সেনা প্রত্যাহারের আল্টিমেটাম শেষ: এবার ইরাকে বিপদে পড়তে যাচ্ছে মার্কিন সেনারা
https://parstoday.ir/bn/news/iran-i92114
ইরাকের ইসলামি প্রতিরোধ সংগঠনগুলোর সমন্বয়কারী দফতর এক বিবৃতিতে সেদেশ থেকে মার্কিন সেনা বহিষ্কারের জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা পার হয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে তাদের সামরিক অবস্থান লক্ষ্য করে হামলা জোরদার করার কথা জানিয়েছে।
(last modified 2025-07-09T12:00:31+00:00 )
মে ২৪, ২০২১ ১৯:২০ Asia/Dhaka
  • ইরাকের প্রতিরোধ যোদ্ধারা
    ইরাকের প্রতিরোধ যোদ্ধারা

ইরাকের ইসলামি প্রতিরোধ সংগঠনগুলোর সমন্বয়কারী দফতর এক বিবৃতিতে সেদেশ থেকে মার্কিন সেনা বহিষ্কারের জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা পার হয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে তাদের সামরিক অবস্থান লক্ষ্য করে হামলা জোরদার করার কথা জানিয়েছে।

গত প্রায় দেড় বছর ধরে ইরাকে মার্কিন সেনাদের কর্মকাণ্ড নিয়ে বিতর্ক চলে আসছে। কেননা মার্কিনীদের উপস্থিতি ওই দেশে নিরাপত্তাহীনতার অন্যতম কারণ। গত বছর ৩ জানুয়ারিতে রাজধানী বাগদাদের বিমান বন্দরের কাছেই মার্কিন সন্ত্রাসী সেনাদের হামলায় ইরানের আইআরজিসি'র কুদস ব্রিগেডের প্রধান জেনারেল কাসেম সোলাইমানি ও ইরাকের প্রতিরোধ সংগঠন হাশত আশ শাবি'র উপপ্রধান আবু মাহদি আল মোহান্দেস শহীদ হওয়ার পর ইরাক থেকে মার্কিন সেনা বহিষ্কারের দাবি জোরদার হয়। এর দু'দিন পর অর্থাৎ ৫ জানুয়ারি ইরাকের পার্লামেন্ট সর্বসম্মতিক্রমে একটি প্রস্তাব পাশ করে যাতে ইরাক থেকে সব মার্কিন সেনা বহিষ্কারের কথা বলা হয়। এরপর ওই মাসেরই ২৪ তারিখে ইরাকের ১০ লাখের বেশি মানুষ মার্কিন বিরোধী বিক্ষোভ করে সেদেশ থেকে সব মার্কিন সেনা বহিষ্কারের দাবি জানায়।

ইরাকের ইসলামি প্রতিরোধ সংগঠনগুলো গত দেড় বছরে রাজনৈতিক তৎপরতা ও সামরিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সবাইকে এটা বুঝিয়ে দিয়েছে যে সেদেশে বিদেশী সেনাদের কোনো প্রয়োজন নেই। এ অবস্থায় মার্কিন সেনা বহিষ্কারের সময়সীমা শেষ হয়ে যাওয়ার পর দুটি কারণে তাদের ওপর হামলার ঘটনা বাড়তে বলে ধারনা করা হচ্ছে। প্রথম কারণ হচ্ছে, ইরাক থেকে মার্কিন সেনা বহিষ্কারের ব্যাপারে ইরাক সরকারের আন্তরিকতা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। ইরাকের জনগণ ও বেশ কয়েকটি প্রতিরোধ সংগঠন সেদেশ থেকে মার্কিন সেনা বহিষ্কারের জন্য সংসদে গৃহীত প্রস্তাব বাস্তবায়নের জন্য অস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী মোস্তফা আল কাজেমির প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল। কিন্তু ওই আহ্বানের পর এক বছর পেরিয়ে গেলেও মার্কিন সেনাদের বহিষ্কারের বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণে সরকারের মধ্যে কোনো তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়নি। ইরাকের প্রতিরোধ সংগঠনগুলোর সমন্বয়কারী দফতরের বিবৃতিতে বলা হয়েছে মার্কিন সেনা বহিষ্কারের ব্যাপারে সরকারের সঙ্গে আলোচনায় কোনো অগ্রগতি না হওয়ার কারণেই মূলত সেনা বহিষ্কারের বিষয়ে আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছিল।

দ্বিতীয় কারণটি হচ্ছে, ইরাকের প্রতিরোধ সংগঠনগুলো আমেরিকার ধোঁকাবাজির বিষয়টি খুব ভালোভাবে বোঝে। এ বিষয়ে ওই বিবৃতিতে তারা আরো বলেছে, ইরাকে সামরিক প্রশিক্ষণের অজুহাতে মার্কিন সেনারা সেদেশে থেকে যাওয়ার পায়তারা করছে। ঠিক একই অজুহাতে মার্কিন সেনাদেরকে ইরাক থেকে সরিয়ে নেয়া হলেও অন্তত যাতে ২০০০ হাজার সেনা ইরাকে মোতায়েন রাখা যায় সে চেষ্টা করছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। কিন্তু ইরাকের প্রতিরোধ সংগঠনগুলো মার্কিন এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বলেছে এ প্রস্তাব সংসদে গৃহীত প্রস্তাবের লঙ্ঘন।

যাইহোক, পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইরাকের প্রতিরোধ সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে এ ধরনের বিবৃতির অর্থ হচ্ছে আগামী দিনগুলোতে ইরাকে মোতায়েন মার্কিন সেনাদের বিরুদ্ধে হুমকি জোরদার হবে। এ কারণে মার্কিন সেনা বহিষ্কারের আল্টিমেটাম শেষ হওয়ার মাত্র পাঁচ ঘণ্টা আগে প্রতিরোধ সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে এ বিবৃতি এলো।

ধারণা করা হচ্ছে, ইরাকের ইসলামি প্রতিরোধ সংগঠনগুলো এটা বুঝতে পেরেছে যে সে দেশে মার্কিন সেনাদের বহিষ্কারের একমাত্র পথ হচ্ছে তাদেরকে চাপের মুখে রাখা। যেমনটি আফগানিস্তানে ঘটেছে এবং বাইডেন প্রশাসন শেষ পর্যন্ত আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা সরিয়ে আনতে বাধ্য হয়েছেন। তাই বলা যায় ইরাকের প্রতিরোধ সংগঠনগুলোর বিবৃতি থেকে বোঝা যায় মার্কিন সেনা উপস্থিতির ব্যাপারে তাদের ধৈর্যের বাধ ভেঙ্গে গেছে। #  

 পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/২৪