আগস্ট ১১, ২০১৯ ২০:৩০ Asia/Dhaka

কাশ্মীরের ৩৭০ ও ৩৫-এ অনুচ্ছেদ বাতিল ফ্যাসিবাদী দল বিজেপির রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। রেডিও তেহরানকে দেয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে একথা বলেছেন পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট সমাজকর্মী, রাজনৈতিক ভাষ্যকার ও ভাষা-চেতনা সমিতির সম্পাদক ড. ইমানুল হক। তিনি বলেন, দেশে যখন মারাত্মক অর্থনৈতিক সংকট চলছে, সামাজিক সংকট চলছে, মানুষ যখন অন্ন-বস্ত্রের দাবিতে ক্ষুব্ধ তখন মানুষের দৃষ্টি ঘোরাতে কাশ্মীরের বাদ্য বাজাচ্ছে।

সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ ও উপস্থাপনা করেছেন গাজী আবদুর রশীদ।

  • সংবিধান বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কাশ্মীর থেকে ৩৭০ এবং ৩৫-এ অনুচ্ছেদ বাতিল করা সাংঘাতিক ভুল সিদ্ধান্ত। এরজন্য অনেক বড় মাশুল দিতে হবে।
  • বিজেপি সৃষ্ট সংকট থেকে ক্ষুব্ধ মানুষের দৃষ্টি ফেরানোর জন্য  কাশ্মীরের এই ঘটনা ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। 
  • ভারতের সাধারণ মানুষ যখন খাদ্য-বস্ত্র ও মৌলিক অধিকার চায় তখনই কাশ্মীরে যুদ্ধের বাদ্য বাজিয়ে দেয়া হয়।
  • সংবিধান বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই দুটো ধারা বাতিলের ফলে কাশ্মীর তার পুরনো অবস্থানে ফিরে গেল অর্থাৎ ভারতের সঙ্গে তার আর যোগ থাকল না। এটি অত্যন্ত মারাত্মক কথা।
  • কাশ্মীরের ৩৭০ ও ৩৫-এ অনুচ্ছেদ বাতিল একটি ফ্যাসিবাদী দল বিজেপির রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত।

রেডিও তেহরান: জনাব, ড. ইমানুল হক, ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ও ৩৫-এ অনুচ্ছেদ বাতিল করে জম্মু-কাশ্মীরকে ভারতের অংশ ঘোষণা করেছে নরেন্দ্র মোদির সরকার। কেউ কেউ একে দিল্লির কাশ্মীর দখল বলে মন্তব্য করেছেন। আপনার কী মনে হয় এটি স্থায়ী হবে? কেন এমন করা হলো..

ভারতের সংসদে কাশ্মীরের ৩৭০ ও ৩৫-এ ধারা বাতিলের ঘোষণা

ড. ইমানুল হক: দেখুন, কাশ্মীরের ৩৭০ ও ৩৫-এ অনুচ্ছেদ বাতিল একটি ফ্যাসিবাদী দল বিজেপির রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। যখন ভারতে তীব্র অর্থনৈতিক সংকট চলছে তখন এরকম একটি সিদ্ধান্ত নেয়া হলো। অনেক বড় একজন শিল্পপতি কাফে কফি ডে মালিক ভি জি সিদ্ধার্থ যার একলক্ষ ৫ হাজার বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা ছিল।  তিনি অর্থনৈকি সংকটে পড়ে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন। অন্যান্য বড় বড় শিল্পপতিরা মুখ খুলছেন। ২৯ টি ইস্পাত কারখানো বন্ধ হয়ে যাওয়ার মুখে। হিমাচল প্রদেশে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতন অর্ধেক করে দিয়েছে বিজেপি সরকার। এককথায় ভারতে বর্তমানে চরম অর্থনৈতিক সংকট চলছে। এরমাঝে উন্নাওয়ে মর্মান্তিক ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এটি নির্ভয়া কাণ্ডের চেয়েও মারাত্মক। সেই ঘটনাও এখন সামনে এসেছে এবং তাদেরকে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। ফ্যাসিবাদী বিজেপি দলের ওপরের সারির অনেক নেতারা এরসাথে যুক্ত আছেন। এসব ঘটনা যখন মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে সেদিক থেকে মানুষের দৃষ্টি ফেরানোর জন্য  কাশ্মীরের এই ঘটনা ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। আমাদের এখানে যখনই সাধারণ মানুষ খাদ্য-বস্ত্র ও মৌলিক অধিকার চায় তখনই কাশ্মীরে যুদ্ধের বাদ্য বাজিয়ে দেয়া হয়।

দ্বিতীয়ত আমি বলব এটি হচ্ছে জম্মু-কাশ্মীর ভূখণ্ডকে দখল করার বিষয়। আসলে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু থেকে মানুষের দৃষ্টি সরানোই মূল লক্ষ্য। যাকে বলা যাবে জল ঘোলা করা। তবে ভারতের অনেক সংবিধান বিশেষজ্ঞ বলছেন- কাশ্মীর থেকে ৩৭০ এবং ৩৫-এ অনুচ্ছেদ বাতিল করা সাংঘাতিক ভুল সিদ্ধান্ত। এরজন্য অনেক বড় মাশুল দিতে হবে।

রেডিও তেহরান: এই যে আপনি সংবিধান বিশেষজ্ঞদের রেফারেন্স দিয়ে বললেন-৩৭০ ও ৩৫-এ অনুচ্ছেদ  বাতিল- একটি ভুল সিদ্ধান্ত। আমরা দেখলাম ব্যারিস্টার আসাদউদ্দিন ওয়াইসিও সংসদে বললেন- এটি সরকারের ঐতিহাসিক ভুল সিদ্ধান্ত কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ  সংসদে উল্টো বললেন। তিনি বললেন- এটি ঐতিহাসিক ভুল সিদ্ধান্ত নয়; একটি ঐতিহাসিক ভুল আমরা সংশোধন করেছি। কী বলবেন আপনি?

অবরুদ্ধ কাশ্মীর

ড. ইমানুল হক: দেখুন, আমি সংবিধান বিশেষজ্ঞদের কথা বলছি। ভারতের একজন অত্যন্ত সম্মানিত ব্যক্তি সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল সোলি সোরাবজি এর কথা বলছি। ব্যারিস্টার আসাদউদ্দিন ওয়াইসি এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কি বলেছেন আমি সেকথা বলব না কারণ তারা রাজনীতিবিদ। তারা বলেছেন ভারতের সংবিধান অনুযায়ী ৩৭০ ধারা ছিল কাশ্মীর এবং ভারতের মধ্যে ছিল একটা ব্রিজ। অনেক সংবিধান বিশেষজ্ঞ বলছেন এই দুটো ধারা বাতিলের ফলে কাশ্মীর তার পুরনো অবস্থানে ফিরে গেল অর্থাৎ ভারতের সঙ্গে তার আর যোগ থাকল না। এটি অত্যন্ত মারাত্মক কথা। আর কাশ্মীর বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বর্তমানে তেমন কোনো তৎপরতা ছিল না। এটা ছিল ভারতের আভ্যন্তরীণ বিষয়। মাঝে মধ্যে পাকিস্তানের সাথে দ্বিপাক্ষিক কথাবার্তা হতো। কয়েকদিন আগে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কাশ্মীর বিষয়ে মধ্যস্থতার কথা বলেছেন। জাতিসংঘ থেকেও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এ প্রসঙ্গে কথা বলেছেন। এমন ঘটনা এর আগে কখনও ঘটে নি। ভারতের সংসদের মধ্যে দাঁড়িয়ে একজন সংসদ সদস্য বলেছেন,' কাশ্মীরকে প্যালেস্টাইন বানিয়ে দেয়া হচ্ছে'।

রেডিও তেহরান:  ড. ইমানুল, আপনি কী মনে করেন মোদি সরকারের এই পদক্ষেপের মধ্যদিয়ে তাদের সাম্প্রদায়িক ও বর্ণবাদী চরিত্র প্রকাশ পেয়েছে?

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ

ড. ইমানুল হক: আমি এককথায় বলব এটি কেন্দ্রীয় সরকারের একটি হঠকারী সিদ্ধান্ত। এটি সংবিধানের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা। এই ঘটনার পর প্রশ্ন উঠেছে ৩৭০ ধারা যদি না থাকে তাহলে ৩৭১ ধারা কেন থাকবে। সেক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নিজের রাজ্য গুজরাটে 'কচ্ছে' জমি কেউ কিনতে পারেন না। মহারাষ্ট্রের বিধর্ব অঞ্চলে বাইরের লোক জমি কিনতে পারে না। সিকিম, অরুণাচল, মিজোরাম এসব রাজ্যে যেতে গেলে অনেক ক্ষেত্রে ইনার লাইন পারমিট নিতে হয়। কাশ্মীরে যেতে গেলে তো ইনারলাইন পারমিট লাগত না। কাশ্মীরে অবাধে মানুষ যেতে পারত। ফলে কাশ্মীরের দুটো অনুচ্ছেদ যখন তুলে দেয়া হলো তখন অন্যান্য রাজ্যের ওই ধরনের আইন কেন থাকবে। তাছাড়া বেশ কয়েকটি রাজ্য আছে যেমন নাগাল্যান্ড, মিজোরাম, সিকিম এসব রাজ্যে আয়কর দিতে হয় না। অন্যদিকে কাশ্মীরে যখন ভারত সরকার টাকা দিত তখন শতকরা ৭০ ভাগ দেয়া হতো ঋণ হিসেবে আর বাকি শতকরা ৩০ ভাগ অনুদান হিসেবে। যেমন পশ্চিমবঙ্গসহ অন্যান্য রাজ্যে দেয়া হয়ে থাকে। নাগাল্যান্ডসহ কয়েকটি রাজ্যকে সরকার টাকা দেয় তখন শতকরা ৯০ ভাগ দেয়া হয় অনুদান হিসেবে বাকি ১০ ভাগ ঋণ হিসেবে।এ ধরনের আইন কেন থাকবে? এরইমধ্যে গোর্খাল্যান্ডের দাবি উঠেছে। নাগাল্যান্ডে ভয় সৃষ্টি হয়েছে যে সেখানেও পরিবর্তন আসতে পারে। যেসব রাজ্যে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন ছিল এবং তা স্থিমিত হয়ে গিয়েছিল।সেগুলো আবার জেগে উঠেছে। 

কাশ্মীরকে দুই ভাগ 

কাশ্মীরের চারটি অংশ আছে। একটি অংশ ভারতের সঙ্গে থাকতে চায়। ওই অংশটি ভারতের সংবিধান মেনেই ভোটে অংশ নিয়েছে এবং বারবার ক্ষমতায় গেছে। বিজেপিও তাদের সাথে আঁতাত করেছে। আরেকটি অংশ আছে তারা স্বাধীনতাকামী। তারা কাশ্মীরে যেতে চান।তাদের কথা আলাদা। সে ব্যাপারে আমি কোনো মন্তব্য করব না। কিন্তু যারা ভারতের সঙ্গে থাকতে চান সেই মানুষগুলোকে কেন আমরা বিপদের মধ্যে ফেলব? কাশ্মীরের সাবেক ৩ জন মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেফতার করা হলো- কেন? কেউ এর উত্তর দিতে পারছেন না। কাশ্মীরে এমন অবস্থা তৈরি করা হয়েছে যে বনধের মধ্যেও এরকম চেহারা হয় না। এটি অত্যন্ত দুভার্গ্যজনক, বেদনা এবং যন্ত্রণাদায়ক। আমরা যারা ভারতের নাগরিক এবং গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে বিশ্বাস করি, সংবিধানে বিশ্বাস করি; আমরা মনে করি সংবিধানের মান্যতা দেয়া উচিত। আম্বেদকর বলেছিলেন সংবিধান যদি বদ লোকের হাতে পড়ে তাহলে ভয়ানক বিপদ হতে পারে। আপনারা দেখবেন এই প্রথম ভারতবর্ষের কোণে কোণে, সব রাজ্যে এ বিষয়ে প্রতিবাদ হয়েছে। প্রতিটি রাজ্যে মিছিল হচ্ছে, মিটিং হচ্ছে- প্রতিবাদ হচ্ছে। সুতরাং ভারত কখনও একমুখী বা একদেশদর্শী নয়।

রেডিও তেহরান: নরেন্দ্র মোদি জাতীয় নির্বাচনে বিশাল বিজয়ের মাধ্যমে সরকার গঠনের পর কিন্তু এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সে ক্ষেত্রে কী বলা যায়- এই পদক্ষেপের প্রতি ভারতের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের সমর্থন রয়েছে? 

কাশ্মীরে প্রতিবাদ

ড. ইমানুল হক: দেখুন, নির্বাচনে বিজেপির বিশাল জয়ের ব্যাপারে প্রশ্ন রয়েছে। অনেকে ইভিএম পদ্ধতির ভোটে বিশ্বাস করে না। যে কারণে গোটা ভারতে ব্যালটের মাধ্যমে ভোটের দাবি উঠেছে। স্লোগানে বলা হচ্ছে ইভিএম হটাও ব্যালট লে আও। কর্নাটক ও রাজস্থানে দেখা গেছে ইভিএম ভোটের ৭ দিন আবার যখন ব্যালটে ভোট হলো তখন বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে কংগ্রেস বিজয়ী হলো সেখানকার পুরো সভার নির্বাচনে। যেখানেই ব্যালটে ভোট হয়েছে সেখানে বিজেপি হেরে গেছে। সুতরাং ভারতের সংখ্যাগরিষ্ট মানুষ বিজেপির সঙ্গে আছে এমনটি আমার মনে হয় না। কাশ্মীরের ৩৭০ ধারা ও ৩৫-এ অনুচ্ছেদ বাতিলের পক্ষে যত মিছিল হয়েছে তার চেয়ে বেশি প্রতিবাদ মিছিল হয়েছে বাতিলের বিপক্ষে। কাশ্মীরকে তার পুরনো রাজ্যে ফিরিয়ে দেয়ার পক্ষেই বেশিরভাগ মিছিল মিটিং হয়েছে।

রেডিও তেহরান: ড. ইমানুল হক, তাহলে কী একথা স্পষ্ট করে বলা যায় যে কাশ্মীর নিয়ে ভারত সরকারের  ওই সিদ্ধান্তের  বিপক্ষেই সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের অবস্থান বা সমর্থন?

কাশ্মীর সংকট

ড. ইমানুল হক:  জ্বি, সভা-সমিতি, মিটিং-মিছিল যদি নিরীখ হয় তাহলে তার আলোকে আমি আবারও বলব কাশ্মীর রাজ্যের পুরনো অবস্থান ফিরিয়ে দেয়ার পক্ষেই এসব বেশি হয়েছে। কাশ্মীর রাজ্যের মর্যাদা দেয়ার পক্ষেই মানুষ। ভারতের সংবিধানের মান্যতা দেয়ার পক্ষে।ভারতবর্ষ জোড়া লাগানোর পক্ষে কাটা-ছেড়ার মধ্যে নয়।

রেডিও তেহরান:  ড, ইমানুল হক, আপনি বললেন আপনারা ভারতবর্ষ কাটার বা ভাঙা-ছেড়ার পক্ষে নন। কিন্তু কাশ্মীরের দুটি অনুচ্ছেদ বাতিল করার পর প্রতিবেশী পাকিস্তানের প্রসঙ্গটি চলে আসে। রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর কোর কমান্ডারদের বৈঠক হয়েছে মঙ্গলবার এবং কাশ্মীরি জনগণের জন্য দায়িত্ব পালনের বিষয়ে তাদের প্রস্তুতির কথা ঘোষণা করেছে। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান যুদ্ধের কথাও বলেছেন। তো আপনার কী মনে হয় কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে ভারত-পাকিস্তান নতুন করে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে?

ড. ইমানুল হক: দেখুন, ভারতের একজন শান্তিপ্রিয় নাগরিক হিসেবে, বিশ্ববাসী হিসেবে আমার একটাই প্রার্থনা কোনো যুদ্ধ যেন না হয়। আর যুদ্ধ কোনো কোনো সমাধান নয়। হিংসা আরও হিংসাকে ডেকে আনে। এব্যাপারে আরেকটা কথা আমি বলতে চাই সেটি হচ্ছে বেশি গিললে হজম হয় না। বদহজম হয়ে যায়। বিজেপির নেতৃত্বাধীন সরকার একটু বেশিই গিলে ফেলেছে। ফলে বদহজম হয়েছে।

রেডিও তেহরান: ড. ইমানুল হক-আপনি বললেন যুদ্ধ সমাধান নয়; আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে বিশ্বাসী। কিন্তু কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে ভারত-পাকিস্তান এখন অনেকটা মুখোমুখি। সেখানে যুদ্ধের একটা ক্ষেত্র তো তৈরি হয়ে গেছে। এবং পলিটিক্যাল ইকোনমি বলে একটা কথা রয়েছে। এরকম পরিস্থিতিতে- উত্তেজনা, অস্ত্র বিক্রি-নানা বিষয় চলে আসে। আপনি কি এমনটি মনে করেন না..

Image Caption

ড. ইমানুল হক: জ্বি আপনি ঠিকই বলেছেন। এ বিষয়ে অনেক প্ররোচনা ও ইন্ধন থাকবে। আমেরিকা ও ইসরাইলের ইন্ধন থাকবে। একজন শান্তিপ্রিয় নাগরিক হিসেবে চাইবো কাশ্মীর সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান হোক। আলোচনার টেবিলে বসে সেটি হোক। অবিলম্বে সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাহ, মেহবুবা মুফতি এবং ওমর আবদুল্লাহসহ সমস্ত রাজনৈতিক নেতাকে মুক্তি দেয়া হোক। সব বিদেশি সাংবাদিককে সেখানে অবাধে খবর সংগ্রহ করতে হোক। আবারও বলব যুদ্ধ কোনো সমাধান নয়। প্রয়োজনে দেশীয় বা আন্তর্জাতিক আদালতে যেতে হবে। সব পথ খোলা আছে। জাতিসংঘ আছে।সেইসব জায়গায় সমাধানের পথ খোলা আছে এবং সেই পথেই আমাদের হাঁটতে হবে। এছাড়া বিকল্প কোনো রাস্তা নেই।

রেডিও তেহরান: জনাব ড, ইমানুল হক-আপনি যেমনটি বললেন এবং একথা সত্যি যে, সামরিক উপায়ে এ সংকটের সমাধান হবে বলে মনে হয় না। তাহলে আপনি কূটনৈতিক বা রাজনৈতিক প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতায় সমাধানের পথ খোলা আছে বলে আপনি মনে করেন?

ড. ইমানুল হক:  আমি বলব ভারতের সংবিধানের মধ্যেই কাশ্মীর সংকট সমাধানের পথ খোলা আছে। কাশ্মীরকে যেভাবে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে; আমি বলব দু টুকরো করে দেয়া হয়েছে সেটা অসাংবিধানিক ও অগণতান্ত্রিক। সুতরাং সংবিধান বিশেষজ্ঞরা বলছেন এটি কোনোভাবেই সংবিধানসম্মত হয় নি। আমিও একইমত পোষণ করি। সুতরাং আমি আবারও বলব আইনের মাধ্যমে এ সংকটের সমাধান খুঁজে পাওয়া যাবে।#

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/১১