চিঠিপত্রের আসর প্রিয়জন
'রেডিও তেহরান: হাজার রকম তথ্যে ভরপুর একটি বেতার'
সুপ্রিয় শ্রোতা বন্ধুরা, আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক প্রীতি আর শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আপনাদেরই চিঠিপত্রের আসর 'প্রিয়জন'। আশা করছি সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন। আজকের আসরে আপনাদের সঙ্গে রয়েছি আমি নাসির মাহমুদ,আমি আকতার জাহান এবং আমি আশরাফুর রহমান।
আশরাফুর রহমান: প্রত্যেক আসরের মতো আজও অনুষ্ঠানের শুরুতেই আমি একটি বাণী শোনাতে চাই। আমিরুল মোমেনীন হযরত আলী (আ.) বলেছেন, "ভিক্ষুককে বঞ্চিত করবে না এমনকি যদি একটি আঙ্গুরের কিংবা একটি খোরমার অর্ধেক প্রদান করেও হয়। কারণ,সদকা আল্লাহর নিকটে বৃদ্ধি পায়।"
আকতার জাহান: আমরা সবাই সাধ্যানুযায়ী অভাবী মানুষকে দান-সদকা দেওয়ার চেষ্টা করব- এ কামনায় নজর দিচ্ছি চিঠিপত্রের দিকে।
বাংলাদেশের রাজশাহী জেলার বাগমারা উপজেলার বিনোদপুর থেকে ওয়ার্ল্ড ডিএক্স ইন্টারন্যাশনাল রেডিও ফ্যান ক্লাবের সভাপতি মোঃ জাহাঙ্গীর আলম পাঠিয়েছেন আসরের প্রথম মেইলটি।
তিনি লিখেছেন, "আমি রেডিও তেহরানের একজন নিয়মিত ও পুরাতন শ্রোতা। আপনাদের পরিবেশিত সকল অনুষ্ঠান আমি নিয়মিত শুনে থাকি। তবে নিয়মিত লেখা হয়ে ওঠে না। আশা করি এখন থেকে নিয়মিত হবো। রেডিও তেহরানের কিছু কিছু অনুষ্ঠান টেলিগ্রামের মাধ্যমে শুনতেও পাচ্ছি যা আমার কাছে অসাধারণ লাগছে। এজন্য জানাই রেডিও তেহরান পরিবারকে ধন্যবাদ জানাই।"
নাসির মাহমুদ: ভাই জাহাঙ্গীর আলম, পার্সটুডের টেলিগ্রাম চ্যানেলে শেয়ার করা অনুষ্ঠানগুলো শুনছেন জেনে ভালো লাগল। আমরা চেষ্টা করছি গুরুত্বপূর্ণ খবরের পাশাপাশি অডিও ফাইল ও ভিডিও চ্যানেলে শেয়ার করতে। এখনও যারা আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করেননি তারা দ্রুত সাবস্ক্রাইব করে নিন। চ্যানেলটির ঠিকানা হচ্ছে- t.me/parstodaybn
আশরাফুর রহমান: ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার শীতলকুচি থানার গাদোপোতা গ্রাম থেকে সহিদুল ইসলাম পাঠিয়েছেন পরের মেইলটি। তিনি লিখেছেন, "রেডিও তেহরানের বাংলা বিভাগ থেকে গত ২৯শে মে তারিখে প্রচারিত অনুষ্ঠানগুলো ছিল- অর্থসহ কুরআন তেলাওয়াত, বিশ্বসংবাদ, দৃষ্টিপাত, প্রিয়জন ও কথাবার্তা। প্রতিটি অনুষ্ঠানই আমার ভালো লেগেছে তবে সবথেকে বেশি ভালো লেগেছে প্রিয়জন অনুষ্ঠানটি। এই অনুষ্ঠানটি আমার মন ছুঁয়ে যায়। ওইদিন আমার পাঠানো চিঠি যখন পড়ে শোনানো হচ্ছিল তখন যেন নিজেকে হারিয়ে ফেলি প্রিয়জন অনুষ্ঠানের ভালোবাসার অকুল সাগরে। সবকিছু মিলিয়ে ২৯ শে মে প্রচারিত প্রিয়জন অনুষ্ঠানটি ছিল অসাধারণ। মনে হচ্ছিল যেন সমস্ত শ্রোতাবন্ধুদের মিলন মেলা বসেছে প্রিয়জনে।"
আকতার জাহান: চিঠিপত্রের আসর প্রিয়জন সম্পর্কে আপনার মতামত জেনে ভালো লাগল। আশা করি আমাদের অন্যান্য অনুষ্ঠান সম্পর্কেও লিখবেন।
আসরের পরের মেইলটি এসেছে বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর থেকে। আর পাঠিয়েছেন এস. এম. হৃদয় রহমান।
তিনি লিখেছেন, "রেডিও তেহরান-এর ধারাবাহিক অনুষ্ঠান 'নারী: মানব ফুল' অনুষ্ঠানের ১৪তম পর্বে নবী হযরত সুলায়মান (আ.)-এর সততা ও নিষ্ঠা এবং সাবার রাণী বিলকিসের বিচক্ষণতার পরিচয় ফুটে উঠেছে। অনুষ্ঠানটি রেডিও তেহরান যেভাবে সুন্দর ও সাবলীলভাবে উপস্থাপন করে তা নারীদের জন্য বিশাল সম্মানের।" 'নারী: মানব ফুল’ অনুষ্ঠানটি রেডিও তেহরানকে অনন্য এক সম্মানের অবস্থানে নিয়ে গেছে বলেও মন্তব্য করেছেন হৃদয় রহমান ভাই।
নাসির মাহমুদ: সমাজ ও পরিবারে নারীর ভূমিকা বিষয়ক অনুষ্ঠান 'নারী: মানব ফুল' সম্পর্কে ভালোলাগার অনুভূতি প্রকাশ করে চিঠি লেখার জন্য ভাই হৃদয় রহমান আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার গুলশান থেকে এম. জামাল আহমেদ সুবর্ণ পাঠিয়েছেন এবারের মেইলটি।
তিনি লিখেছেন, "রেডিও তেহরানের বাংলা বিভাগ ইসলামী অনুশাসন অনুযায়ী জীবনযাপনের জন্য হাজার রকম তথ্যে ভরপুর একটি বেতার। যেকারণে রেডিও তেহরানের অনুষ্ঠান শোনা যেন আমার নিত্যদিনের নেশায় পরিণত হয়েছে, যেই নেশার মাধ্যমে জ্ঞান আহরণ করা যায়। আমি চাই সারা বিশ্বের সকল মানুষ আমার মত একই নেশায় আসক্ত হোক এবং নিজের জীবনকে পরিচালিত করুক ইসলামী অনুশাসন অনুযায়ী।"
আশরাফুর রহমান: ভাই জামাল আহমেদ সুবর্ণ, রেডিও তেহরান সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন জেনে ভালো লাগল। আশা করি মাঝেমধ্যে লিখবেন।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট ঢাকা কলোনী থেকে বিধান চন্দ্র সান্যাল পাঠিয়েছেন এবারের মেইলটি।
তিনি লিখেছেন, আমি রেডিও তেহরানের দীর্ঘদিনের শ্রোতা। গত মে মাসে আমি প্রতিদিন অনুষ্ঠান সম্পর্কিত বিষয়ে এবং পার্সটুডের বিষয় নিয়ে একাধিক পত্র দিয়েছি। এমন কোনদিন নেই যেদিন পত্র পাঠাইনি। যাকে এ মাসের সেরা শ্রোতা করা হয়েছে তাকে অভিনন্দন জানাই।
আকতার জাহান: এরপর বিধানদা খানিকটা অভিযোগের সুরে লিখেছেন, কিছু দিন থেকে আমাকে একটু নেগলেট করে চলা হচ্ছে। তবে পুরস্কারের লোভ করি না। যত পুরস্কার জিতেছি তার কয়টিইবা পেয়েছি!
নাসির মাহমুদ: ভাই বিধান চন্দ্র সান্যাল, আপনি নিশ্চয়ই জানেন যে, একজন শ্রোতা যে মাসে শ্রেষ্ঠ শ্রোতা নির্বাচিত হন তার পরবর্তী ছয়মাস তাকে অপেক্ষা করতে হয় পুনরায় একই শিরোপা অর্জনের জন্য। আপনি চলতি বছরের জানুয়ারি মাসেই শ্রেষ্ঠ শ্রোতা নির্বাচিত হয়েছেন। সে কারণে ছয় মাসের আগে আপনাকে পুনর্নির্বাচনের সুযোগ নেই। তাছাড়া সবদিক বিবেচনায় জনাব শাহাদত হোসেন মে মাসে শ্রেষ্ঠ শ্রোতা নির্বাচিত হয়েছেন। আর শুধু চিঠির সংখ্যা দিয়ে শ্রেষ্ঠ শ্রোতা নির্বাচন করা হয় না। শ্রবণমান রিপোর্টও পাঠাতে হয়। আপনি সব শর্ত পূরণ করে প্রতিযোগিতায় অংশ নিন নিশ্চয়ই আবারো শ্রেষ্ঠ শ্রোতার পুরস্কার জিতবেন।
আশরাফুর রহমান: আরেকটি বিষয়- ২০২২ ও ২০২৩ সালের প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের কাউকেই আমরা পুরস্কার পাঠাইনি। তবে হ্যাঁ, ২০২২ সালের পুরস্কার কিছুদিনের মধ্যেই পাবেন আশা করি। এ নিয়ে মন খারাপের কিছু নেই। নিয়মিত ইমেইল পাঠানোয় আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আসরের এ পর্যায়ে সরাসরি কথা বলব বাংলাদেশি এক শ্রোতাবন্ধুর সঙ্গে। প্রথমেই তার পরিচয় জানা যাক।
আকতার জাহান: সাক্ষাৎকারের পর আবারো ইমেইলের দিকে নজর দিচ্ছি। বাংলাদেশের পিরোজপুর জেলার মঠবাড়ীয়া থানার দক্ষিণ বন্দর কর্মকার পট্টি থেকে কৃষ্ণ কর্মকার কৌশিক পাঠিয়েছেন এবারের চিঠিটি।
তিনি লিখেছেন, “২০ মে তারিখে প্রচারিত সব অনুষ্ঠান খুবই ভালো লেগেছে। বিশেষ করে ‘জ্ঞান-বিজ্ঞানে ইরানিদের বিশেষ অবদান’ শীর্ষক অনুষ্ঠানটি চমৎকার ছিল। এরপর পত্রপত্রিকার পাতার আসর কথাবার্তাও ভালো লেগেছে। এতো সুন্দর অনুষ্ঠান উপহার দেওয়ার জন্য রেডিও তেহরানকে অশেষ ধন্যবাদ জানাই।”
নাসির মাহমুদ: আমাদের অনুষ্ঠানমালা আপনার ভালো লাগছে জেনে আমাদেরও ভালো লাগল। তো নিয়মিত ইমেইল পাঠানোর জন্য ভাই কৃষ্ণ কর্মকার কৌশিক আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
এবারের মেইলটি পাঠিয়েছেন বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জের গুরুদয়াল সরকারি কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোঃ শাহাদত হোসেন। তিনি লিখেছেন, “একসময় প্রচলিত ছিল যে, জ্ঞানই শক্তি। কিন্তু এখন এটি সর্বজনবিদিত যে, তথ্যই শক্তি। এছাড়া দুনিয়াকে জানার জন্য,বোঝার জন্য এবং নিজের সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য তথ্য দরকার। রেডিও তেহরান আমাদের মাঝে নিরন্তর সে তথ্য বিতরণ করে চলছে। প্রতিদিন আমরা দেশ-বিদেশের খবর পেয়ে থাকি রেডিও তেহরান থেকে। পেয়ে থাকি ইরান বিষয়ক নানা তথ্য। অধিকন্তু জীবনকে সুন্দর করে গড়ে তুলার পরামর্শও পাই এ বেতার কেন্দ্রটি হতে,পাই ইসলামকে জানার সুযোগ। এতকিছুর সমাহার যে রেডিও তেহরান সে বেতার কেন্দ্রের জনপ্রিয়তা দিন দিন যে বাড়বে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।”
আশরাফুর রহমান: ভাই শাহাদত হোসেন, রেডিও তেহরান সম্পর্কে চমৎকার মূল্যায়নের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আশা করি আবারো লিখবেন।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার বারুইপাড়া থেকে এস এম নাজিম উদ্দিন পাঠিয়েছেন এবারের মেইলটি। এতে তিনি ইরানের ইসলামি বিপ্লবের নেতা মরহুম ইমাম খোমেনী (রহ.)-এর ৩৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে একটি লেখা পাঠিয়েছেন। ৬১৪ শব্দে বিশাল লেখাটির কিছু অংশ পড়ে শোনাচ্ছি। নাজিমউদ্দিন ভাই লিখেছেন-
আকতার জাহান: “১৯৮৯ ইমাম খোমেনী (রহ.) এ পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলেও সারা বিশ্বে হাজার হাজার খোমেনীর জন্ম হয়েছে, তারা ইমাম খোমেনীর চিন্তা-চেতনাকে লালন করছে এবং ইমামের নীতি-আদর্শকে সামনে রেখে পথ চলা অব্যাহত রেখেছেন। বিশ্বের প্রতিটি দেশেই ইমাম খোমেনী (রহ.)-র চিন্তা ও আদর্শ প্রভাব ফেলতে সক্ষম হয়েছে। গোটা বিশ্বের স্বাধীনচেতা মানুষগুলো সত্যের পথে চলার ক্ষেত্রে নতুন করে সাহস পেয়েছে।”
নাসির মাহমুদ: নাজিম ভাই আরও লিখেছেন, “বিশ্বের আধিপত্যকামীদের বুকে কাঁপন সৃষ্টিকারী অবিসংবাদিত নেতা ইমাম খোমেনী (রহ.)'র মৃত্যুর খবরে, সেদিন অনেকেই এটা ভেবেছিল যে, ইমাম খোমেনী (রহ.)'র ইন্তেকালের মধ্য দিয়ে তার চিন্তা-চেতনা ও আদর্শেরও মৃত্যু ঘটবে এবং বিশ্বব্যাপী অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে যে প্রতিরোধের ধারা সূচিত হয়েছে, তা স্তব্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু ইমামের মৃত্যুর তিন দশকের পরেও তাঁর চিন্তা-চেতনা ও আদর্শের প্রভাব কমেনি বরং কোন কোন ক্ষেত্রে তা বৃদ্ধি পেয়েছে। ইমাম খোমেনীর চিন্তা ও আদর্শ ইরানসহ গোটা বিশ্বকেই প্রভাবিত করেছে।”
ইমাম খোমেনী (রহ.)'র দিকনির্দেশনাগুলো মজলুম মানুষের অনুপ্রেরণা হয়ে দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়ুক এই প্রত্যাশা করে লেখাটি শেষ করেছেন নাজিম ভাই।
আশরাফুর রহমান: সময়োপযোগী লেখাটির জন্য নাজিমউদ্দিন ভাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে আসরের শেষ মেইলটি ওপেন করছি। এটি এসেছে- বাংলাদেশের দিনাজপুর জেলার বোচাগঞ্জ থানার গোপালপুর থেকে। আর পাঠিয়েছেন মোঃ মেহেদি হাসান।
তিনি লিখেছেন “রেডিও তেহরানের প্রতিটা অনুষ্ঠানই আমার খুব ভালো লাগে। সবচেয়ে ভালো লাগে চিঠি ও ইমেলের জবাবের আসর প্রিয়জন। প্রিয়জনে এটাই আমার প্রথম ইমেইল। জবাব পেলে নিয়মিত লিখব- কথা দিলাম।”
আকতার জাহান: ভাই মেহেদি হাসান, প্রথম মেইলের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। আশা করি এখন থেকে নিয়মিত লিখবেন।
তো শ্রোতাবন্ধুরা, ঘড়ির কাঁটা টিক টিক করে জানিয়ে দিচ্ছে যে, আজ আর আমাদের হাতে তেমন সময় নেই। বিদায় নেওয়ার আগে আজও রয়েছে একটি গান। ‘বাবা মানে হাজার বিকেল’ শিরোনামের গানটির কথা ও সুর তাসনিম সাদিয়া’র। আর গেয়েছেন তরুণ কণ্ঠশিল্পী সম্রাট জাহাঙ্গীর। (গানের অডিও দিতে হবে এখানে)
নাসির মাহমুদ: তো শ্রোতাবন্ধুরা, আপনারা গানটি শুনতে থাকুন আর আমরা বিদায় নিই প্রিয়জনের আজকের আসর থেকে।