গাজা জ্বলছে আর ইউক্রেনে ন্যাটো জড়িত: আমেরিকার প্রতি ইরানের হুশিয়ারি
-
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
পার্সটুডে-ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে মার্কিন হুমকিকে জাতিসংঘ সনদের স্পষ্ট লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছে। আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য এ ধরনের হুমকির বিপজ্জনক পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করেছে দেশটি।
পার্সটুডে'র এই নিবন্ধে ওয়াশিংটনের নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রতিক্রিয়া, গাজায় ইহুদিবাদী ইসরাইলের "গিদিয়ন ২" অভিযান শুরু, সেই সাথে তাদের সেনাবাহিনীর সংকটসহ ইউক্রেন প্রসঙ্গে ন্যাটোর পরামর্শ ইত্যাদি পর্যালোচনা করা হয়েছে:
ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে মার্কিন হুমকির ঘটনায় ইরানের নিন্দা
ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে শক্তি প্রয়োগের মার্কিন হুমকিকে জাতিসংঘ সনদের স্পষ্ট লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেছে ইরান। সেইসাথে তেহরান আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য এই হুমকির বিপজ্জনক পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করেছে। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওয়াশিংটনের পদক্ষেপকে ভেনেজুয়েলার জনগণের বিরুদ্ধে হস্তক্ষেপকামী এবং অবৈধ নীতির ধারাবাহিকতা বলে অভিহিত করেছে। ইরান জোর দিয়ে বলেছে-এই হুমকি আন্তর্জাতিক আইন ও মৌলিক নীতিসহ দেশগুলোর সার্বভৌমত্বের প্রতি সুস্পষ্ট অবজ্ঞা প্রদর্শনের শামিল।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রতিক্রিয়া
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত তার বিচারক এবং প্রসিকিউটরদের বিরুদ্ধে নতুন মার্কিন নিষেধাজ্ঞাগুলোকে "বিচারিক স্বাধীনতার ওপর স্পষ্ট আক্রমণ" হিসেবে বর্ণনা করেছে। আদালত এক বিবৃতিতে জোর দিয়ে বলেছে, চাপ এবং বিধিনিষেধ সত্ত্বেও তারা তাদের দায়িত্ব পালন করে যাবে। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্যবস্তুতে থাকা কর্মকর্তাদের মধ্যে ফরাসি বিচারক নিকোলাস গিলট এবং কানাডিয়ান বিচারক কিম্বার্লি প্রোস্ট রয়েছেন। এই পদক্ষেপের পর ফ্রান্সও অসন্তোষ প্রকাশ করে এটিকে স্বাধীন বিচারিক নীতির পরিপন্থী বলে অভিহিত করেছে।
গাজায় "গিডিয়নের রথ-২" অভিযান শুরু
ইহুদিবাদী ইসরাইল গাজা শহর দখলের লক্ষ্যে সেখানে "গিডিয়নের রথ ২" শিরোনামে তাদের সামরিক অভিযানের দ্বিতীয় পর্যায় শুরু করেছে। এটি এমন এক পদক্ষেপ যার বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে অভ্যন্তরীণ বিরোধিতা এবং নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের সতর্কতার মুখোমুখি হতে হয়েছে। ইসরাইলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাটজ সেনা সদর দপ্তরের উপস্থাপিত সামরিক পরিকল্পনা অনুমোদন করেছেন এবং এর বাস্তবায়ন শুরু করেছেন। প্রথম পর্যায়ে হামাসের ৭৫ শতাংশ শক্তি ধ্বংস করার দাবি করা সত্ত্বেও, অনেক বিশেষজ্ঞ বিশ্বাস করেন যে এই অভিযান আগের মতোই ব্যর্থ হবে। এমনকি জরিপে দেখা গেছে, ৭০ শতাংশেরও বেশি ইসরাইলি যুদ্ধের অবসান চায় এবং বন্দীদের মুক্তির জন্য চুক্তি চায়। এদিকে, জার্মান সরকারও গাজায় ইসরাইলের সামরিক পদক্ষেপ এবং পূর্ব জেরুজালেমে বসতি নির্মাণের স্পষ্ট বিরোধিতা করার পাশাপাশি অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে।
ইসরাইলি সেনাবাহিনীতে জনবল সংকট
ইসরাইলি সেনাবাহিনীতে জনবলের তীব্র ঘাটতি দেখা দিয়েছে এবং বিদেশ থেকে বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্স থেকে ইহুদিদের সামরিক পরিষেবার জন্য নিয়োগের পরিকল্পনা করছে। ইসরাইলি আর্মি রেডিও জানিয়েছে, প্রতিষ্ঠানটি বার্ষিক ৬০০ থেকে ৭০০ বিদেশী সৈন্য নিয়োগ করতে চাচ্ছে। বিশ্লেষকরা এটিকে স্থানীয় যুবকদের সেনাবাহিনীতে যোগদানের ইচ্ছা হ্রাস এবং ইহুদিবাদীদের সামরিক মনোবল দুর্বল হওয়ার লক্ষণ হিসেবে দেখছেন। গাজায় অভিযান যখন তীব্রতর করা হচ্ছে তখন জনবলের এই ঘাটতি ইসরাইলি সেনাবাহিনীর জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি এবং ন্যাটো আলোচনা
ন্যাটোর ৩২টি সদস্য দেশের সামরিক ও প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা একটি ভার্চুয়াল বৈঠক করেছেন। ওই বৈঠকে ইউক্রেনকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা প্রদানের বিষয়ে আলোচনা হয়েছ। একই সময়ে, আলাস্কায় ট্রাম্প এবং পুতিনের মধ্যকার বৈঠক যুদ্ধের অবসান নিয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছিল। যদিও ন্যাটো বৈঠকের কোনও স্পষ্ট ফলাফল আসে নি তবু পরামর্শ অব্যাহত রয়েছে। এদিকে, ডোনাল্ড ট্রাম্প, পুতিন এবং জেলেনস্কির মধ্যে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের সম্ভাবনার কথা ঘোষণা করেছেন। এমনকি শান্তি চুক্তির অংশ হিসেবে মার্কিন বিমান সহায়তা প্রদানের সম্ভাবনাও উত্থাপিত হয়েছে। সংবাদমাধ্যমগুলো আরও জানিয়েছে, প্রায় ১০টি দেশ ইউক্রেনে সেনা পাঠাতে প্রস্তুত।#
পার্স টুডে/এনএম/২১
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।