ভিয়েনায় পরমাণু সমঝোতা রক্ষার বৈঠক শুরুর আগে যা বলল ফ্রান্স ও ইরান
-
ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎ (ফাইল ছবি)
ফ্রান্স বলেছে, নভেম্বরের আগে ইউরোপের পক্ষ থেকে ইরানের জন্য অর্থনৈতিক প্যাকেজ ঘোষণা করা সম্ভব নাও হতে পারে। এদিকে তেহরান ইউরোপকে উদ্দেশ করে বলেছে, পরমাণু সমঝোতার ব্যাপারে ইরানকে ‘অস্পষ্ট ও উচ্চাকাঙ্ক্ষী’ প্রতিশ্রুতি না দিয়ে তারা যেন ‘বাস্তবসম্মত ও যাচাইযোগ্য’ অঙ্গীকার করে।
অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় পরমাণু সমঝোতার অবশিষ্ট পাঁচ দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাওয়াদ জারিফের আজকের (শুক্রবার) বৈঠকের আগে এসব কথা হয়েছে। গত মে মাসে আমেরিকা ইরানের পরমাণু সমঝোতা থেকে একতরফাভাবে বেরিয়ে যাওয়ার পর এই প্রথম অবশিষ্ট দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে জারিফ বৈঠকে বসলেন।
বৈঠকের আগে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্পষ্ট করে বলেছেন, আগামী মাসে (আগস্টে) তার দেশের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল হওয়ার পরও ইরান যাতে পরমাণু সমঝোতায় বর্ণিত অর্থনৈতিক সুবিধাগুলো আগের মতো পেয়ে যেতে পারে ইউরোপকে সে ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকার একই সময়ে ইরানের পক্ষে পরমাণু সমঝোতা মেনে চলা সম্ভব নয়।
অন্যদিকে বৈঠক শুরুর আগে ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-ইভস লা দ্রিয়াঁ বলেছেন, ইরানকে অর্থনৈতিক সুবিধা পেতে হলে হুমকি বাদ দিয়ে নভেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি গতকাল (বৃহস্পতিবার) জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল ও ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকরনের সঙ্গে আলাদা টেলিফোনালাপে বলেন, শুক্রবারের ভিয়েনা বৈঠকে ইউরোপের পক্ষ থেকে ইরানের প্রত্যাশা পূরণ করা হলেই কেবল তেহরান পরমাণু সমঝোতায় টিকে থাকবে।
এ সম্পর্কে লা দ্রিয়াঁ আজ আরো বলেছেন, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল হলে ইরান যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য একটি অর্থনৈতিক কর্মপন্থা ঠিক করতে ইউরোপীয় দেশগুলো চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।
ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, “আমেরিকার প্রথম ধাপের নিষেধাজ্ঞা আগস্টে এবং বাকি নিষেধাজ্ঞাগুলো নভেম্বরে কার্যকর হবে। আগস্টের আগে হয়ত কোনো কিছু করা সম্ভব হবে না কিন্তু নভেম্বরের মধ্যে কিছু একটা করার জন্য আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি।”
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত মে মাসে ইরানের পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে বলেন, আগামী ছয় মাসের মধ্যে তেহরানের বিরুদ্ধে আমেরিকার আগের আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো পুনর্বহাল করা হবে।
ইউরোপীয় দেশগুলো ট্রাম্পের ওই ঘোষণার তীব্র নিন্দা জানিয়ে আমেরিকাকে ছাড়াই পরমাণু সমঝোতা বহাল রাখার ব্যাপারে ইরানকে প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু কীভাবে তা সম্ভব সে ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো কর্মপন্থা ইউরোপের পক্ষ থেকে দেয়া হয়নি। ইরান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, দেশটির অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষিত না হলে পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাবে তেহরান।#
পার্সটুডে/মুজাহিদুল ইসলাম/৬