ট্রাম্পের 'গোল্ডেন ডোম': মহাকাশ সামরিকায়নে নতুন ধাপ ও বৈশ্বিক নিরাপত্তার শঙ্কা
https://parstoday.ir/bn/news/world-i154214-ট্রাম্পের_'গোল্ডেন_ডোম'_মহাকাশ_সামরিকায়নে_নতুন_ধাপ_ও_বৈশ্বিক_নিরাপত্তার_শঙ্কা
পার্সটুডে: মার্কিন সরকারের ঘোষিত "গোল্ডেন ডোম" প্রকল্প মহাকাশের সামরিকীকরণ এবং কৌশলগত ভারসাম্য বিঘ্নিত হওয়ার বিতর্ককে আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এনেছে। এই প্রকল্পটি ১৯৮০-এর দশকের 'কৌশলগত প্রতিরক্ষা উদ্যোগ'-এর কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি মহাকাশ এবং পরমাণু অস্ত্রের নতুন একটি প্রতিযোগিতার সূচনা করতে পারে।
(last modified 2025-11-19T14:00:42+00:00 )
নভেম্বর ১৯, ২০২৫ ১৭:৫২ Asia/Dhaka
  • ট্রাম্পের গোল্ডেন ডোম পরিকল্পনা নিয়ে বিতর্ক
    ট্রাম্পের গোল্ডেন ডোম পরিকল্পনা নিয়ে বিতর্ক

পার্সটুডে: মার্কিন সরকারের ঘোষিত "গোল্ডেন ডোম" প্রকল্প মহাকাশের সামরিকীকরণ এবং কৌশলগত ভারসাম্য বিঘ্নিত হওয়ার বিতর্ককে আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এনেছে। এই প্রকল্পটি ১৯৮০-এর দশকের 'কৌশলগত প্রতিরক্ষা উদ্যোগ'-এর কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি মহাকাশ এবং পরমাণু অস্ত্রের নতুন একটি প্রতিযোগিতার সূচনা করতে পারে।

২০২৫ সালের মে মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার জাতীয় নিরাপত্তা নীতির মূল স্তম্ভ হিসেবে "গোল্ডেন ডোম" নামে একটি নতুন পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। এটি বহুস্তরীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, যা মূলত ১৯৮৪ সালে প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রেগানের ঘোষণা করা “স্ট্র্যাটেজিক ডিফেন্স ইনিশিয়েটিভ”–এর একটি নবসংস্করণ। বিপুল ব্যয়ের কারণে সেই প্রকল্পটি কখনো কার্যকর হয়নি।

এই পরিকল্পনার মূল বৈশিষ্ট্য হল- একটি বিশাল মহাকাশভিত্তিক স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক গড়া, যা যেকোনো ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রকে তাৎক্ষণিকভাবে শনাক্ত করতে পারবে এবং প্রয়োজন হলে কক্ষপথ থেকে লেজার অস্ত্র বা গতিশীল আঘাতকারী ব্যবস্থার মাধ্যমে হুমকিকে মহাকাশেই ধ্বংস করতে সক্ষম।

পার্সটুডে'র প্রতিবেদন অনুযায়ী, ট্রাম্প তার এই পরিকল্পনা বর্ণনা করতে গিয়ে জোর দিয়েছেন যে "গোল্ডেন ডোম" বিশ্বের যেকোনো প্রান্ত থেকে ছোড়া মিসাইলও বাধা দিতে সক্ষম। এই দাবিটি প্রকল্পটির কৌশলগত পরিণতি সম্পর্কে গুরুতর প্রশ্ন উত্থাপন করেছে।

অনেক বিশ্লেষকের মতে, ওয়াশিংটনের এমন সামর্থ্য বিকাশের একতরফা পদক্ষেপ কেবল "পারস্পরিক নিরাপত্তা" নীতিকেই দুর্বল করছে না, বরং ভারসাম্যহীন আধিপত্য তৈরি করে অন্যান্য রাষ্ট্রগুলোকে জবাবি পদক্ষেপ নিতে প্ররোচিত করছে। ইউএস নেভাল ওয়ার কলেজের অধ্যাপক জে জনসন ফ্রিজ সতর্ক করে বলেছেন, মহাকাশের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিকীকরণ “একটি নতুন অস্ত্র প্রতিযোগিতার সূচনা করতে পারে”, কারণ বিভিন্ন দেশ এটি নিজেদের নিরাপত্তার ওপর সরাসরি হুমকি হিসেবে বিবেচনা দেখবে।

অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ বিশেষজ্ঞরাও জোর দিয়ে বলেছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র একতরফাভাবে মহাকাশের সামরিকীকরণকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। বিজ্ঞানীদের একটি প্রতিনিধিত্বমূলক সংগঠনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত পাঁচ বছরে সামরিক স্যাটেলাইটের সংখ্যা ৩৫ শতাংশ বেড়েছে এবং এর অর্ধেকেরও বেশি কেবল যুক্তরাষ্ট্রের। এই প্রবণতা অন্য দেশগুলোকে উদ্বিগ্ন করেছে এবং তাদেরও নিজস্ব মহাকাশ কর্মসূচি সম্প্রসারণে উৎসাহিত করছে।

পর্যবেক্ষকদের মতে, মহাকাশে সামরিক উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের এ প্রচেষ্টা আসলে ইরান, রাশিয়া এবং চীনের ওপর অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত আলোচনায় আরও চাপ সৃষ্টি করা এবং আন্তর্জাতিক ব্যবস্থায় নিজের আধিপত্যের অবস্থান শক্তিশালী করার জন্য ওয়াশিংটনের কৌশলের একটি অংশ।#

পার্সটুডে/এমএআর/১৯

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।