কথাবার্তা: মৃত্যুপুরী নিউইর্য়কে আতঙ্কে বাংলাদেশিরা, দেশেও মুত্যু বাড়ছে
-
পত্রপত্রিকার পাতার গুরুত্বপূর্ণ খবরের বিশ্লেষণ
সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা: ৭ এপ্রিল মঙ্গলবারের কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি বাবুল আখতার। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। এরপর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিশ্লেষণে যাবো। বিশ্লেষণ করবেন সহকর্মী সিরাজুল ইসলাম।
বাংলাদেশের শিরোনাম:
- ২৪ ঘন্টায় ৪১ জনের করোনা শনাক্ত, মৃত ৫-দৈনিক প্রথম আলো
- প্রথম আলোর অন্য একটি খবরের শিরোনাম-দেশে কর্মহীনদের জন্য রেশনের ব্যবস্থা: প্রধানমন্ত্রী
- এবার ঢাকা ছেড়ে গেলেন রাশিয়ার ১৭৮ নাগরিক-দৈনিক ইত্তেফাক
- মৃত্যুপুরী নিউইর্য়কে উদ্বেগ; আতঙ্কে বাংলাদেশিরা-দৈনিক মানবজমিন
- বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনি আবদুল মাজেদ গ্রেফতার, কারাগারে প্রেরণ-দৈনিক যুগান্তর
- মিলল না চিকিৎসা- মৃত্যুর কাছে হার ঢা.বি ছাত্রের-বাংলাদেশ প্রতিদিন
- সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীকে কঠোর হওয়ার নির্দেশ-দৈনিক সমকাল
ভারতের শিরোনাম:
- ভারতে করোনায় আক্রান্ত বেড়ে ৪৪২১, মৃত্যু ১১৪ জন -দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা
- বিরোধীতা ভুলে সমর্থন , বেতন কমানোর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাল সোনিয়া গান্ধী-দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন
- আগামী এক সপ্তার মধ্যে ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৭ হাজার ছুঁতে পারে-দৈনিক আজকাল
পাঠক/শ্রোতা! এবারে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিশ্লেষণে যাব।
১) গত ২৪ ঘন্টায় দেশে আরো ৪১ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া মুত্যু হয়েছে ৫ জনের। এ পরিস্থিতিকে আপনি কিভাবে দেখছেন?
২) সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলে ১ জন মার্কিন সেনা কর্মকর্তা নিহত হয়েছে।সিরিয়ায় মার্কিন সেনা কর্মকর্তা নিহত হওয়ার ঘটনা খুব একটা নেই। বিষয়টি নিয়ে আপনার পর্যবেক্ষণ কী?
বিশ্লেষণের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবর।

বিশ্বজুড়ে মিডিয়ায় করোনার আপডেট সম্পর্কিত খবর বিশেষ গুরুত্বসহ পরিবেশিত হযেছে। প্রথমে বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি সম্পর্কিত কয়েকটি খবর। দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৭, নতুন আক্রান্তের সংখ্যা-৪১ জন।যুগান্তরের কয়েকটি খবর-করোনার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি ৩০ মে পর্যন্ত দীর্ঘ হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মত করোনা মোকাবেলায় সমন্বয়ের অভাব রয়েছে।ডা. দেবি প্রসাদ শেঠি বলেছেন, করোনা বিশ্বের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে হত্যা করেছে। রাজধানী ঢাকার প্রবেশ পথে কড়াকড়ি আরোপ।
বাংলাদেশের অন্যান্য খবর:
কারাগারে বঙ্গবন্ধুর খুনি ক্যাপ্টেন মাজেদ-ইত্তেফাকসহ প্রায় সব দৈনিকে প্রকাশিত এ খবরে লেখা হয়েছে, বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত খুনি ক্যাপ্টেন (অব.) আব্দুল মাজেদকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সোমবার দিবাগত রাতে গ্রেফতারের পর মঙ্গলবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। আদালতে পেশ করার পর তার মামলার সমস্ত নথি দেখে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
মঙ্গলবার দুপুর সোয়া ১২ টার দিকে ফৌজদারি কার্যবিধি ৫৪ ধারায় তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)। এসময় বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় গ্রেফতার না দেখানো পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করে কাউন্টার টেরোরিজম। আবেদনে বলা হয়, আসামি ক্যাপ্টেন (অব.) আবদুল মাজেদ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। সে দীর্ঘদিন পলাতক ছিল। এই মামলায় তাকে গ্রেফতার না দেখানো পর্যন্ত কারাগারে আটক রাখার আবেদন করছি। আদালত শুনানি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।গ্রেফতারের পর মাজেদ জানান,তিনি ২৪-২৫ বছর ধরে ভারতের কলকাতায় অবস্থান করছিলেন। সেখান থেকে তিনি নিজেই বাংলাদেশে এসেছেন। তবে কবে এসেছেন সে সম্পর্কে কিছু বলেননি তিনি। এর আগে, সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটায় মিরপুর সাড়ে ১১ নম্বর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের করোনা পরিস্থিতি:

এখন পর্যন্ত চীনসহ গোটা বিশ্বের ২০৩ টি দেশে কোভিড-১৯ এ মোট মৃত্যুর সংখ্যা- ৭৪,৭০২ জন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা- ১৩,৪৬,৯৭৪ জন এবং মোট সুস্থ্য হয়েছেন-২,৭৮,৬৯৮ জন। যে কারণে যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসের মহামারী-দৈনিক যুগান্তরের এ খবরে লেখা হয়েছে, করোনাভাইরাস মহামারীতে চরম বিপর্যয়কর পরিস্থিতিতে পড়েছে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। করোনায় আক্রান্তের তালিকায় শীর্ষদেশ হিসেবে রয়েছে দেশটি। চীনের আসা সাড়ে চার লাখ পর্যটকের ভ্রমণই যুক্তরাষ্ট্রের সর্বনাশ ডেকে এনেছে। চীনা নববর্ষের প্রাক্কালে করোনার রহস্যময় নিউমোনিয়ার মতো রোগ (তখনও অজানা) ছড়িয়ে পড়ার পর এশিয়ার দেশটি থেকে এই বিপুল সংখ্যক পর্যটক সরাসরি ফ্লাইটে আমেরিকায় এসে পৌছায়। এর মধ্যে করোনার উপকেন্দ্র খ্যাত হুবেই প্রদেশের উহান শহরের কয়েক হাজার মানুষ রয়েছে। ওয়াশিংটনের অভিযোগ, প্রথম থেকেই করোনার তথ্য গোপন করেছে বেইজিং। আর ডিসেম্বর নয়, তার আগেই দেশটিতে ছড়িয়ে পড়ে এই ভাইরাস। এভাবে তাদের মাধ্যমেই গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে এই ভাইরাস।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম করোনার রোগী শনাক্ত হয় ২০ জানুয়ারি। এর দুই সপ্তাহ পর ২ ফেব্র“য়ারি কয়েকটি শহরে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। কিন্তু এরপরও বিমানের ফ্লাইট বন্ধ হয়নি। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিদেশ থেকে আসা এসব ব্যক্তিদের আসলে কতজন করোনায় আক্রান্ত ছিলেন তা নিণর্য় করা মুশকিল। তবে এটা সত্য যে, তাদের কিছু অংশের কোনো উপসর্গই ছিল না।
করোনায় আমেরিকায় ডাক্তারসহ আরও ৮ জন বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। আর চীনে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা শূন্যের কোঠায় ।বিশ্বে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ৭০ হাজার ছাড়িয়েছে, ইউরোপে তেজ কমছে ভয় এশিয়ায়।
করোনায় প্রবাসীদের বেকারত্ব বাড়ছে-অসহায় কয়েক লাখ প্রবাসী * জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের-দৈনিক যুগান্তরের এ প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, করোনাভাইরাসের আঘাতে সারাবিশ্বই স্থবির। এতে বেকার হয়ে পড়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকা লাখ লাখ প্রবাসী। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিদেশের মাটিতে মারা গেছেন অনেকে। এ ছাড়াও সৌদি আরব, কুয়েতসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে প্রায় দেড় লাখ অভিবাসী আটকা পড়েছেন। সবচেয়ে বেশি বিপদে আছেন যাদের বৈধ ভিসা নেই। এদের বড় অংশই কাজ ও আয়ের অভাবে না খেয়ে দিনাতিপাত করছেন।
অন্যদিকে প্রবাসীদের এই দুরবস্থা রেমিটেন্সেও প্রভাব পড়ছে। গত দুই মাসে ৩৬ কোটি ডলার রেমিটেন্স কমেছে। যা স্থানীয় মুদ্রায় তিন হাজার কোটি টাকা। এ অবস্থায় প্রবাসীদের জন্য সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাসের মাধ্যমে সহায়তার কথা বলছেন, অর্থনীতিবিদ ও এ খাতের সংশ্লিষ্টরা।
মৃত্যুপুরী নিউইয়র্কে উদ্বেগ-আতংকে বাংলাদেশিরা-দৈনিক মানবজমিনের এ প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে,
আমেরিকায় যত বাংলাদেশির বসবাস তার বড় অংশই থাকেন নিউইয়র্কে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে সেই নিউইয়র্কই এখন করোনার এপি সেন্টার! এটি যেনো মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। উদ্বেগ -আতংকে আছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটের তথ্য মতে, করোনায় আক্রান্ত হয়ে নিউইয়র্কে এ পর্যন্ত মারা গেছেন পঞ্চাশের অধিক বাংলাদেশি। কনসাল জেনারেল ডা. সাদিয়া ফয়জুন্নেছার ভাষ্য মতে, কমিউনিটি মারফত আক্রান্ত এবং মৃত্যুর তথ্য পান তারা। যুক্তরাষ্ট্র সরকার পরিবার ছাড়া অন্যদের কোনো রোগী বা রোগ সম্পর্কে তথ্য দেয় না। করোনার এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকানদের তথ্য পাওয়া আরও দুষ্কর হয়ে পড়েছে। ফলে বেসরকারী তথ্য কম-বেশি হতে পারে। ডা. সাদিয়া এটা স্বীকার করেন যে অবস্থা মোটেও ভাল নয়।
বিশেষ করে বাংলাদেশ কমিউনিটিতে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে হু হু করে। বিবিসিও তাই বলছে। তাদের রিপোর্ট মতে, বিদেশে যত বাংলাদেশি করোনা আক্রান্ত তার বেশিরভাগই যুক্তরাষ্ট্রে, প্রধানত নিউইয়র্কে। তাদের হিসাব মতে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে ৬৩ জনের বেশি বাংলাদেশি মারা গেছেন। যার প্রায় ৮৫ ভাগই নিউইয়র্কে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনও তাই বলছেন। তার মতে, করোনায় দুনিয়ার দেশে দেশে আক্রান্ত বাংলাদেশির সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, বিশেষত: নিউইয়র্কের সংখ্যাটা সবচেয়ে উদ্বেগজনক।
এবার ভারতের কয়েকটি খবর তুলে ধরছি
দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকার প্রধান খবরে লেখা হয়েছে, প্রতি দিনই করোনাভাইরাসের আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে দেশে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের রিপোর্ট অনুযায়ী, মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪৪২১।গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ৫ জনের মৃত্যু হয়। ফলে এই মুহূর্তে দেশে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১১৪। সুস্থ হয়েছেন ৩২৫ জন। তবে দৈনিক আজকালের একটি খবরে লেখা হয়েছে, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ভারতে করোনা আক্রান্ত’র সংখ্যা ১৭ হাজার ছুঁতে পারে।
মার্কিন চাপের কাছে নতি স্বীকার মোদির,২৪ টি ওষুধের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার কল ভারত-দৈনিক আজকালের এ শিরোনামের খবরে লেখা হয়েছে,
আন্তর্জাতিক চাপের কাছে নতিস্বীকার করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ভারত থেকে আমেরিকায় হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন রপ্তানিতে সিলমোহর দিল ভারত সরকার। করোনা লড়াইয়ে আমেরিকার প্রধান অস্ত্র হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন। আর তা পাওয়ার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদিকে। আর তারপরই করোনার চিকিৎসায় ব্যবহৃত ম্যালেরিয়ার প্রতিষেধক হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইনের রপ্তানির উপর থেকে সব বিধিনিষেধ সরিয়ে নিল।এ খবরে লেখা হয়েছে, ২৪টি ওষুধের ওপর থেকে এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।#
পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/৭