মাশরাফীর সিলেটকে হতাশ করে বিপিএলে আবার চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা
(last modified Thu, 16 Feb 2023 16:52:09 GMT )
ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৩ ২২:৫২ Asia/Dhaka
  • ৫২ বলে ৭৯ রানে অপরাজিত থাকেন জনসন চার্লস
    ৫২ বলে ৭৯ রানে অপরাজিত থাকেন জনসন চার্লস

মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার নেতৃত্বাধীন সিলেট স্ট্রাইকার্সকে হতাশ করে টানা দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) চ্যাম্পিয়ন হয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। এর আগে তারা জিতেছিল তিনবার, এবার তাদের শোকেজে উঠেছে চতুর্থ ট্রফি। ঘরোয়া এই টুর্নামেন্টে ঢাকাকে ছাপিয়ে এখন সেরা দল হলো নাফিসা কামালের কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।

আজ (বৃহস্পতিবার) শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে স্কোরবোর্ডে ৭ উইকেটে ১৭৫ রান তুলেছে সিলেট স্ট্রাইকার্স। ব্যাট হাতে সর্বোচ্চ ৭৪ রান করেছেন মুশফিকুর রহিম। জবাব দিতে নেমে ৪ বল হাতে রেখে ৭ উইকেটে জয় তুলে নেয় কুমিল্লা।

রান তাড়ায় ঝোড়ো শুরু করে কুমিল্লা। প্রথম ওভারে রুবেলের বলে মাত্র ৫ রান এলেও দ্বিতীয় ওভারে তানজিমকে পিটিয়ে দুই ওভারে স্কোরবোর্ডে ২২ রান তোলে তারা। তৃতীয় ওভারেই এই ঝড় থামান রুবেল। ফিরিয়ে দেন নারিনকে। রুবেলের শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন নারিন (১০)। তিনে নামা ইমরুলকে বিদায় করেন জর্জ লিন্ডে।

৩৪ রানে দুই উইকেট হারানো ধাক্কা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ায় কুমিল্লা। বিপদ থেকে উদ্ধার করে কুমিল্লাকে পথ দেখান লিটন। ৩৯ বলে ৫৫ রানের ইনিংস উপহার দিয়ে কুমিল্লাকে ম্যাচে ফেরান ডানহাতি এ ওপেনার।

১৩তম ওভারে লিটনের প্রতিরোধও ভাঙেন লিটন। এরপরও ম্যাচ কুমিল্লার পক্ষেই ছিল। কিন্তু নিয়ন্ত্রণ বোলিং দিয়ে ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করে মাশরাফীর সিলেট। চেষ্টা বিফলে যায়নি। দুই বিদেশি তারকা মঈন ও জনসন উইকেটে থাকার পরও মাশরাফীদের দারুণ ফিল্ডিং পাল্টে দেয় গতিপথ।

শেষ ৪ ওভারে কুমিল্লার সামনে সমীকরণ দাঁড়ায় ৫২ রানের। কিন্তু উইকেটে থাকা মঈন ও জনসনকে আটকাতে পারেনি সিলেট। দুই বিদেশি তারকাদের ব্যাটে চড়ে কঠিন সমীকরণ সহজেই পাড়ি দেয় কুমিল্লা। ১৯.২ ওভারে তুলে নেয় স্বস্তির জয়। ব্যাট হাতে ১৭ বলে ২৫ রান করেন মঈন। আর জনসন উপহার দেন ৫২ বলে ৭৯ রানের ইনিংস।

এর আগে  টস হেরে ব্যাট করতে গিয়ে প্রথম ওভারেই কুমিল্লার 'উপহার' পেয়ে যায় সিলেট। ওভার থ্রো থেকেই ওই ওভারে আসে ৮ রান। প্রথম ওভারে হয়ে যায় ১৭ রান। পরের ওভারের দ্বিতীয় বলে তৌহিদ হৃদয়কে বোল্ড করে দলের ক্ষতি কিছুটা পোষান তানভির ইসলাম। ছন্দে থাকা তৌহিদ আজ রানের খাতাও খুলতে পারেননি।

আগের ম্যাচের মতো আজও ওয়ানডাউনে মাঠে নামেন অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। কিন্তু টিকতে পারেননি। রাসেলের প্রথম স্পেলের দ্বিতীয় ওভারেই সাজঘরে ফেরেন মাশরাফী। দলীয় ২৬ রানে দুই উইকেট হারিয়ে শুরুতে ব্যাকফুটে চলে যায় সিলেট।

সেখান থেকে দলকে উদ্ধার করেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিম। শুরুর ধাক্কা সামলে তৃতীয় উইকেট জুটিতে দুজন মিলে গড়েন ৭৯ রানের জুটি। এর মধ্যে পাওয়ার প্লেতে আসে ৪২ রান। আর ৩৮ বলে ব্যক্তিগত হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন শান্ত।

পঞ্চাশ ছোঁয়ার পর শান্ত যখন আরও আগ্রাসী হচ্ছিলেন তখন তাঁর ঝড় থামালেন মঈন আলি। ইংলিশ তারকার বল উইকেট থেকে বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে আউট হন শান্ত। ৯ বাউন্ডারি ও এক ছক্কায় ৪৫ বলে ৬৪ রানে শেষ হয় তাঁর প্রতিরোধ।

শান্তর পর থিতু হওয়ার চেষ্টায় ফেরেন রায়ার্ন বার্ল। মুস্তাফিজের কাটারে পড়ে ১৩ রানে বিদায় নেন তিনি। বার্লের পর একে একে ফেরেন থিসারা পেরেরা-জর্জ লিন্ডে। কিন্তু উইকেটে ততক্ষণে থিতু হয়ে যান মুশফিক। ৩৬ বলে হাফসেঞ্চুরি করা মুশফিক শেষ পর্যন্ত উপহার দেন ৭৪ রানের অপরাজিত ইনিংস। ৪৮ বলে যা সাজানো ছিল ৫ বাউন্ডারি ও তিন ছক্কায়। মুশফিকের ব্যাটে চড়ে শেষ পর্যন্ত লড়াই করার পুঁজি পায় সিলেট স্ট্রাইকার্স।

যদিও মাঝে কুমিল্লার ক্যাচ মিস সুযোগ করে দিয়েছে সিলেটকে। এক ইনিংসে কুমিল্লা মিস করে পাঁচটি ক্যাচ। লিটন দাস ও মঈন আলিদের ক্যাচ মিসের কারণে সিলেট পায় বড় সংগ্রহ।

বল হাতে কুমিল্লার হয়ে ৩১ রানে দুই উইকেট নেন মুস্তাফিজ। একটি করে নেন রাসেল, মঈন আলি, তানভির ও নারিন। ৫২ বলে ৭৯ রান করে প্লেয়ার অব দ্যা ম্যাচ পুরস্কার পান জনসন চার্লস।

পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/১৬

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।