অবৈধ ক্যামিক্যাল ফ্যাক্টরিতে সয়লাব ঢাকা, জ্বলন্ত চুল্লীর ওপর বসবাস লাখো নগরবাসীর
https://parstoday.ir/bn/news/bangladesh-i127528-অবৈধ_ক্যামিক্যাল_ফ্যাক্টরিতে_সয়লাব_ঢাকা_জ্বলন্ত_চুল্লীর_ওপর_বসবাস_লাখো_নগরবাসীর
বাহান্নো বাজার তেপান্নগলির রাজধানী ঢাকার অপরিকল্পিত অবকাঠামো ও সরু গলির পুরান ঢাকা এখন সবচেয়ে বড় ধরনের অগ্নিঝুঁকিতে রয়েছে। ২০১০ সালে নিমতলী ট্র্যাজেডি এবং ২০১৯ সালের চুড়িহাট্টার আগুন থেকেও শিক্ষা না নেওয়ায় এই পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
(last modified 2025-09-11T14:06:22+00:00 )
আগস্ট ৩১, ২০২৩ ১৫:১২ Asia/Dhaka
  • ২০১০ সালে নিমতলী ট্র্যাজেডিতে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের আহাজারি।
    ২০১০ সালে নিমতলী ট্র্যাজেডিতে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের আহাজারি।

বাহান্নো বাজার তেপান্নগলির রাজধানী ঢাকার অপরিকল্পিত অবকাঠামো ও সরু গলির পুরান ঢাকা এখন সবচেয়ে বড় ধরনের অগ্নিঝুঁকিতে রয়েছে। ২০১০ সালে নিমতলী ট্র্যাজেডি এবং ২০১৯ সালের চুড়িহাট্টার আগুন থেকেও শিক্ষা না নেওয়ায় এই পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

এই এলাকার মোড়ে মোড়ে এখনো রাসায়নিক গুদাম ও প্লাস্টিক কারখানা রয়েছে। এর বেশির ভাগই অবৈধ। এসব স্থানে সামান্য আগুনও বাসিন্দাদের জন্য বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। কারণ, এই অঞ্চলের ৭০ শতাংশ সড়ক এখনো অগ্নিনির্বাপণে ব্যবহৃত গাড়ি চলাচলের অনুপযোগী। ফলে ছোট আগুনের ঘটনাও নিয়ন্ত্রণ করতে না পারার ব্যর্থতায় বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। এদিকে সংকট নিরসনে সুপরিকল্পিত উদ্যোগ এবং তা বাস্তবায়নের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও প্রত্যাশিত ভূমিকা রাখছেন না সংশ্লিষ্টরা। বরং ফায়ার সার্ভিস, সিটি করপোরেশন ও রাজউক দায়সারা বক্তব্য দিয়েই বছরের পর বছর পার করছে। উপেক্ষা করা হয়েছে অগ্নিঝুঁকি মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া নির্দেশনাও।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) এক গবেষণাপত্রে বলা হয়, পুরান ঢাকায় ২৫ হাজার কেমিক্যাল গোডাউন বা রাসায়নিক পণ্যের গুদাম রয়েছে। এর মাঝে ১৫ হাজারের অবস্থান খোদ বাসাবাড়িতেই। সিটি করপোরেশনের কাছ থেকে লাইসেন্সপ্রাপ্ত গুদামের সংখ্যা মাত্র আড়াই হাজার। ২২ হাজারেরও বেশি গুদাম অবৈধ। ২০১০ সালের ৩ জুন পুরান ঢাকার নবাব কাটরার নিমতলীতে রাসায়নিক গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ১১৯ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। অগ্নিদগ্ধ হয় আরো শতাধিক। ঘটনার পর নিমতলী থেকে কিছু গুদাম ও কারখানা সরানো হলেও মূলত কাজের কাজ কিছুই হয়নি। সর্বত্র লাইসেন্সপ্রাপ্ত ও লাইসেন্সবিহীন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের আধিক্যে আবাসিক মান বজায় রাখতে পারেনি পুরান ঢাকা। আর সে কারণেই বারবার অগ্নিকান্ডের ভয়াল ছোবলে প্রাণহানিসহ নানানভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। ছোট-বড় দুর্ঘটনা যেন আজ সেখানকার নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। যখন কোনো দুর্ঘটনা ঘটে, কেবল তখনই এর থেকে মুক্তি পাওয়ার ব্যাকুলতা বেড়ে যায়। কিছুদিন পার হতে না হতেই আবারও সেই পুরনো চিত্র। এর থেকে কোনোভাবেই বেরিয়ে আসতে পারছে না কেউ। শুধু তাই নয়, অধিক ঘনবসতি ও ব্যবসাবাণিজ্যের ঘনঘটার কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে এসব এলাকায়। তখন অনেক ক্ষেত্রে উদ্ধার তৎপরতাও ঠিকভাবে করা সম্ভব হয় না। এবার পরিস্থিতি বদলাতে মাঠে নেমেছে জেলা প্রশাসন। ঢাকা জেলা প্রশাসক ও ম্যাজিষ্ট্রেট আনিসুর রহমান জানালেন  অবৈধ ক্যামিক্যাল ফ্যাক্টরির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কাজ শুরু করেছেন তারা।  এর পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীরও নিয়মিত অভিযান চলমান বলে জানিয়েছেন র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।#

পার্সটুডে/বাদশা রহমান/বাবুল আখতার/৩১

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।