দেওয়ার কথা তুলে ধরেছেন।
প্রধানমন্ত্রীকে মুক্ত চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলা নিরাপদ বলে আপনি ঠিক নির্বাচনের আগে এখানে আসেন। আপনি আসেন, বাংলার মানুষকে ভুল বোঝাতে, কুৎসা রটাতে, ষড়যন্ত্র করতে।
মমতা বলেন, মোদিজী, মনিপুরে গেলেন না কেন? দুবছর ধরে মনিপুর জ্বলছে। আপনার তো আগে ওখানে যাওয়া উচিত ছিল। বাংলা আপনার (কেন্দ্রের) কাছে এক লক্ষ ৭৫ হাজার কোটি টাকা পায়। আগে সেই টাকা দিন, তার পর কথা বলুন।’
'সিঁদুর’ প্রসঙ্গে নরেন্দ্র মোদীকে উদ্দেশ করে মমতা বলেন, ‘আমরা সিঁদুরকে সম্মান করি। মহিলারা তাঁর স্বামীর থেকে সিঁদুর পরেন। উনি সেই সিঁদুরকে অসম্মান করছেন।’ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই নাম দেওয়া হয়েছিল। উনি আগে নিজেকে চা-ওয়ালা বলতেন। পরে বললেন, পাহারাদার! আর এখন সিঁদুর বেচতে এসেছেন?’
আজকের জনসভা প্রসঙ্গে মমতা বলেন, মোদী বিভাজনের রাজনীতি করছেন। এই জনসভায় আসাম থেকে কেন লোক নিয়ে আসতে হল? তার মানে উত্তরবঙ্গের মানুষ তাকে চিনেছে, তার ওপর আর মানুষের বিশ্বাস নেই।’
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অতীতে বারবার প্রধানমন্ত্রীকে ‘বন্ধু’ বলেছেন। সেই প্রসঙ্গ টেনেও প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘এত বড় নেতা আপনি, আমেরিকা বললেই চুপ হয়ে যান!’
পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে আক্রমণের জবাবে মমতা বলেন, ‘আগে নিজের দোষ দেখুন। আপনাদের দুর্নীতি অনেক বেশি। কোনও কিছুতে দুর্নীতি ধরা পড়লে সরকারকে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হয়। কিন্তু যখন আপনার গুজরাটে, মধ্যপ্রদেশে পাকিস্তানের চরবৃত্তি করার জন্য কেউ ধরা পড়ে, তখন আপনারা কী করেন?’
নির্বাচনি প্রচারের অংশ হিসাবে পশ্চিমবঙ্গে রাজনীতির হোলি খেলতে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী বলে মন্তব্য করেন মমতা বন্দোপাধ্যায়।#
পার্সটুডে/জিএআর/২৯
