দ্বিতীয় দফার বিস্ফোরণে সাড়ে ১১ঘন্টা আগুনে পুড়লো তেলবাহি জাহাজ সাগর নন্দিনী-২
জাহাজের তেল ট্যাংকারে আবারো বিস্ফোরণ, নতুন দগ্ধ ১০; অসচেতনতাকে দুষছেন উদ্ধারকারীরা
ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে টানা সাড়ে ১১ ঘণ্টা পর জ্বালানি তেলবাহী জাহাজের আগুন নিভেছে। এখন জাহাজটি নিরাপদ রয়েছে জানিয়েছেন উদ্ধারকারীরা। অসচেতনতা থেকেই বারবার এমন ঘটনা ঘটছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষ। অপরদিকে জাহাজে থাকা তেল সুগন্ধা নদীতে ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে কোস্টগার্ড।
আজ মঙ্গলবার সকালে ঝালকাঠি পৌর মিনি পার্কে সংবাদ সম্মেলনে ফায়ার সার্ভিসের অপারেশন বিভাগের পরিচালক লে. কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, অসচেতনতার কারনে বারবার এমন ঘটনা ঘটছে। একই সঙ্গে এ ধরনের জাহাজগুলোতে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা যথাযথ না থাকারও অভিযোগ করেন তিনি। বিস্ফোরিত জাহাজের তেল থেকে এখন আর দুর্ঘটনার সম্ভাবনা নেই বলেও জানান তিনি।
এদিকে একই স্থানে আলাদা সংবাদ সম্মেলনে কাস্টগার্ড দক্ষিণ জোন অপারেশন কর্মকর্তা লে. শাফায়েত হোসেন সাংবাদিকদের জানান, জাহাজে থাকা তেল ছড়িয়ে পড়েছে নদীতে। তেল ছড়িয়ে পড়া রোধে অত্যাধুনিক তেল অপসারণকারী ল্যামোর সংযুক্ত বোট দিয়ে কাজ করছে কোস্ট গার্ড।
একই কোম্পানির জাহাজগুলোতে বারবার দুর্ঘটনার ব্যাপারে এ কোম্পানির ট্যাঙ্কারের ফিটনেস নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় কাগজপত্র চাওয়া হয় সাগর নন্দিনী কর্তৃপক্ষের কাছে। কিন্তু জাহাজ কোম্পানীর পক্ষ থেকে কোন সাড়া মিলছে না বলে অভিযোগ করেন কোস্ট গার্ডের কর্মকর্তা। বিষয়টি খতিয়ে দেখা উচিৎ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ঝালকাঠিতে তেলবাহী সাগর নন্দিনী-২ ট্যাংকারে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় দ্বিতীয়বারের মতো বিস্ফোরণ হয়েছে। এতে ১০ জন আহত হলেও তাদের পরিচয় পাওয়া যায়নি এখনো। গত শনিবার জাহাজটিতে প্রথম দফার বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত চারজন নিহত হয়েছেন। বিআইডব্লিউটিএর সূত্রে জানা যায়, জাহাজটি থেকে সোমবার সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত ৭ লাখ লিটার ডিজেল বের করা হয়। এরপর মজুদ ছিল ৪ লাখ লিটার পেট্রোল। এ অবস্থায় এটি বিস্ফোরিত হয়।
বিস্ফোরণের ঘটনায় আহতদের উদ্ধার করে ঝালকাঠি জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। শনিবার বিস্ফোরণের পর জাহাজটিতে উদ্ধার অভিযান চলছিল। এ অবস্থায় গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় ফের বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। যা নিয়ে দেশজুড়ে চলছে আলোচনা। আহতদের সম্পর্কে ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মইনুল হক জানিয়েছেন, জেলা পুলিশের ছয়জন ও নৌ-পুলিশের তিন সদস্য এতে আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে সাতজনকে ঝালকাঠি জেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পুলিশ হাসপাতালে এবং গুরুতর দুজনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আর প্রথম দিনের বিস্ফোরণের ঘটনায় নিখোঁজ ৪ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতরা হলেন, জাহাজের সুপারভাইজার মাসুদুর রহমান বেলাল, মাস্টার রুহুল আমিন, সরোয়ার হোসেন আকরাম ও আব্দুস ছালাম হৃদয়। গত শনিবার দুপুরে সাগর নন্দিনি-২ তেলবাহী জাহাজে বিস্ফোরণে মাস্টার ব্রিজ, স্টাফ কেবিনসহ পেছনের ইঞ্জিন রুমের উপরিভাগ নদীতে ডুবে যায়। #
পার্সটুডে/বাদশা রহমান/রেজওয়ান হোসেন/৪
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।