ফিলিস্তিন থেকে ইরান: পশ্চিমা গণমাধ্যমের শিরোনামে রাজনৈতিক পক্ষপাত
-
পশ্চিমা মিডিয়ার বয়ানযুদ্ধ: গাজা-ইরান প্রশ্নে ভিন্ন ভিন্ন বর্ণনা
পার্সটুডে: আজকের বিশ্ব ব্যাপক রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তনের সাক্ষী যা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে এবং কখনো কখনো বাছাই করে উপস্থাপন করছে। পার্সটুডে এই প্রতিবেদনে পশ্চিমা গণমাধ্যমে দৃষ্টিতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ শিরোনামের দিকে নজর দিয়েছে:
রয়টার্স একটি প্রতিবেদনে লিখেছে: "ট্রাম্পের বক্তব্যের পর, গাজায় একটি ব্যাপক চুক্তির জন্য হামাস তার প্রস্তুতি ঘোষণা করেছে।"
এই খবরটি এমনভাবে সাজানো যে, সেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে একজন ত্রাণকর্তা হিসেবে দেখানো হয়েছে; যিনি গাজাসহ সব যুদ্ধ শেষ করতে এসেছেন।
কিন্তু কোথাও বলা হয়নি যে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে আমেরিকার সমর্থনে ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী গাজা উপত্যকার বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে এক বিধ্বংসী যুদ্ধ শুরু করেছে। সেই যুদ্ধের ফলে ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ ও প্রাণঘাতী দুর্ভিক্ষের পাশাপাশি হাজার হাজার ফিলিস্তিনি শহীদ ও আহত হয়েছেন। যাদের অধিকাংশ নারী ও শিশু।
বিবিসি লিখেছে: “ইরানকে দ্রুত তার পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে পরিদর্শনের অনুমতি দিতে হবে: গ্রোসি"
এই খবরে আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি সংস্থার মহাপরিচালক 'রাফায়েল গ্রোসি'-র ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদন দেওয়ার মধ্যেও কোনো পক্ষপাত দেখানো যায়নি। ইরান বারবার ঘোষণা করেছে যে, এজেন্সির পক্ষপাতদুষ্ট প্রতিবেদন এবং ভুল পদক্ষেপের কারণ সহযোগিতা হ্রাস করা হয়েছে।
'ইউরোনিউজ'ও এই শিরোনামটি বেছে নিয়েছে: “শি, পুতিন, কিম এবং পেজেশকিয়ানের বৈঠক নিয়ে ইউরোপের সতর্কবার্তা; প্রতীকী ঘটনা নাকি পশ্চিমা বিশ্বব্যবস্থার জন্য চ্যালেঞ্জ?”
এখানে পশ্চিমা দেশগুলো, বিশেষত আমেরিকা, যেভাবে বৈশ্বিক শৃঙ্খলা ভেঙে দিয়েছে বা একতরফা আধিপত্য রক্ষায় বাধা সৃষ্টি করেছে—তার কোনো উল্লেখ নেই। বরং, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান কায়া কালাসের উদ্ধৃতি দিয়ে খবরটি এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে যেন ইরান, রাশিয়া, চীন ও উত্তর কোরিয়া 'দুনিয়ার জন্য বড় সমস্যা'।
এএফপি (ফরাসি বার্তা সংস্থা) একটি নিরপেক্ষ শিরোনাম বেছে নিয়েছে: “গাজা শহরে হামলার ফলে এক মিলিয়ন ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হতে পারে বলে আশা করছে ইসরায়েল।”
এখানেও শুধু “গাজার মানুষদের নিয়ে বৈশ্বিক উদ্বেগ” কথাটি বলা হয়েছে। অথচ কোথাও ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর গণহত্যা ও গাজায় তাদের অপরাধের আন্তর্জাতিক নিন্দার খবরের কোনো চিহ্ন নেই।#
পার্সটুডে/এমএআর/৩