মে ২৬, ২০২৩ ১৫:৪০ Asia/Dhaka

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা: রেডিও তেহরানের প্রাত্যহিক আয়োজন কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। ২৬ মে শুক্রবারের কথাবার্তার আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি।

বাংলাদেশের শিরোনাম:

  • খাগড়াছড়িতে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নোমানের ওপর হামলা-মানবজমিন
  • যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি সতর্কবার্তা হিসেবে দেখছে সব পক্ষ-প্রথম আলো
  • যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নীতিতে বিপর্যয়ের মুখে বিএনপি-ইত্তেফাক
  • সাত বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন ফের রিজার্ভ নামল ২৯ বিলিয়ন ডলারে-যুগান্তর
  • ভিন্ন মডেলের নির্বাচন, নৌকার ব্যাজ পড়ে ভোট ঘড়িতে-যুগান্তর
  • বিএনপির সমাবেশে হামলার অভিযোগ, নিপুণ রায় চৌধুরী আহত -বাংলাদেশ প্রতিদিন

কোলকাতার শিরোনাম:

  • ‘৯ সাল ৯ সওয়াল’, মোদি সরকারের বর্ষপূর্তিতে তীব্র আক্রমণ কংগ্রেসের-‘সংবাদ প্রতিদিন
  • জোটনীতি বদলে ‘হাত’ ধরতে চান কেজরীও? রাহুল, খড়্গের সময় চাইলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী-আনন্দবাজার পত্রিকা
  • বিরোধী ঐক্যের বড় এক ধাপ-গণশক্তি

এবারে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিস্তারিত

জায়েদা খাতুন ও পাশে বসা ছেলে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর

গাজীপুর সিটি নির্বাচন ভোট সুষ্ঠু হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানালেন জায়েদা খাতুন-প্রথম আলোর এ শিরোনামের খবরে লেখা হয়েছে, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত করায় নগরের বাসিন্দাদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন জায়েদা খাতুন। নির্বাচনে জয়ের পর সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও শুভেচ্ছা। আমি ওনাকে ধন্যবাদ জানাই। ভোটটা আমার সুষ্ঠু হয়েছে। আমি আমার ভোটের হিসাব পেয়েছি। এই জন্য আমি আরও ধন্যবাদ জানাই প্রধানমন্ত্রীকে।’

নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর আজ শুক্রবার ভোর ৪টার সময় নিজ বাড়িতে জায়েদা খাতুন সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় তাঁর পাশে ছিলেন ছেলে জাহাঙ্গীর আলম।

বিজয়টা কাকে উপহার দেবেন—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে জায়েদা খাতুন বলেন, ‘এই বিজয় আমি গাজীপুরবাসীকে দেব এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও দেব।’গাজীপুরবাসীর জন্য কী করবেন—এমন প্রশ্নের জবাবে টেবিলঘড়ি প্রতীকে জয় লাভ করা জায়েদা খাতুন বলেন, ‘গাজীপুরবাসীর ঋণ আমি শোধ করার চেষ্টা করব। সাংবাদিকেরা আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন, তাই আপনাদের ঋণও আমি শোধ করব। আপনারা যখন আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন, তখন আমার সঙ্গে বা আশপাশে কেউ ছিল না। আমি গাজীপুরের কাজ করেই ঋণ শোধ করব।’

জায়েদা খাতুন বলেন, ‘কাজটা যেহেতু আমি একা করতে পারব না। তাই আমার ছেলেকে নিয়ে করব, যে আগে থেকেই আমার পাশে ছিল। আমার ছেলের যে কাজগুলো বাকি ছিল, সেগুলো আমি শেষ করে দেব ইনশা আল্লাহ।’

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি  সতর্কবার্তা হিসেবে দেখছে সব পক্ষ-প্রথম আলোর এ শিরোনামের খবরে লেখা হয়েছে, ‘বাংলাদেশে ভোটের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে’ যুক্তরাষ্ট্র নতুন যে ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে, এটাকে ‘কঠোর সতর্কবার্তা’ হিসেবে দেখছে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ। এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে সরকার বা দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে কোনো নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া আসেনি। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি—দুই দলই এটিকে একে অন্যের জন্য সতর্কবার্তা বলে প্রচার করছে। এ ছাড়া বিএনপি ও জাতীয় পার্টি যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে।রাজনৈতিক দলগুলোর বাইরে সরকারি মহলসহ নির্বাচনসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার কর্মকর্তাদের মধ্যেও একধরনের অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। তাঁরা এর প্রভাব কী হতে পারে সেটা বোঝার চেষ্টা করছেন বলে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পর্যায়ের সূত্র থেকে জানা গেছে।

বাংলাদেশের নির্বাচন সামনে রেখে যুক্তরাষ্ট্র কোনো পদক্ষেপ নিতে পারে বলে কিছুদিন ধরে দেশে গুঞ্জন ছিল। ‘যারা স্যাংশন (নিষেধাজ্ঞা) দেবে, তাদের কাছ থেকে কিছু কেনা হবে না’—সরকারের পক্ষ থেকে এমন ঘোষণা আসার পর এমন গুঞ্জনের বিস্তার ঘটে। এমন প্রেক্ষাপটে গত বুধবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ন্যাশনালিটি অ্যাক্টের ২১২ (এ) (৩) (সি) (‘৩ সি’) ধারা অনুযায়ী, বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর। এতে বলা হয়, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচনপ্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত ব্যক্তি ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ভিসায় বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে।

আজ সকালে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি এবং গতকাল আমাদের বিবৃতিতে যা দেখেছেন, তা বাংলাদেশের জনগণ, সরকার এবং প্রধানমন্ত্রী—সবার জন্য অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আহ্বান জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

পিটার হাস, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত এই ঘোষণার পরদিন গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। দিনের প্রথম ভাগে তিনি আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেন। বিকেলে তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন।

বৈঠক শেষে পিটার হাস সাংবাদিকদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি বাংলাদেশের নির্বাচন প্রক্রিয়ার প্রতি ওয়াশিংটনের সমর্থনের অংশ। তিনি বলেন, ‘আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি এবং গতকাল (বুধবার) আমাদের বিবৃতিতে যা দেখেছেন, তা বাংলাদেশের জনগণ, সরকার এবং প্রধানমন্ত্রী— সবার জন্য অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আহ্বান জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, দুটি বৈঠকেই আলোচনার বড় পরিসরজুড়ে ছিল বুধবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের ঘোষিত বাংলাদেশের জন্য মার্কিন নতুন ভিসা নীতি।

ঘোষণার আগেই সরকার সিদ্ধান্তটি জানত নির্বাচন ঘিরে বাংলাদেশের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতির বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারকে ৩ মে জানিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। এটি বুধবার অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন তাঁর বিবৃতিতে স্পষ্ট করে বলেছেন। গতকাল সকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনও সাংবাদিকদের বলেছেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁকে চিঠি দিয়ে ওই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নীতিতে বিপর্যয়ের মুখে বিএনপি-ইত্তেফাক-ড. সেলিম মাহমুদ তার এ কলামে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নীতির কারণে আওয়ামী লীগের জন্য কোনো সমস্যা সৃষ্টি হবে না। তবে এই নতুন নীতির ফলে বিএনপি'র ষড়যন্ত্রের রাজনীতি বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে।মূলতঃ চারটি কারণে যুক্তরাষ্ট্রের এই নতুন নীতির প্রেক্ষিতে বিএনপির রাজনীতি বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে।মূলতঃ চারটি কারণে যুক্তরাষ্ট্রের এই নতুন নীতির প্রেক্ষিতে বিএনপির রাজনীতি বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে।

প্রথমত, বিগত বছরগুলোতে বিএনপি'র রাজনীতির মূল লক্ষ্য ছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন আদায় করা।বিএনপি বলে আসছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাই তাদের ক্ষমতায় আসার একমাত্র পথ। এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠিত না হলে তারা কোনো নির্বাচনে যাবে না। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে তাদের সকল রাজনৈতিক কৌশল ও কার্যক্রম চলমান ছিল। তারা বলে আসছিল, আওয়ামী লীগ সরকার কিংবা দলীয় সরকারের অধীনে তারা আর কোন নির্বাচনে যাবে না। যুক্তরাষ্ট্রের এই নতুন নীতিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিএনপি'র আন্দোলনের প্রতি সহায়ক কিংবা সহানুভূতিশীল কোন বক্তব্য নেই। এই নীতিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার কোন স্বীকৃতি নেই। এছাড়া কিছুদিন পূর্বে আওয়ামী লীগের সাথে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের যে আলোচনা হয়েছিল সেখানে পিটার হাস সুস্পষ্ট ভাবে বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে তাদের কোনো আগ্রহ নেই।ফলে বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়টি ভেস্তে গেল। বিএনপির নির্বাচনী কৌশল এবং তার আন্দোলন কার্যক্রমের ক্ষেত্রে এটি বড় ধরনের একটি বিপর্যয়। 

দ্বিতীয়ত, বিগত বছরগুলোতে বিএনপি দেশের মাঠের রাজনীতি ছেড়ে বিদেশি ষড়যন্ত্রের ওপর সম্পূর্ণরূপে নির্ভরশীল হয়েছিল। দেশের সব স্থানীয় সরকার নির্বাচন বর্জন করে তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত রাজনীতির মাঠ ছেড়ে শুধুমাত্র বিদেশি ষড়যন্ত্রের ওপর নির্ভর করে তারা ক্ষমতায় আসতে চেয়েছিল। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় বিদেশে পাচার করা হাজার হাজার কোটি টাকা তারা বিদেশে লবিস্টদের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে খরচ করেছিল। রাজনীতির মাঠ ছেড়ে ঢাকায় রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছে। তাদের রাজনীতির ধরণ ও কৌশল এমনভাবে উপস্থাপন করেছিল যে, কিছু মানুষ মনে করেছিল কয়েকজন রাষ্ট্রদূত তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। গত কয়েক বছর তারা প্রচার করে আসছিলো যে, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে স্যাংশন দিয়ে সরকারকে বিপর্যস্ত করে তারা ক্ষমতায় আসবে। তাদের এত দিনের রাজনীতির অন্যতম বিষয়বস্তু ছিল 'স্যাংশন'। সাম্প্রতিককালে দেশে-বিদেশে অবস্থানরত তাদের তথ্য সন্ত্রাসীরা স্যাংশন নিয়েই মাতামাতি করছিল। তাদের নীতি নির্ধারণী পর্যায়সহ সব পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ তাদের বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর স্যাংশনের ওপরেই বার বার জোড় দিচ্ছিল। তাদের বক্তব্য ছিল, স্যাংশন এসে সব উলট পালট করে দেবে। কিন্তু স্যাংশন আসলো না। তার পরিবর্তে যা আসলো তাতে তারা নিজেরাই বিপদে পড়ল। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের এই নতুন নীতির মূল বক্তব্যই হচ্ছে নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত করা যাবে না। এটি বিএনপির জন্য একটি বড় বাধা কারণ তারা নির্বাচন ব্যবস্থা ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করতে চায়। 

তৃতীয়ত, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিএনপি বলে আসছিল যে, নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া শেখ হাসিনার অধীনে কোন নির্বাচনে তারা যাবে না। তাদের নেতারা সব বক্তৃতা বিবৃতিতে এটা বলে আসছিল, শেখ হাসিনার অধীনে বাংলাদেশে আর কোন নির্বাচন তারা হতে দেবে না। এই নির্বাচন তারা যেকোনো মূল্যেই প্রতিহত করবে। ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির নির্বাচন প্রতিহত করতে গিয়ে তারা এদেশে আগুন সন্ত্রাস করেছিল। শেখ হাসিনার অধীনে আর কোন নির্বাচন নয়- এটিই ছিল তাদের শেষ কথা। শেখ হাসিনার সরকারের অধীনেই বাংলাদেশে নির্বাচন হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নীতি অনুযায়ী নির্বাচন প্রতিহত করার যে কোন কার্যকলাপ বিধি-নিষেধের আওতায় পড়ছে। ‌‌এর ফলে নির্বাচন প্রতিহত করার বিএনপি'র কোন উদ্যোগ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কোনো ধরনের সহায়তা পাবে না। ‌‌ অন্যদিকে, বিএনপি কিংবা অন্য কোনো শক্তির বাংলাদেশে নির্বাচন প্রতিরোধ করার কোনো উদ্যোগকে পশ্চিমা বিশ্ব সহায়তা করবে না -এ বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে গেল। এক কথায় বলতে গেলে, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন প্রতিরোধ করার বিএনপির সব ষড়যন্ত্র ভেস্তে গেল। ‌‌

চতুর্থত, গত কয়েক বছর ধরে বিএনপি এবং সুশীল সমাজের কিছু লোক এটি বলে আসছিল যে, বাংলাদেশে বিএনপি নির্বাচনে না আসলে এই নির্বাচন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে অংশগ্রহণমূলক হবে না। পশ্চিমা বিশ্বের কিছু কিছু দেশও এই প্রোপাগান্ডার কারণে একই ধরনের মনোভাব পোষণ করতো। এর কারণে বিএনপি প্রায়ই নির্বাচন বর্জনের হুমকি দিয়ে আসছিল। তারা বলেছিল, বিএনপি নির্বাচন বর্জন করলে সে নির্বাচন আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য হবে না কারণ এই নির্বাচন 'অংশগ্রহণমূলক' হবে না।  যুক্তরাষ্ট্রের এই নতুন নীতির ফলে বাংলাদেশ নিয়ে পশ্চিম বিশ্বের নীতিতে একটি বড় পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিএনপি নির্বাচনে না আসলে এই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না- এই ধরনের কোনো বিষয় যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নীতিতে নেই। বিএনপি নিজে থেকে নির্বাচন বর্জন করলে এই নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না- এই বক্তব্য সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নীতির ফলে বিএনপি নির্বাচন বর্জন করলে পশ্চিমা বিশ্বের কোনো সমর্থন তারা পাবে না- এটি পরিষ্কার। ‌ মোটা দাগে বলতে গেলে, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নীতির কারণে বিএনপির নির্বাচন বর্জনের ষড়যন্ত্র ভেস্তে গেল। পাশাপাশি শেখ হাসিনার অধীনে এদেশে কোন নির্বাচন হবে না, বিশেষ করে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ভন্ডুল হয়ে যাবে- এরকম অপপ্রচার যারা করছিল যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নীতির কারণে তাদের ষড়যন্ত্র নস্যাৎ হয়েছে।

সাত বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন ফের রিজার্ভ নামল ২৯ বিলিয়ন ডলারে-যুগান্তর পত্রিকার এ খবরে লেখা হয়েছে, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবার সামান্য কমে গত সাত বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে নামল। এবার নিয়ে চলতি মাসেই দুই দফা রিজার্ভ গত বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে নামল।

এবার নিয়ে চলতি মাসেই দুই দফা রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নামল। অর্থাৎ সাত বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে। আজ থেকে সাত বছর আগে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে রিজার্ভ ছিল ৩ হাজার ৩৫ কোটি ডলার।

রিজার্ভ কমার কারণ হিসাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়, আমদানি ব্যয় মেটাতে ব্যাংকগুলোয় রিজার্ভ থেকে ডলারের জোগান বাড়াত হয়েছে। এর বিপরীতে রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স থেকে ডলার জমা কমে গেছে। এসব কারণে রিজার্ভ কমছে।

এদিকে রিজার্ভ ধরে রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আমদানিতে আরও কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ, বিদেশ ভ্রমণ, চিকিৎসা, শিক্ষা, সভা সেমিনারের মতো কম গুরুত্বপূর্ণ খাতে বৈদেশিক মুদ্রা ছাড়ে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে। একই সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রার আয় বাড়াতে রপ্তানির নতুন বাজার অনুসন্ধান, নতুন বাজারে রপ্তানি বাড়ানো, অপ্রত্যাবাসিত রপ্তানি আয় দেশে ফেরত আনা, রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ানোর পদক্ষেপ নিচ্ছে সংশ্লিস্ট সংস্থাগুলো। পাশাপাশি চড়া সুদের স্বল্পমেয়াদি বৈদেশিক ঋণ কমিয়ে কম সুদের দীর্ঘমেয়াদি ঋণ বেশি নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে।

এবারে কোলকাতার কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:

জোটনীতি বদলে ‘হাত’ ধরতে চান কেজরীও? রাহুল, খড়্গের সময় চাইলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী-আনন্দবাজার পত্রিকার এ শিরোনামের খবরে লেখা হয়েছে, অর্ডিন্যান্স-সংঘাতে দিল্লির আপ সরকারের পাশে দাঁড়ানোর আর্জি জানাতে বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করে চলেছেন কেজরীওয়াল। মঙ্গলবার নবান্নে মমতার সঙ্গে দেখা করেন তিনি।কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে এবং দলের নেতা রাহুল গান্ধীর সঙ্গে দেখা করার জন্য সময় চাইলেন অরবিন্দ কেজরীওয়াল। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আম আদমি পার্টি (আপ)-র সভাপতি কেজরী চান, দিল্লিতে ‘ক্ষমতা দখলের’ জন্য জারি করা বিতর্কিত অধ্যাদেশ (অর্ডিন্যান্স)-কে স্থায়ী রূপ দিতে নরেন্দ্র মোদী সরকার সংসদে বিল আনলে বিরোধী দলগুলি ঐক্যবদ্ধ ভাবে তার বিরোধিতা করুক। সেই উদ্দেশ্যেই তিনি রাহুল-খড়্গের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছেন তিনি।যদিও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে। কেজরীর এই পদক্ষেপ তাৎপর্যপূর্ণ। গত এক দশক ধরে সন্তর্পণে বিজেপি এবং কংগ্রেসের থেকে সমদূরত্ব বজায় রাখা আপ-প্রধান ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের আগে অবস্থান বদলানোর বার্তা দিতে চেয়েছেন বলেও মনে করছেন তাঁরা।

আনন্দবাজার পত্রিকার রাজনীতির আরও দুটি খবরে শিরোনাম এরকম, অনুমতি দেয়নি কেন্দ্র, দিল্লিতে নীতি আয়োগের বৈঠকে ‘দিদির দূত’ হয়ে যাচ্ছেন না কেউই। অভিষেককে সিবিআই জেরায় হস্তক্ষেপ করল না সুপ্রিম কোর্ট! তবে ২৫ লক্ষ জরিমানায় স্থগিতাদেশ দিল।

‘৯ সাল ৯ সওয়াল’, মোদি সরকারের বর্ষপূর্তিতে তীব্র আক্রমণ কংগ্রেসের-সংবাদ প্রতিদিন

শুক্রবার ৯ বছর পূর্ণ হল নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারের (BJP)। আর সেই উপলক্ষেই নতুন করে গেরুয়া শিবিরকে আক্রমণ করল কংগ্রেস (Congress)। দাবি করল, মোদি সরকারের সময়কাল কেবলই ব্যর্থতা ও দুর্দশায় ভরা। আর সেই সঙ্গেই তাদের উদ্দেশে পেশ করল ৯টি প্রশ্ন। যাকে হাত শিবিরের তরফে বলা হচ্ছে ‘৯ সাল ৯ সওয়াল’। বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা ও দলের প্রচার বিভাগীয় প্রধান জয়রাম রমেশ সেই সংক্রান্ত একটি প্রশ্নমালাও এদিন প্রকাশ করেছেন। সেখানে বেকারত্ব থেকে জিএসটি, নানা বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়েছে মোদি সরকারকে।

শুক্রবার সকালে লাগাতার টুইট করেও আক্রমণ শানিয়েছে কংগ্রেস। ঠিক কী খোঁচা দিয়েছে হাত শিবির। একটি পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘আজ মোদি সরকার ৯ বছর পূর্ণ করল। এটা আসলে ‘৯ বছরের ব্যর্থতা’। দেশের কাছে ৯ বছরের দুর্দশা। এই ৯ বছরে মানুষকে সহ্য করতে হয়েছে মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব ও স্বৈরতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত। এই মোদি সরকার জুমলা করে সরকারে এসেছিল। একটি প্রতিশ্রুতিও পালন করেনি। কেবল তারিখের পর তারিখ দিয়ে গিয়েছে।’

বিরোধী ঐক্যের বড় এক ধাপ-গণশক্তি

নিজের এক্তিয়ার এবং অধিকারের সীমা লঙ্ঘন করে নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী একাধিপত্যের যে নির্লজ্জ প্রদর্শনী করতে চলেছেন তাতে দেশময় ক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। তার আঁচে অনেকটাই উর্বর হয়েছে বিরোধী ঐক্যের জমি। ২৮‍‌ মে মোদী উদ্বোধন করতে চলেছেন নব নির্মিত সংসদ ভবন। তার জন্য লোকসভার অধ্যক্ষের তরফ থেকে আমন্ত্রণপত্র পৌঁছেছে রাজনৈতিক দলগুলির দপ্তরে। 

লোকসভার অধ্যক্ষ নাকি সংসদ ভবন উদ্বোধনের জন্য মোদীকেও আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। মোদী সেই আমন্ত্রণ সানন্দে গ্রহণ করে ভবন উদ্বোধনে উন্মুখ হয়ে থাকলেও প্রায় সমস্ত বিরোধী দল সেই আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছে। ১৯টি বিরোধী দল যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করে নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠান বয়কট করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে। অন্য দুই-একটি দল যৌথভাবে ঘোষণা না করলেও স্বতন্ত্রভাবে বয়কটের কথা জানিয়ে দিয়েছে। অর্থাৎ মোদী কর্তৃক সংসদ ভবন উদ্বোধনকে ঘিরে বিরোধী ঐক্যের একটা সার্বিক চেহারা ফুটে উঠেছে। আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে এই ঘটনা অত্যন্ত তাৎপর্যবাহী।

নতুন সংসদ ভবন নির্মাণকে ঘিরে বিতর্ক গোড়া থেকে আছে। এবার তার উদ্বোধনকে ঘিরে বিতর্ক তুঙ্গে পৌঁছে গেছে। সংসদ ভবন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী, সেখানে রাষ্ট্রপতি, উপ-রাষ্ট্রপতি, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি কেই-ই আমন্ত্রিত নন। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের গণতন্ত্রের পীঠস্থান সংসদ, সাংবিধানিকভাবে যে সংসদের প্রধান রাষ্ট্রপতি তাকে বাদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধন কোনও অবস্থাতেই বিরোধীরা মেনে নিতে রাজি নন। তাদের স্পষ্ট অভিমত এই উদ্বোধন রাষ্ট্রপতি ছাড়া অন্য কারোর হাতে নিতান্তই অশোভন।

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/২৬

ট্যাগ